তৎকাল টিকিট বুকিংয়ের সময় পরিবর্তন হচ্ছে? স্পষ্ট করল আইআরসিটিসি

সামাজিক মাধ্যমে তৎকাল এবং প্রিমিয়াম তৎকাল ট্রেন টিকিট বুকিংয়ের সময় (Tatkal Booking Time) পরিবর্তনের গুঞ্জনের মধ্যে ভারতীয় রেলওয়ে স্পষ্ট করে জানিয়েছে যে, এই ধরনের কোনও…

Indian Railways' Special Disease Discounts for Senior Citizens: Avail the Benefits

সামাজিক মাধ্যমে তৎকাল এবং প্রিমিয়াম তৎকাল ট্রেন টিকিট বুকিংয়ের সময় (Tatkal Booking Time) পরিবর্তনের গুঞ্জনের মধ্যে ভারতীয় রেলওয়ে স্পষ্ট করে জানিয়েছে যে, এই ধরনের কোনও পরিবর্তন প্রস্তাবিত বা কার্যকর করা হয়নি। সামাজিক মাধ্যমে তৎকাল টিকিট বুকিংয়ের সময়সূচী সংশোধনের দাবি করে বেশ কিছু বিভ্রান্তিকর প্রতিবেদন ছড়িয়ে পড়ায় এই স্পষ্টীকরণ জারি করা হয়েছে।

ইন্ডিয়ান রেলওয়ে ক্যাটারিং অ্যান্ড ট্যুরিজম কর্পোরেশন (IRCTC) এক্স-এ শেয়ার করা এক বিবৃতিতে বলেছে, “সামাজিক মাধ্যমে কিছু পোস্টে তৎকাল এবং প্রিমিয়াম তৎকাল টিকিটের জন্য ভিন্ন সময়ের কথা উল্লেখ করা হচ্ছে। তৎকাল বা প্রিমিয়াম তৎকাল বুকিংয়ের সময়সূচীতে এসি বা নন-এসি শ্রেণির জন্য বর্তমানে কোনও পরিবর্তন প্রস্তাবিত নয়। এজেন্টদের জন্য অনুমোদিত বুকিংয়ের সময়ও অপরিবর্তিত রয়েছে।”
ভারতীয় রেলওয়ে যাত্রীদের টিকিট বুকিংয়ের নিয়ম সংক্রান্ত যেকোনও তথ্যের জন্য শুধুমাত্র সরকারি উৎসের উপর নির্ভর করার এবং এই ধরনের

গুজবে বিশ্বাস না করার আহ্বান জানিয়েছে। সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভুয়ো তথ্যের কারণে যাত্রীদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হওয়ায় রেল কর্তৃপক্ষ এই বিষয়ে সতর্কতা জারি করেছে।

তৎকাল টিকিটের বর্তমান সময়সূচী

আইআরসিটিসি-র তথ্য অনুযায়ী, তৎকাল টিকিট যাত্রার তারিখের একদিন আগে, যাত্রার দিন বাদ দিয়ে, ট্রেনের উৎপত্তি স্টেশন থেকে বুক করা যায়। এসি শ্রেণির (২এ/৩এ/সিসি/ইসি/৩ই) জন্য বুকিং শুরু হয় সকাল ১০:০০ টায় এবং নন-এসি শ্রেণির (এসএল/এফসি/২এস) জন্য সকাল ১১:০০ টায়। তৎকাল বুকিং ফার্স্ট এসি ছাড়া সব শ্রেণিতে অনুমোদিত।

নিয়ম অনুযায়ী, তৎকাল কোটার অধীনে শুধুমাত্র নির্বাচিত ট্রেনের জন্য বুকিংয়ের সুবিধা পাওয়া যায়। প্রতি পিএনআর-এ সর্বাধিক চারজন যাত্রীর জন্য বুকিং করা যায়। নিয়মিত ভাড়া ছাড়াও প্রতি যাত্রীর জন্য অতিরিক্ত তৎকাল চার্জ প্রযোজ্য। কনফার্মড তৎকাল টিকিট বাতিল করলে কোনও রিফান্ড দেওয়া হয় না। যাত্রীরা সরকারি আইআরসিটিসি ওয়েবসাইট বা অ্যাপের মাধ্যমে তৎকাল ই-টিকিট বুক করতে পারেন।

তৎকাল বুকিংয়ের গুরুত্ব ও চ্যালেঞ্জ

তৎকাল বুকিং ব্যবস্থা ভারতীয় রেলওয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ সুবিধা, যা জরুরি ভ্রমণের প্রয়োজন মেটাতে সাহায্য করে। বিশেষ করে উৎসবের মরশুমে বা জরুরি পরিস্থিতিতে যখন নিয়মিত টিকিট পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে, তখন তৎকাল কোটার উপর যাত্রীদের নির্ভরতা বাড়ে। তবে, সীমিত আসন এবং উচ্চ চাহিদার কারণে তৎকাল টিকিট নিশ্চিত করা অনেক সময় চ্যালেঞ্জিং হয়ে ওঠে। বুকিং শুরুর কয়েক মিনিটের মধ্যেই টিকিট শেষ হয়ে যাওয়ায় যাত্রীদের দ্রুত এবং সঠিকভাবে বুকিং প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হয়।

Advertisements

সামাজিক মাধ্যমে সময়সূচী পরিবর্তনের গুজব ছড়িয়ে পড়ায় অনেক যাত্রী বিভ্রান্ত হয়েছিলেন। এই ধরনের মিথ্যা তথ্য বুকিং প্রক্রিয়ায় অযথা জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে এবং যাত্রীদের পরিকল্পনায় ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। আইআরসিটিসি-র স্পষ্টীকরণ এই বিভ্রান্তি দূর করতে সাহায্য করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

যাত্রীদের জন্য পরামর্শ

আইআরসিটিসি যাত্রীদের পরামর্শ দিয়েছে, তারা যেন টিকিট বুকিংয়ের তথ্যের জন্য শুধুমাত্র সরকারি ওয়েবসাইট (www.irctc.co.in) বা আইআরসিটিসি রেল কানেক্ট অ্যাপের উপর নির্ভর করে। সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া যেকোনও তথ্য সত্যতা যাচাই না করে বিশ্বাস না করার জন্যও সতর্ক করা হয়েছে। তৎকাল টিকিট বুকিংয়ের সময় দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য যাত্রীদের আগে থেকে তাদের আইআরসিটিসি অ্যাকাউন্টে লগইন তথ্য প্রস্তুত রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়। এছাড়া, বৈধ পরিচয়পত্র যেমন আধার কার্ড, প্যান কার্ড বা পাসপোর্ট সঙ্গে রাখা বাধ্যতামূলক।

প্রিমিয়াম তৎকাল বুকিং

প্রিমিয়াম তৎকাল বুকিংও তৎকালের মতো একই সময়সূচী অনুসরণ করে, এবং এখানেও কোনও পরিবর্তন করা হয়নি। তবে, প্রিমিয়াম তৎকাল টিকিটের ভাড়া চাহিদার উপর ভিত্তি করে গতিশীলভাবে পরিবর্তিত হয়, যা সাধারণ তৎকাল টিকিটের তুলনায় বেশি ব্যয়বহুল। এই কোটাও শুধুমাত্র নির্বাচিত ট্রেনে উপলব্ধ এবং কনফার্মড টিকিটের জন্যই বুকিং করা যায়।

আইআরসিটিসি-র এই স্পষ্টীকরণ তৎকাল এবং প্রিমিয়াম তৎকাল টিকিট বুকিং নিয়ে যাত্রীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়া বিভ্রান্তি দূর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। ভারতীয় রেলওয়ে তার যাত্রীদের জন্য স্বচ্ছ এবং নির্ভরযোগ্য পরিষেবা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তৎকাল বুকিংয়ের মাধ্যমে জরুরি ভ্রমণের সুবিধা অব্যাহত থাকবে, এবং যাত্রীদের সঠিক তথ্যের উপর নির্ভর করে তাদের ভ্রমণ পরিকল্পনা করতে হবে। সামাজিক মাধ্যমে গুজবের ফাঁদে না পড়ে সরকারি উৎস থেকে তথ্য সংগ্রহ করাই এখন যাত্রীদের জন্য সবচেয়ে নিরাপদ পথ।