ডলারের নিরিখে এগোল রুপি

মার্চ মাসে ভারতীয় রুপির (Indian Rupee) মান মার্কিন ডলারের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। গত ২০ দিনে রুপির দাম বেড়ে ৮৭.৫ টাকা থেকে ৮৫.৫ টাকায় পৌঁছেছে,…

Indian Rupee Strengthens Against US Dollar in March

মার্চ মাসে ভারতীয় রুপির (Indian Rupee) মান মার্কিন ডলারের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। গত ২০ দিনে রুপির দাম বেড়ে ৮৭.৫ টাকা থেকে ৮৫.৫ টাকায় পৌঁছেছে, যা দুই টাকার লাভ নির্দেশ করে। এই বৃদ্ধিকে অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা ভারতের সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক নীতির ইতিবাচক ফলাফল বলে মনে করছেন।

বিশেষজ্ঞদের মতে, সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্ববাজারে ডলারের কিছুটা দুর্বলতা এবং ভারতের শক্তিশালী বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ এই বৃদ্ধির পেছনে বড় ভূমিকা পালন করেছে। পাশাপাশি, ভারতীয় শেয়ারবাজারে বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার (RBI) সক্রিয় হস্তক্ষেপ রুপির স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সহায়তা করেছে।

   

কেন রুপির মূল্য বৃদ্ধি পেল?
১. বিশ্ববাজারে ডলারের পতন
সাম্প্রতিক সময়ে মার্কিন ডলারের মান আন্তর্জাতিক বাজারে কিছুটা কমেছে, যার ফলে অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের মুদ্রার মতো ভারতীয় রুপিও শক্তিশালী হয়েছে।
2. ভারতে বিদেশি বিনিয়োগের বৃদ্ধি
ভারতে সাম্প্রতিক বিনিয়োগবান্ধব নীতি এবং স্টক মার্কেটে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা রুপির শক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করেছে।
3. রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নীতি
RBI সক্রিয়ভাবে বাজারে হস্তক্ষেপ করেছে এবং রুপির স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছে।
4. বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধি
ভারতের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়েছে, যা রুপির উপর চাপ কমিয়েছে এবং এর মূল্য বৃদ্ধিতে সহায়তা করেছে।

Advertisements

এর প্রভাব কী হতে পারে?
আমদানির খরচ কমতে পারে:
রুপির মান বৃদ্ধি পাওয়ায় আমদানি করা পণ্যগুলোর দাম কিছুটা কমতে পারে, বিশেষ করে তেল, ইলেকট্রনিক পণ্য এবং অন্যান্য বিদেশি সামগ্রী।
ভ্রমণ ও পড়াশোনার খরচ হ্রাস:
যাঁরা বিদেশে পড়াশোনা করছেন বা বিদেশ ভ্রমণ করছেন, তাঁদের জন্য খরচ কিছুটা কমতে পারে, কারণ এক ডলারের বিপরীতে এখন তুলনামূলকভাবে কম রুপি খরচ করতে হবে।

রপ্তানির উপর প্রভাব:
যদিও রুপির মূল্য বৃদ্ধি রপ্তানিকারকদের জন্য কিছুটা চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে, কারণ এতে ভারতীয় পণ্য আন্তর্জাতিক বাজারে তুলনামূলকভাবে বেশি দামে পড়তে পারে।
অর্থনীতিবিদদের মতে, রুপির এই উত্থান সাময়িক হলেও, ভারতীয় অর্থনীতি শক্তিশালী হলে এটি দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। রুপির স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য RBI ও সরকারের বিভিন্ন নীতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, যদি বৈশ্বিক অর্থনীতি স্থিতিশীল থাকে এবং ভারত তার প্রবৃদ্ধির হার বজায় রাখতে পারে, তবে রুপির মান আরও শক্তিশালী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে তেলের দাম বৃদ্ধি বা বিশ্ববাজারে অস্থিরতা দেখা দিলে রুপির উপর আবার চাপ আসতে পারে।

মার্চ মাসে রুপির দুই টাকার উত্থান ভারতীয় অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক সিগন্যাল হতে পারে। যদিও বিনিয়োগকারীদের জন্য এটি ভালো খবর, রপ্তানিকারকদের জন্য এটি কিছুটা উদ্বেগের কারণ হতে পারে। আগামী মাসগুলিতে রুপির গতিবিধির উপর নজর রাখা জরুরি, কারণ বিশ্ববাজারের পরিবর্তন এর ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলবে।