দেশের শেয়ারবাজারে শুক্রবার দেখা গেল বড় ধসের প্রবণতা। বোম্বে স্টক এক্সচেঞ্জের (BSE) সেনসেক্স ৭০ পয়েন্টের বেশি পড়ে ৮৩,২৪১.০০ পয়েন্টে গিয়ে বন্ধ হয়েছে। অপরদিকে, ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জের (NSE) নিফটি সূচক সামান্য ০.০৫ পয়েন্ট বৃদ্ধি পেয়ে ২৫,৫০৯ পয়েন্টে দিনের লেনদেন শেষ করেছে। যদিও নিফটির এই সামান্য ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বাজারের সামগ্রিক মন্দা মনোভাবকে ঢাকতে পারেনি।
দিনের শুরু থেকেই বাজারে বিক্রির চাপ স্পষ্ট ছিল। প্রাতঃকালীন লেনদেনে সেনসেক্স এক ঝটকায় ৪৮০ পয়েন্টের বেশি পড়ে ৮২,৮২৫.১৭ পয়েন্টে নেমে আসে। একই সময়ে নিফটি সূচকও ১৩০ পয়েন্টের বেশি কমে ২৫,৩৭৮.৭০ পয়েন্টে গিয়ে লেনদেন শুরু করে। বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক ও মুনাফা তুলে নেওয়ার প্রবণতা স্পষ্ট দেখা গেছে।
বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বিক্রির চাপ:
বৃহস্পতিবার বিদেশি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা (FII) প্রায় ৩,২৬৩.২১ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে বলে এক্সচেঞ্জের তথ্য থেকে জানা গেছে। অন্যদিকে, দেশীয় প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা (DII) শক্তিশালী ক্রয় দেখিয়ে প্রায় ৫,২৮৩.৯১ কোটি টাকার শেয়ার ক্রয় করেছে।
যদিও দেশীয় বিনিয়োগকারীদের এই প্রবল ক্রয়চাপ কিছুটা স্থিতি এনে দেওয়ার চেষ্টা করেছে, তবুও বাজারে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বিক্রির প্রভাব স্পষ্টভাবে অনুভূত হয়েছে। বাজার বিশেষজ্ঞদের মতে, মার্কিন বন্ডের রিটার্ন বৃদ্ধির পাশাপাশি বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা বিদেশি ফান্ডের আউটফ্লো বাড়িয়ে তুলেছে, যার ফলে ভারতীয় শেয়ারবাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।
বাজারে সতর্ক মনোভাব:
বাজার বিশ্লেষকদের ধারণা, সাময়িকভাবে এই মন্দা আরও কিছুদিন চলতে পারে। ব্যাংকিং, আইটি এবং অটোমোবাইল সেক্টরে বিক্রির চাপ বেশি দেখা গেছে, তবে এনার্জি ও এফএমসিজি সেগমেন্টে কিছুটা স্থিতিশীলতা ছিল।
একজন বিশ্লেষক মন্তব্য করেছেন, “দেশীয় বিনিয়োগকারীদের প্রবল আগ্রহ সত্ত্বেও, বিদেশি তহবিলের ধারাবাহিক বিক্রি বাজারের মনোভাবকে দুর্বল করে তুলছে। যদি বৈশ্বিক অনিশ্চয়তা ও মার্কিন বাজারে অস্থিরতা অব্যাহত থাকে, তাহলে ভারতের শেয়ারবাজারেও তার প্রভাব পড়বে।”
শেষ কথা:
বর্তমানে বিনিয়োগকারীদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে ধৈর্য ধরার এবং উচ্চ-ঝুঁকির বিনিয়োগ এড়িয়ে চলার। বাজার বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, স্বল্পমেয়াদি ওঠানামা সত্ত্বেও ভারতীয় অর্থনীতির মৌলিক ভিত্তি দৃঢ় থাকায় দীর্ঘমেয়াদে বাজারে পুনরুদ্ধারের সম্ভাবনা রয়েছে।


