সময়সীমা শেষ! আয়কর রিটার্ন জমা না দিলে কী শাস্তি হবে? জানুন বিস্তারিত

আয়কর রিটার্ন দাখিলের শেষ সময়সীমা (ITR Deadline) ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ অতিক্রান্ত হয়েছে। যারা এই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে রিটার্ন জমা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন, তাঁদের জন্য এখনও…

Confused About ITR Forms

আয়কর রিটার্ন দাখিলের শেষ সময়সীমা (ITR Deadline) ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ অতিক্রান্ত হয়েছে। যারা এই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে রিটার্ন জমা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন, তাঁদের জন্য এখনও সুযোগ খোলা আছে। তবে সেই সুযোগের সঙ্গে রয়েছে অতিরিক্ত খরচ—জরিমানা, সুদ এবং কিছু কর-সুবিধা হারানোর আশঙ্কা।

কতটা জরিমানা দিতে হবে?
আয়কর আইনের 234F ধারায় স্পষ্ট বলা হয়েছে, নির্দিষ্ট সময়সীমার পর রিটার্ন জমা দিলে সর্বোচ্চ ৫,০০০ টাকা জরিমানা দিতে হবে। তবে যদি বার্ষিক আয় ৫ লক্ষ টাকার কম হয়, সেক্ষেত্রে জরিমানার পরিমাণ সর্বোচ্চ ১,০০০ টাকায় সীমাবদ্ধ।

   

সুদ আরোপের নিয়ম:
শুধু জরিমানা নয়, বকেয়া কর থাকলে তার উপর সুদও দিতে হবে। আয়কর আইনের 234A ধারায় বলা হয়েছে, নির্ধারিত সময়সীমার পর প্রতি মাস বা মাসের অংশের জন্য বকেয়া করের উপর ১% হারে সুদ ধার্য হবে।

উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, কারও যদি ৫০,০০০ টাকা কর বকেয়া থাকে এবং তিনি তিন মাস দেরিতে রিটার্ন জমা দেন, তবে তাঁকে সুদ হিসেবে ১,৫০০ টাকা (৫০,০০০ × ১% × ৩ মাস) দিতে হবে। এর সঙ্গে যোগ হবে ২৩৪বি ও ২৩৪সি ধারার অধীনে সুদ, যদি অগ্রিম কর যথাযথভাবে দেওয়া না হয়ে থাকে।

আর্থিক ক্ষতির বাইরে অন্যান্য প্রভাব:
রিটার্ন দাখিলে দেরি হলে শুধু জরিমানা বা সুদই নয়, আরও কিছু অসুবিধা ভোগ করতে হতে পারে। ব্যবসায়িক ক্ষতি বা মূলধন ক্ষতির মতো নির্দিষ্ট ধরণের লোকসান ভবিষ্যতে বহন করা যায় না যদি সংশ্লিষ্ট বছরের রিটার্ন সময়মতো জমা না দেওয়া হয়। অর্থাৎ, করদাতা ভবিষ্যতের বছরে ওই ক্ষতি সমন্বয় করার অধিকার হারাবেন।

এছাড়া, রিফান্ড পাওয়ার অধিকার থাকলেও দেরিতে রিটার্ন জমা দিলে প্রক্রিয়া বিলম্বিত হয়। আয়কর দপ্তর রিটার্ন দাখিল ও যাচাইয়ের পরই রিফান্ড প্রক্রিয়া শুরু করে। ফলে দেরি মানেই টাকা ফেরতের ক্ষেত্রে সময় নষ্ট।

Advertisements

অন্যদিকে, সময়সীমার পর কর ব্যবস্থা পরিবর্তনের সুযোগ (পুরনো ও নতুন কর ব্যবস্থা বেছে নেওয়া) বা কিছু কর ছাড় দাবি করার ক্ষেত্রেও সমস্যা দেখা দিতে পারে।

এখন করদাতাদের করণীয়:
দেরি হয়ে গেলেও যত দ্রুত সম্ভব রিটার্ন জমা দেওয়া জরুরি। প্রথমে করদাতাকে সঠিকভাবে কর গণনা করতে হবে—টিডিএস, টিসিএস এবং অগ্রিম করের হিসাব মিলিয়ে দেখে নিতে হবে কতটা কর এখনও বাকি আছে। সেই বকেয়া কর ও সুদ আগে পরিশোধ করে তারপর রিটার্ন জমা দিতে হবে।

এরপর নির্ধারিত আয়কর রিটার্ন ফর্ম পূরণ করে অনলাইনে দাখিল করতে হবে এবং সঙ্গে সঙ্গে ই-ভেরিফিকেশন করতে হবে। মনে রাখতে হবে, ই-ভেরিফিকেশন ছাড়া রিটার্ন দাখিল অসম্পূর্ণ বলে গণ্য হয়। আয়কর দপ্তরের নিয়ম অনুযায়ী একাধিক ই-ভেরিফিকেশন পদ্ধতি রয়েছে।

সংশোধনের সুযোগ:
ভুলবশত যদি দেরিতে জমা দেওয়া রিটার্নে কোনো ত্রুটি থেকে যায়, তবে চিন্তার কারণ নেই। আয়কর আইন অনুযায়ী, বিলেটেড রিটার্নও সংশোধন করা যায়।

শেষ সময় ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৫:
যারা ১৬ সেপ্টেম্বরের সময়সীমা মিস করেছেন, তাঁদের জন্য রিটার্ন জমা দেওয়ার জানালা খোলা রয়েছে এই বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। তাই জরিমানা ও সুদের বোঝা আরও না বাড়িয়ে যত দ্রুত সম্ভব রিটার্ন জমা দেওয়া উচিত।