‘ভারতে কুইক কমার্সের প্রবৃদ্ধি ট্রাডিশনাল রিটেইলকে ছাড়িয়ে যাবে’, রির্পোট

ভারতে কুইক কমার্স বা দ্রুত বাণিজ্য আগামী বছরগুলোতে ৭৫-১০০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করবে। যা ঐতিহ্যবাহী খুচরা বাজারের তুলনায় অনেক বেশি, বলে জানানো হয়েছে বার্নস্টিনের এক…

ভারতে কুইক কমার্স বা দ্রুত বাণিজ্য আগামী বছরগুলোতে ৭৫-১০০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করবে। যা ঐতিহ্যবাহী খুচরা বাজারের তুলনায় অনেক বেশি, বলে জানানো হয়েছে বার্নস্টিনের এক রিপোর্টে। এই প্রবৃদ্ধির মূল কারণ হিসেবে কুইক কমার্সের বিশেষ সুবিধাগুলি, যেমন প্রোক্সিমিটি (কাছাকাছি অবস্থান), দাম নির্ধারণের সুবিধা এবং পণ্যের বৈচিত্র্যকে উল্লেখ করা হয়েছে।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, “কুইক কমার্স বিশেষভাবে প্রোক্সিমিটি, প্রাইসিং এবং সিলেকশনে অত্যন্ত সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে এবং আগামী বছরগুলিতে এটি ৭৫-১০০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পারবে, যেখানে ট্রাডিশনাল রিটেইল কেবলমাত্র কম শতাংশ প্রবৃদ্ধি দেখাতে পারে।” এটি স্পষ্ট করে জানানো হয়েছে যে, কুইক কমার্স ভারতীয় ইন্টারনেট-ভিত্তিক খুচরা চ্যানেলগুলির মধ্যে দ্রুততম গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে।
২০২৫ সালের মধ্যে কুইক কমার্সে বিপ্লব
বার্নস্টিনের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, কুইক কমার্স সেক্টরটি ২০২৫ সালের মধ্যে একটি শক্তিশালী অবস্থান অর্জন করবে। এবং এই সময়ে তা অন্যান্য খুচরা চ্যানেলের তুলনায় আরো দ্রুত বৃদ্ধি পাবে। ভারতের শীর্ষ ৪০-৫০টি শহর একত্রে প্রায় ২৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের গ্রোসারি বাজার তৈরি করে এবং কুইক কমার্স এই বিশাল বাজারের একটি বড় অংশ দখল করতে সক্ষম হবে।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, “২০২৫ সালের মধ্যে কুইক কমার্স অন্যান্য চ্যানেলের তুলনায় আরো বড় ভূমিকা পালন করবে। শীর্ষ ৪০-৫০টি শহর একত্রে প্রায় ২৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের গ্রোসারি বাজার তৈরি করে এবং কুইক কমার্স এই বাজারের বড় অংশ দখল করবে।”
ফাস্ট-মুভিং কনজ্যুমার গুডস কোম্পানির জন্য কুইক কমার্স
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, বর্তমানে ফাস্ট-মুভিং কনজ্যুমার গুডস কম্পানিগুলি কুইক কমার্সকে একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং দ্রুত বর্ধনশীল বিক্রয় চ্যানেল হিসেবে দেখতে শুরু করেছে। বর্তমানে ই-কমার্স ভারতীয় ফাস্ট-মুভিং কনজ্যুমার গুডস কম্পানির মোট রাজস্বের ৮-১০ শতাংশ অবদান রাখে এবং এর মধ্যে কুইক কমার্সের অংশ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
২০২৪ অর্থবছরে, কুইক কমার্স মোট ই-কমার্স বিক্রির প্রায় অর্ধেক অংশ দখল করেছে, যা মোট বিক্রির ৬.৮ শতাংশ। রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, ডিরেক্ট-টু-কনজ্যুমার ব্র্যান্ডগুলিও কুইক কমার্স প্ল্যাটফর্মগুলিতে ভাল সাফল্য অর্জন করেছে। এই প্ল্যাটফর্মগুলিতে বর্তমানে ৩০ শতাংশেরও বেশি পণ্য ডায়রেক্ট টু কনসিউমার বা নতুন-যুগের ব্র্যান্ডগুলির।
নতুন ক্যাটেগরি এবং টিয়ার ২ শহরগুলিতে বিস্তার
বার্নস্টিনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কুইক কমার্স ভবিষ্যতে অন্যান্য খুচরা চ্যানেল এবং ই-কমার্স চ্যানেলগুলিকে ছাড়িয়ে যাবে। এবং এর প্রবৃদ্ধি নতুন ক্যাটেগরি এবং টিয়ার ২ শহরগুলির মাধ্যমে ত্বরান্বিত হবে।
ভারতের কুইক কমার্সে প্রধান প্লেয়াররা
ভারতের কুইক কমার্স সেক্টরে বর্তমানে যে কোম্পানিগুলি প্রধান ভূমিকা পালন করছে, তাদের মধ্যে রয়েছে জোমাটো, বিগ বাস্কেট, জেপ্টো, ব্লিঙ্কিট এবং সুইগি ইনস্টামার্ট। এছাড়া ঐতিহ্যবাহী ই-কমার্স জায়ান্ট অ্যামাজন এবং ফ্লিপকার্টও তাদের প্ল্যাটফর্মে কুইক কমার্স সেবা শুরু করেছে।
কুইক কমার্সের ভবিষ্যত
কুইক কমার্স খাতটি ক্রমাগত বিকশিত হচ্ছে এবং এটি ভারতের রিটেইল খাতের ভবিষ্যতকে নতুন দিশা দেখাতে সক্ষম হবে। এই সেক্টরটি গ্রাহকদের জন্য কেনাকাটাকে আরও সুবিধাজনক ও সহজ করে তুলবে এবং ব্র্যান্ডগুলিকে দ্রুত এবং কার্যকরী বিক্রয় চ্যানেল সরবরাহ করবে।
ভারতে কুইক কমার্সের প্রবৃদ্ধি এবং বিকাশ দেশের খুচরা বাজারে এক নতুন যুগের সূচনা করবে। ক্রমবর্ধমান ডিজিটাল ব্যবহার এবং দ্রুত ডেলিভারি সুবিধার কারণে, এই খাতটি ভবিষ্যতে আরও বিস্তৃত হবে এবং খুচরা ব্যবসায়ীদের জন্য নতুন সম্ভাবনা তৈরি করবে।
ভারতে কুইক কমার্সের প্রবৃদ্ধি ঐতিহ্যবাহী খুচরা বাজারকে ছাড়িয়ে যাবে এবং এটি একটি নতুন শক্তিশালী বিক্রয় চ্যানেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে। এতে বিভিন্ন ক্যাটেগরি, নতুন ব্র্যান্ড এবং শহরগুলির বিস্তার আরও দ্রুত হবে, যা ভারতীয় খুচরা বাজারকে আরও উদ্ভাবনী ও ডিজিটালভাবে সংযুক্ত করবে।