সেশনের শুরুতে অস্থিরতা, দিনের শেষে পতন
দালাল স্ট্রিটে মঙ্গলবারের বাণিজ্য পর্বে আবারও লাল সূচক চোখে পড়ল। সেশনের শুরুতে অস্থিরতার মধ্য দিয়ে শুরু হলেও দিনের শেষে প্রধান সূচকগুলি হ্রাস পেয়েছে। শেষ বাণিজ্য সেশনে বিএসই সেনসেক্স ৮২,১০২ পয়েন্টে স্থিতি করেছে, যা গত দিনের তুলনায় উল্লেখযোগ্য পতন। অন্যদিকে, এনএসই নিফটি ২৫,২০০ পয়েন্টের নিচে বন্ধ হয়েছে, যা প্রায় ২০ পয়েন্টের পতন নির্দেশ করছে।
প্রারম্ভিক ক্রেতার আগ্রহ ও খাতভিত্তিক পারফরম্যান্স: Indian Stock Market Performance
মার্কেট অ্যানালিস্টদের মতে, মঙ্গলবারের বাণিজ্য সূচকগুলি দিনের শুরুতে সামান্য লাভ নিয়ে শুরু করেছিল। বিশ্ববাজারের ইতিবাচক প্রবণতা এই বৃদ্ধিকে সহায়তা করেছে। প্রারম্ভিক লেনদেনে অটোমোবাইল, তথ্যপ্রযুক্তি (আইটি) এবং আর্থিক পরিষেবা খাতের শেয়ারগুলিতে ক্রেতার আগ্রহ লক্ষ্য করা গিয়েছে। তবে ব্যাংকিং এবং সিমেন্ট খাতের শেয়ারগুলি চাপের মধ্যে ছিল। সকাল ৯:২২ মিনিটে সেসময় সেনসেক্স ১২২.১৩ পয়েন্ট বা ০.১৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৮২,২৮২.১০ পয়েন্টে অবস্থান করছিল। নিফটি সেই সময় ৩৫.৮৫ পয়েন্ট বা ০.১৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ২৫,২৩৮.২০ পয়েন্টে পৌঁছায়।
নিকটবর্তী সময়ে নিফটির গতি এবং বিশ্লেষকদের পরামর্শ:
বিশ্লেষকদের মতে, নিফটির নিকটবর্তী সময়ের গতি মূলত ২৫,২০০–২৫,০০০ পয়েন্টের পরিসর ধরে রাখার উপর নির্ভর করবে। তারা আরও উল্লেখ করেছেন, “২৫,২৩৮-এর ওপরে সূচক থাকলে প্রারম্ভিক ধারা ইতিবাচক থাকতে পারে। তবে প্রকৃত বাজারের গতি পেতে হলে ২৫,২৭৮–২৫,৩৩৫ পয়েন্টের উপরে সরাসরি উর্ধ্বগতি প্রয়োজন।”
বিদেশি বিনিয়োগকারীর বিক্রয় চাপ, অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগকারীর ক্রয়:
একই সময়ে, মার্কেট স্ট্র্যাটেজিস্টরা সতর্ক করেছেন যে পর্যায়ক্রমিক বিদেশি প্রতিষ্ঠিত বিনিয়োগকারী (এফআইআই) বিক্রয় এখন বাজারে সবচেয়ে বড় বাধা হিসেবে কাজ করছে। সেপ্টেম্বর ২০২৪ সালের সর্বোচ্চ সীমার পর থেকে এফআইআই-এর বিক্রয় প্রবণতা ক্রমবর্ধমান। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারতের স্টক মূল্য অন্যান্য দেশের তুলনায় তুলনামূলকভাবে বেশি হওয়ায় এফআইআই-এরা বিদেশে আরও আকর্ষণীয় বিনিয়োগের দিকে ঝুঁকছে।
২০২৪ সালে এফআইআইরা মোট রুপি ১,২১,২১০ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে। চলতি বছরে, এখন পর্যন্ত এফআইআইরা রুপি ১,৭৯,২০০ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে। শুধু ২২ সেপ্টেম্বর-এ এফআইআইরা নেট বিক্রেতা হিসেবে ২,৯১০.০৯ কোটি টাকা বিক্রি করেছে, যদিও দেশীয় প্রতিষ্ঠিত বিনিয়োগকারীরা (ডিআইআই) নেট ক্রেতা হিসেবে ২,৫৮২.৬৩ কোটি টাকা শেয়ার কিনেছে।
মার্কেট অস্থিরতা এবং ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ:
মোটের উপর, বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন যে বাজারে অস্থিরতা এবং বিদেশি বিনিয়োগকারীর বিক্রয় চাপ ভবিষ্যতের সাপ্তাহিক সূচকের গতিপ্রকৃতিকে প্রভাবিত করবে। তবে, অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগকারীদের ক্রয় আগ্রহ কিছুটা স্থিতিশীলতা এনে দিতে পারে। বিনিয়োগকারীদের কাছে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, তারা বাজারের স্বল্পমেয়াদী ওঠানামার দিকে খুব বেশি উদ্বিগ্ন না হয়ে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা অনুযায়ী বিনিয়োগ চালিয়ে যাক।
সর্বশেষ পরিস্থিতি অনুযায়ী, দালাল স্ট্রিট এখনো আংশিক চাপ এবং অস্থিরতার মধ্য দিয়ে চলেছে। বিশেষজ্ঞরা আশা করছেন, বাজারের পরবর্তী ধাপের জন্য ২৫,২০০–২৫,০০০ পয়েন্টের সমর্থন লেভেল গুরুত্বপূর্ণ হবে। বিনিয়োগকারীদের সতর্ক থাকার পাশাপাশি বাজারের গতি মনিটর করা গুরুত্বপূর্ণ হবে।

আমাদের Google News এ ফলো করুন
২৪ ঘণ্টার বাংলা নিউজ, ব্রেকিং আপডেট আর এক্সক্লুসিভ স্টোরি সবার আগে পেতে ফলো করুন।
