ভারতীয় প্রাইভেট সেক্টরের বিনিয়োগ বৃদ্ধি! আহ্বান ক্রিসিলের

বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো শিল্প এবং ব্যবসায়িক ক্ষেত্রেও যে বিনিয়োগের গতি গুরুত্বপূর্ণ, তা সুনিশ্চিত করতে প্রাইভেট সেক্টরের অংশগ্রহণ বাড়ানো অত্যন্ত প্রয়োজনীয় বলে জানানো হয়েছে ক্রিসিলের (Crisil) সম্প্রতি…

indian-private-sector-investment-growth-crisil-report

short-samachar

বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো শিল্প এবং ব্যবসায়িক ক্ষেত্রেও যে বিনিয়োগের গতি গুরুত্বপূর্ণ, তা সুনিশ্চিত করতে প্রাইভেট সেক্টরের অংশগ্রহণ বাড়ানো অত্যন্ত প্রয়োজনীয় বলে জানানো হয়েছে ক্রিসিলের (Crisil) সম্প্রতি প্রকাশিত ‘ভারত আউটলুক’ রিপোর্টে। সরকারের ক্যাপেক্স (Capex) নীতির স্বাভাবিকীকরণ চলাকালীন, এখন প্রাইভেট সেক্টরের হাতেই নেতৃত্ব দেওয়া উচিত, যাতে আগামী দিনে বিনিয়োগের গতির প্রেক্ষিতে আরও অগ্রগতি হতে পারে, বলছে ক্রিসিল।

   

২০২৪ অর্থবছরের শেষ পর্যন্ত সরকারি খাতের বিনিয়োগ এবং বাজেট ঘোষণায় নির্ধারিত খরচের ফলে ভারতীয় অর্থনীতি বেশ কিছু ইতিবাচক দিক দেখেছে, যার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ একটি হল ফিক্সড ইনভেস্টমেন্ট, যা জিডিপি বৃদ্ধির অন্যতম প্রধান চালিকা শক্তি। ক্রিসিলের মতে, পরবর্তী সময়ে প্রাইভেট সেক্টরকে আরও অগ্রসর হতে হবে এবং তার নেতৃত্বে বিনিয়োগের গতি বজায় রাখতে হবে। সরকারের ক্যাপেক্স বাড়ানোর পাশাপাশি, প্রাইভেট সেক্টরকে উৎসাহিত করার জন্য নীতি কৌশল পরিবর্তন করা হয়েছে, যা নতুন বিনিয়োগে উৎসাহিত করবে।

ভারত সরকারের কেন্দ্রীয় খাতে ক্যাপেক্স বেড়েছে। তবে, সাম্প্রতিক রিপোর্টে ক্রিসিল জানায়, ২০২৬ সালে কেন্দ্রীয় ক্যাপেক্স জিডিপির ৩.১ শতাংশে স্থির হতে পারে, যা ২০২৫ সালের তুলনায় একই। তবে, রিপোর্টে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, সরকারি ক্যাপেক্স উন্নতি সাধন করলেও, খরচ ও সময়ের বেশি ব্যয়ের ক্ষেত্রে এখনও কিছু বাধা রয়েছে। ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত, কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলির ৬৩.৭ শতাংশের ক্ষেত্রে সময়সীমা লঙ্ঘন হয়েছে এবং ৪১.১ শতাংশ প্রকল্পে অতিরিক্ত খরচ হয়েছিল।

এই পরিস্থিতিতে, সরকারের উচিত দ্রুত প্রস্তুত প্রকল্পের একটি পাইপলাইন তৈরি করা এবং রাজ্যগুলির সঙ্গে আরও সমন্বয় সাধন করা, যাতে যথাসম্ভব উচ্চমানের প্রকল্প বাস্তবায়ন করা যায়। এইভাবে খরচ এবং সময়ের অপচয় কমিয়ে লাভজনক ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।

অন্যদিকে, সরকারি পলিসি আরও সক্রিয় হতে শুরু করেছে প্রাইভেট সেক্টরের বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য। ২০২৬ সালের বাজেটে উৎপাদন লিংকড ইনসেনটিভ (PLI) স্কিমে বরাদ্দ অর্থ ৮৭ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে, বিশেষ করে ইলেকট্রনিক্স, টেক্সটাইল, অটোমোবাইল, এবং যন্ত্রাংশ খাতে। এই পদক্ষেপগুলো প্রাইভেট সেক্টরের বিনিয়োগ বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

ক্রিসিলের রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে যে, ভারতের প্রকৃত জিডিপি বৃদ্ধির হার ২০২৬ অর্থবছরে ৬.৫ শতাংশ থাকবে, যা একদিকে যেমন বিশ্ব অর্থনীতির অস্থিতিশীলতা এবং ভৌগোলিক সমস্যা নিয়ে কিছু অনিশ্চয়তার মুখোমুখি, তেমনই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক পদক্ষেপগুলির কারণে বাণিজ্যিক বিরোধের ঝুঁকি রয়েছে।

এই সকল পদক্ষেপের মাধ্যমে ক্রিসিলের পূর্বাভাস রয়েছে যে, ভারত সরকার এবং প্রাইভেট সেক্টরের যৌথ উদ্যোগ ভবিষ্যতে ভারতের অর্থনীতির উন্নতি ও গতি রক্ষা করবে। বিশেষ করে উৎপাদন ক্ষেত্রে বড় ধরনের বিনিয়োগ, সরকারি নীতির উন্নতি এবং ক্যাপেক্সের সঠিক ব্যবহার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

ক্রিসিলের ‘ভারত আউটলুক’ রিপোর্টে পরিষ্কারভাবে বলা হয়েছে যে, প্রাইভেট সেক্টরের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি এবং সরকারের ক্যাপেক্স বাড়ানোর ফলে ভারতের অর্থনীতির গতি বজায় রাখা সম্ভব হবে। যদিও সরকারি খরচের দক্ষতা ও সময়ের মধ্যে আরও সমন্বয় প্রয়োজন, তবে সঠিক পদক্ষেপের মাধ্যমে আগামী বছরে জিডিপির গতিবেগ আরও শক্তিশালী হতে পারে।