ভারতীয় শেয়ারবাজারে আজ বড় ধরনের পতন লক্ষ্য করা গেছে। প্রথমে, BSE সেনসেক্স প্রায় ৭৯০ পয়েন্ট কমে ৭৩,৮২১.৫৬-এ পৌঁছেছে, এবং NSE Nifty50 সূচক প্রায় ২৩১ পয়েন্ট কমে ২২,৩১৩.৯০-এ দাঁড়িয়েছে।
বিশ্বব্যাপী বাণিজ্য যুদ্ধের আশঙ্কা এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন শুল্ক ঘোষণার কারণে এ পতন হয়েছে। ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন যে, কানাডা ও মেক্সিকো থেকে আমদানির উপর ২৫% শুল্ক ৪ এপ্রিলের পরিবর্তে ৪ মার্চ থেকে কার্যকর হবে। এছাড়া, চীন থেকে আমদানির উপর অতিরিক্ত ১০% শুল্ক আরোপের ফলে বাণিজ্যিক অস্থিরতা বাড়ছে।
বাজারের পতনে ব্যাংকিং এবং তথ্যপ্রযুক্তি (আইটি) খাতের শেয়ারগুলি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নিফটি আইটি সূচক প্রায় ৩% কমেছে, যেখানে পেরসিস্টেন্ট সিস্টেমস এবং উইপ্রো শেয়ারগুলি উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা পূর্বাভাস দিয়েছেন যে, ভারতীয় শেয়ারবাজারে ধীরে ধীরে এবং আংশিকভাবে পুনরুদ্ধার হতে পারে। নিফটি ৫০ সূচক সেপ্টেম্বর ২০২৪ থেকে প্রায় ১৪% কমেছে, যা ১৯৯৬ সালের পর সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদী পতন। উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি এবং স্থবির আয়ের কারণে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং কর্পোরেট মুনাফায় বাধা সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে, বিদেশি বিনিয়োগকারীরা প্রায় ২৫ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছেন, যা ভারতীয় শেয়ারবাজারকে এশিয়ার অন্যতম খারাপ পারফরমার করে তুলেছে।
ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক মাইক্রোফিন্যান্স এবং ব্যাংকিং ঋণের জন্য কঠোর নিয়ম শিথিল করেছে, যা আর্থিক খাতের শেয়ারগুলোর মূল্য বৃদ্ধিতে সহায়তা করেছে। ব্যান্ডহান ব্যাংক, শ্রীরাম ফাইন্যান্স এবং এ ইউ স্মল ফাইন্যান্স ব্যাংকের শেয়ার উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
ভারতের বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা সেবি (সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অফ ইন্ডিয়া) স্টক এবং সূচক ডেরিভেটিভ বাজারে নিয়ম কঠোর করার প্রস্তাব দিয়েছে। এতে একক স্টক ডেরিভেটিভের জন্য বাজার-ব্যাপী পজিশন সীমা নির্ধারণ এবং সূচক ডেরিভেটিভের জন্য নির্দিষ্ট মানদণ্ড পূরণের শর্ত আরোপ করা হয়েছে।
আজকের বাজার পতন বিশ্বব্যাপী বাণিজ্য অস্থিরতা এবং অভ্যন্তরীণ অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের সমন্বিত প্রভাবের ফলস্বরূপ। বিনিয়োগকারীদের জন্য এটি একটি সতর্ক সংকেত, এবং বাজারের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।