Tax saving tips: আয়কর রিটার্ন (ITR) জমা দেওয়ার শেষ সময় ঘনিয়ে আসছে, এবং অনেকেই এখন তাঁদের করযোগ্য আয় কমানোর উপায় খুঁজছেন, তাও আবার দীর্ঘমেয়াদি অর্থ আটকে না রেখেই। যদিও Public Provident Fund (PPF), National Pension System (NPS), কিংবা Equity Linked Savings Scheme (ELSS)-এর মতো অনেক বিনিয়োগ মাধ্যম দীর্ঘমেয়াদি বন্ধনের সঙ্গে আসে, তবুও কিছু বিকল্প রয়েছে যা স্বল্প-মেয়াদী এবং তুলনামূলকভাবে তরল (liquid)।
সেই দিকগুলি বিবেচনা করে, কর ছাড়ের জন্য নীচে উল্লেখ করা হলো পাঁচটি চতুর এবং কার্যকর বিনিয়োগ পন্থা, যা Section 80C সহ অন্যান্য ধারা অনুসারে আয়করে ছাড় দিতে পারে:
১. কর্মচারী প্রভিডেন্ট ফান্ড (EPF) অবদান
বেতনভুক্ত কর্মীদের জন্য EPF একটি বাধ্যতামূলক সঞ্চয় মাধ্যম। এখানে কর্মী ও নিয়োগকর্তা উভয়েই একটি নির্দিষ্ট শতাংশ অর্থ অবদান রাখে, যা সরাসরি Section 80C আওতায় কর ছাড়ের জন্য উপযুক্ত। যদিও এটি মূলত অবসরভিত্তিক পরিকল্পনা, তবুও নির্দিষ্ট কারণ যেমন চিকিৎসা, গৃহ নির্মাণ, সন্তানের শিক্ষা বা বিয়ের জন্য আংশিক টাকা তোলা যায়।
EPF-এর একটি বড় সুবিধা হল – এটি বাধ্যতামূলক এবং নিয়মিত সঞ্চয়ের একটি অভ্যাস গড়ে তোলে।
২. ৫ বছরের ট্যাক্স-সেভিং ফিক্সড ডিপোজিট (FD)
বিভিন্ন ব্যাঙ্কিং প্রতিষ্ঠান Section 80C-এর অধীনে ৫ বছর মেয়াদী ট্যাক্স-সেভিং FD অফার করে। এগুলির উপর সর্বাধিক ১.৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগে কর ছাড় পাওয়া যায়।
যদিও এগুলিতে ৫ বছরের লক-ইন পিরিয়ড থাকে, তবুও জরুরি পরিস্থিতিতে ব্যক্তি এই টাকা FD-এর বিপরীতে পার্সোনাল লোন অথবা ওভারড্রাফ্ট হিসাবে তুলতে পারেন, যা ELSS বা PPF-র মতো অন্যান্য পরিকল্পনায় সম্ভব নয়। ফলে এটি একদিকে যেমন নিরাপদ, অন্যদিকে কিছুটা তরলতাও বজায় থাকে।
৩. হোম লোনের মূলধন ও সুদের উপর কর ছাড়
নিজের বাড়ি কেনার জন্য নেওয়া গৃহঋণের উপরও কর ছাড় পাওয়া যায়।
মূলধনের উপর ছাড় মেলে Section 80C-র অধীনে,
এবং সুদের উপর সর্বোচ্চ ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ছাড় মেলে Section 24(b)-র আওতায়।
এই করছাড়গুলি বার্ষিক ভিত্তিতে দাবি করা যায় এবং কোনও নির্দিষ্ট লক-ইন পিরিয়ড নেই। বাড়ি কেনা একদিকে যেমন স্থায়ী সম্পদ তৈরি করে, অন্যদিকে এটি কর ছাড়েরও একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম।
৪. স্বাস্থ্য বিমার প্রিমিয়ামের উপর Section 80D ছাড়:
সুস্থতা এবং আর্থিক নিরাপত্তার জন্য স্বাস্থ্য বীমা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একইসঙ্গে, এটি Section 80D অনুসারে কর ছাড় পাওয়ার একটি ভালো উপায়।
নিজের জন্য স্বাস্থ্যবিমার প্রিমিয়ামের উপর ২৫,০০০ টাকা পর্যন্ত ছাড় পাওয়া যায়,
এবং যদি অভিভাবকরা সিনিয়র সিটিজেন হন, তবে তাঁদের বিমার উপর অতিরিক্ত ৫০,০০০ টাকা ছাড় পাওয়া সম্ভব।
এই স্বাস্থ্যবিমা কভারটি দীর্ঘমেয়াদে চিকিৎসা ব্যয়ের বিরুদ্ধে সুরক্ষা দেয় এবং কর ছাড়ের সুযোগও তৈরি করে।
৫. ন্যাশনাল পেনশন সিস্টেম (NPS): Tier I ও Tier II
NPS হল একটি দীর্ঘমেয়াদি অবসর পরিকল্পনা, যা Section 80C-র সীমার বাইরে অতিরিক্ত করছাড়ের সুযোগ দেয়।
Tier I অ্যাকাউন্টের আওতায় Section 80CCD(1B)-র অধীনে অতিরিক্ত ৫০,০০০ টাকা ছাড় পাওয়া যায়।
অর্থাৎ, Section 80C-এর ১.৫ লক্ষ টাকা ছাড়ের পাশাপাশি আরও ৫০,০০০ টাকা অতিরিক্ত ছাড়ের সুযোগ দেয় NPS।
Tier I মূলত অবসরের জন্য উপযুক্ত, তবে Tier II অ্যাকাউন্টে বিনিয়োগ করে বেশি ফ্লেক্সিবিলিটি সহ টাকা তোলা যায়। যারা দীর্ঘমেয়াদি সঞ্চয়ে আগ্রহী, তাঁদের জন্য এটি এক উত্তম করছাড়ের মাধ্যম।
বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে বুদ্ধিমানের মতো কর পরিকল্পনা করা অত্যন্ত জরুরি। যারা দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ করতে চান না, তাঁদের জন্য উপরের বিকল্পগুলি যথেষ্ট কার্যকর। EPF, ট্যাক্স-সেভিং FD, হোম লোন, স্বাস্থ্য বীমা কিংবা NPS – প্রতিটি ক্ষেত্রেই নির্দিষ্ট কর ছাড়ের সুযোগ রয়েছে।
এই পরিকল্পনাগুলি শুধু কর সাশ্রয়ই নয়, আর্থিক নিরাপত্তা এবং ভবিষ্যতের প্রস্তুতিও নিশ্চিত করে। সময় থাকতেই নিজের কর-বিনিয়োগ পরিকল্পনা ঠিক করুন এবং নিশ্চিত করুন সর্বাধিক সঞ্চয় ও নিরাপত্তা।