দেশের ইকুইটি বাজার বুধবার উল্লেখযোগ্যভাবে ঘুরে দাঁড়াল। দিনের শেষে সেনসেক্স ৫১৩ পয়েন্টের বেশি লাফিয়ে ৮৫,১৮৬.৪৭-এ পৌঁছায় এবং নিফটি ১৪২ পয়েন্ট বেড়ে ২৬,০৫২.৬৫-এ বন্ধ হয়। আগের সেশনে বাজারে দুর্বল প্রবণতা দেখা গেলেও, বুধবারের লেনদেনে শক্তিশালী ক্রয়চাপ বিশেষ করে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বাজারকে আবার সবুজে ফিরিয়ে দেয়।
আইটি শেয়ারের দাপটেই বাজারে গতি:
দিনভর বাজারের প্রধান চালিকাশক্তি ছিল আইটি সেক্টর। নিফটি আইটি সূচক ২ শতাংশেরও বেশি অগ্রগতি নথিভুক্ত করেছে। এর মধ্যে ইনফোসিস ছিল নজরকাড়া পারফর্মার। সংস্থাটি ঘোষণা করেছে যে তাদের ১৮,০০০ কোটি টাকার শেয়ার বাইব্যাক ২০ নভেম্বর থেকে শুরু হবে। এই ঘোষণার পর থেকেই ইনফোসিসে জোরালো ক্রয়চাপ তৈরি হয়, যা পুরো আইটি প্যাককে সহায়তা করেছে।
বিশ্ববাজারের সেন্টিমেন্টও সহায়ক: IT Stocks Infosys Buyback
আন্তর্জাতিক বাজারের ইতিবাচক ইঙ্গিতও ভারতীয় সূচকের পুনরুদ্ধারে ভূমিকা রেখেছে। বিশেষজ্ঞরা জানান, উচ্চ প্রবৃদ্ধির এআই-ভিত্তিক বিনিয়োগ পুনর্বিবেচনার পর্যায়ে এসেছে, বিশেষ করে টেক বিলিয়নিয়ার পিটার থিয়েল তাঁর এনভিডিয়া শেয়ারের বড় অংশ বেচে দেওয়ার পর। এতে ইঙ্গিত মিলছে যে বড় বিনিয়োগকারীরা এআই-ভারসাম্যপূর্ণ পোর্টফোলিও থেকে কিছুটা সরে এসে উদীয়মান বাজারগুলোর দিকে ঝুঁকছেন। ভারতও সেই তহবিলপ্রবাহের একটি বড় গন্তব্য হয়ে উঠেছে।
ভারত–মার্কিন বাণিজ্য চুক্তির সম্ভাবনা উজ্জ্বল:
বাজারে ইতিবাচক মনোভাবের অন্যতম কারণ সম্ভাব্য ভারত–মার্কিন বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে জল্পনা। বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী পীযূষ গয়াল মঙ্গলবার জানান, দুই দেশ ‘ন্যায়সঙ্গত, সমতা ও ভারসাম্যপূর্ণ’ সমঝোতায় পৌঁছলেই ঘোষণা আসবে। তিনি আশ্বাস দেন—যখনই চুক্তি চূড়ান্ত হবে, “ভালো খবর” শোনা যাবে।
অস্থিরতা কমেছে, বিনিয়োগকারীদের আস্থা বেড়েছে:
বাজারের সামগ্রিক স্থিতিশীলতা বাড়ার ইঙ্গিত মিলেছে ভোলাটিলিটি সূচক ইন্ডিয়া VIX ২ শতাংশের বেশি কমে ১১.৮৪-এ নামায়। সাধারণত VIX কমলে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ও বাজারের স্থিরতা উভয়ই বৃদ্ধি পায়। বিশ্লেষকদের মতে, আইটি, গ্লোবাল সেন্টিমেন্ট ও বাণিজ্য চুক্তি সংক্রান্ত আশাবাদ মিলিয়ে বাজারে শক্তিশালী রিকভারি দেখা গেছে।
শেষ কথা:
বাজার বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বড় আইটি কোম্পানিগুলোর পারফরম্যান্স এবং বিদেশি তহবিলের প্রবাহ অব্যাহত থাকলে নিকট ভবিষ্যতে ইকুইটি বাজার আরও স্থিতিশীল হতে পারে। তবে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক নীতি ও ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি এখনও বাজারকে প্রভাবিত করতে পারে বলে সতর্ক করেছেন তারা।


