১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫-এ ২০২৫-২৬ অর্থবছরের (FY 2024-25) জন্য আয়কর রিটার্ন (ITR) জমা দেওয়ার শেষ সময়সীমা শেষ হতে চলেছে। ইতিমধ্যে দেশের ৬ কোটি রিটার্ন ইতোমধ্যেই দাখিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছে আয়কর বিভাগ। করদাতাদের অনুরোধ করা হয়েছে, শেষ মুহূর্তের ভিড় এড়াতে সময়মতো রিটার্ন জমা দিতে। আয়কর বিভাগ ২৪X৭ সহায়তা পরিষেবা প্রদান করছে, যাতে যেকোনো সমস্যা দ্রুত সমাধান করা যায়।
আইটিআর জমা দেওয়ার সময়সীমা সম্প্রসারণ হবে কি না তা নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে থাকলেও, এখন পর্যন্ত সরকারি পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা নেই। ClearTax-এর বিজনেস হেড অভিষেক পোলেপাল্লি বলেন, “এ বছর আইটিআর জমা দেওয়ার সময়সীমা বৃদ্ধির সম্ভাবনা নেই। অধিকাংশ করদাতা নির্ধারিত সময়সীমা মেনে চলবেন।” তাই করদাতাদের ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে রিটার্ন জমা দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া উচিৎ।
আইটিআর ফাইল করার শেষ মুহূর্তের নির্দেশনা:
যারা প্রথমবারের মতো আইটিআর দাখিল করছেন, তাদের প্রথমে Income Tax e-Filing পোর্টালে নিবন্ধিত হতে হবে। পূর্বে নিবন্ধিত ব্যবহারকারীরা সহজেই লগইন করতে পারবেন। করদাতাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ নথি সংগ্রহ করা জরুরি, যেমন: Form 16, Form 26AS, AIS, PAN, Aadhaar (PAN-এ লিঙ্ক করা), বিনিয়োগের প্রমাণপত্র (ব্যাংক স্টেটমেন্ট, PPF স্টেটমেন্ট, Capital Gain P&L স্টেটমেন্ট, সঞ্চয়/Recurring Deposit বা Fixed Deposit-এর সুদের সনদ, বিমা প্রিমিয়াম পেমেন্ট রসিদ) ইত্যাদি।
সঠিক ITR ফর্ম বাছাই করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সকল আয় সঠিকভাবে উল্লেখ করতে হবে, যার মধ্যে “Income from Other Sources” অন্তর্ভুক্ত। Form 26AS ও AIS-এর তথ্যের সঙ্গে মিলিয়ে আয় যাচাই করা জরুরি, যাতে কোনো ভুল না থাকে। এছাড়া ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের তথ্য সঠিকভাবে দেওয়া থাকলে রিফান্ড সময়মতো পাওয়া যায়।
কীভাবে আইটিআর ফাইল করবেন:
১. প্রয়োজনীয় নথি সংগ্রহ করুন এবং Form 26AS ও AIS ডাউনলোড করুন।
২. সঠিক ITR ফর্ম বাছাই করুন।
৩. ব্যক্তিগত ও আয়ের তথ্য প্রবেশ করুন, করছাড়ের সুযোগ খুঁজুন এবং তথ্য যাচাই করুন।
৪. পোর্টালের মাধ্যমে রিটার্ন জমা দিন।
নতুন ও পুরনো করবিধি অনুযায়ী আয়কর স্ল্যাব:
নতুন করবিধি অনুযায়ী:
০–৩,০০,০০০ টাকা: কর নেই
৩,০০,০০১–৭,০০,০০০ টাকা: ৫%
৭,০০,০০১–১০,০০,০০০ টাকা: ১০%
১০,০০,০০১–১২,০০,০০০ টাকা: ১৫%
১২,০০,০০১–১৫,০০,০০০ টাকা: ২০%
১৫,০০,০০১ এবং তার বেশি: ৩০%
সরকার ঘোষিত ১২ লাখ পর্যন্ত শূন্য কর সুবিধা শুধুমাত্র ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য প্রযোজ্য, FY 2024-25-এর জন্য নয়।
পুরনো করবিধি অনুযায়ী:
০–২,৫০,০০০ টাকা: কর নেই
২,৫০,০০১–৫,০০,০০০ টাকা: ৫%
৫,০০,০০১–১০,০০,০০০ টাকা: ২০%
১০,০০,০০১ এবং তার বেশি: ৩০%
শূন্য কর দায়িত্ব থাকলেও আইটিআর জমা দিতে হবে:
যারা মনে করেন শূন্য কর থাকলে রিটার্ন জমা দেওয়ার প্রয়োজন নেই, তাদের সতর্ক করা হচ্ছে যে, রিটার্ন জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক। এটি প্রয়োজন যেমন: কর রিফান্ড, ভিসা আবেদন, ঋণ প্রক্রিয়া ইত্যাদি ক্ষেত্রে।
সঠিক ITR ফর্ম নির্বাচন:
ITR-1 (Sahaj): বার্ষিক আয় <৫০ লাখ, মূলত বেতন, একটি বাড়ি, পারিবারিক পেনশন, কৃষি আয় ইত্যাদির জন্য।
ITR-2: যারা ITR-1 ফাইল করতে অযোগ্য এবং ব্যবসা বা পেশা থেকে আয় নেই।
ITR-3: ব্যবসা বা পেশা পরিচালনা করা ব্যক্তিদের জন্য।
ITR-4: আয় <৫০ লাখ, ব্যবসা বা পেশা থেকে presumptive আয়, বেতন/পেনশন, একটি বাড়ি, কৃষি আয় (৫,০০০ পর্যন্ত) এবং অন্যান্য আয়ের জন্য।
ই-ভেরিফিকেশন কেন জরুরি?
রিটার্ন জমা দেওয়ার পর ৩০ দিনের মধ্যে ই-ভেরিফাই করা আবশ্যক। না হলে রিটার্ন জমা হয়নি ধরা হবে। ভেরিফিকেশন করতে পারেন Aadhaar OTP, EVC, Net Banking অথবা ITR-V-এর স্বাক্ষরিত কপি পাঠিয়ে।
রিফান্ড প্রক্রিয়া শুরু হয় ভেরিফিকেশনের ৭–২১ কার্যদিবসের মধ্যে এবং সাধারণত ৪–৫ সপ্তাহে অ্যাকাউন্টে জমা হয়।
করদাতাদের পরামর্শ, শেষ মুহূর্তের চাপ এড়াতে সময়মতো রিটার্ন জমা দিন এবং সব নথি প্রস্তুত রাখুন।