Food Shortage Rumors: সম্প্রতি দেশজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়েছে একটি গুজবকে কেন্দ্র করে। বলা হচ্ছে, পাকিস্তানের সঙ্গে সম্ভাব্য যুদ্ধ পরিস্থিতির জেরে দেশে খাদ্যদ্রব্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের অভাব দেখা দিতে পারে। এই খবরে বহু মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন এবং অনেকেই দোকানে গিয়ে প্রচুর পরিমাণে খাদ্যসামগ্রী ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনে মজুত করতে শুরু করেছেন।
এই পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় সরকার সরব হয়েছে এবং সাধারণ মানুষকে আশ্বস্ত করার জন্য স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে—দেশে পর্যাপ্ত পরিমাণে খাদ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য মজুত রয়েছে, আতঙ্কিত হওয়ার কোনও কারণ নেই।
কেন্দ্রীয় খাদ্যমন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশী সম্প্রতি এক্স (পূর্বতন টুইটার) হ্যান্ডলে একটি পোস্ট করে দেশবাসীর উদ্দেশে বলেন, “দেশের বিভিন্ন জায়গায় কিছু ভিত্তিহীন গুজব ছড়িয়েছে, যার ফলে সাধারণ মানুষ খাদ্যদ্রব্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনতে হুড়োহুড়ি করছেন। আমি স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিতে চাই—দেশে সমস্ত জিনিসই প্রয়োজনের চেয়ে অনেক বেশি মজুত রয়েছে। সরকার সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে এবং সমস্ত রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পর্যাপ্ত পরিমাণে খাদ্য সরবরাহের ব্যবস্থা রয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “কোনওরকম গুজবে কান দেবেন না। অহেতুক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়া থেকে বিরত থাকুন। যে কোনও জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকার প্রস্তুত।”
সরকারের এই বার্তা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ, কারণ যুদ্ধ বা সংকটের সময়ে গুজব খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং জনমনে ভয়ের সৃষ্টি করে। এই ভয় অনেক সময় বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে, যার ফলে পণ্যের দাম বেড়ে যায় এবং সাধারণ মানুষ ভোগান্তির মুখে পড়ে। কেন্দ্রীয় সরকারের এই আশ্বাস সেই আতঙ্ক দূর করতে সহায়তা করবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
খাদ্য সরবরাহ ও নিরাপত্তা নিয়ে সরকারের একাধিক দফতর এবং এজেন্সি সার্বক্ষণিক কাজ করছে। খাদ্য মজুত, বিতরণ এবং চাহিদা অনুযায়ী জোগান নিশ্চিত করতে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার যৌথভাবে পরিকল্পনা রূপায়ণ করছে। এছাড়াও, FCI (Food Corporation of India)-র গুদামে বিপুল পরিমাণ চাল, গম, এবং অন্যান্য খাদ্যদ্রব্য মজুত রয়েছে।
সরকার সাধারণ মানুষের উদ্দেশ্যে আরও একবার আবেদন করেছে—কোনও ধরনের গুজব ছড়াবেন না বা বিশ্বাস করবেন না। যদি কেউ গুজব ছড়ায়, তাহলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিশেষজ্ঞরাও বলছেন, এই মুহূর্তে ভারত খাদ্য উৎপাদন ও সরবরাহের দিক থেকে স্বয়ংসম্পূর্ণ। বিগত বছরগুলিতে কৃষিক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে, যার ফলে খাদ্যশস্যের পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে। এর পাশাপাশি, সরকারের ডিজিটাল নজরদারি ব্যবস্থার মাধ্যমে বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করা রোধ করা সম্ভব হচ্ছে।
পরিশেষে বলা যায়, এখন সবচেয়ে জরুরি বিষয় হলো সচেতনতা। যে কোনও খবরে বিশ্বাস করার আগে তার সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন। আতঙ্কিত হয়ে খাদ্য মজুত করলে শুধু নিজের ক্ষতি নয়, পুরো সমাজে একটি অপ্রয়োজনীয় সংকট তৈরি হয়।
সরকার এবং সমাজের দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে আমাদের কর্তব্য হলো গুজব রোধ করা এবং সঠিক তথ্য প্রচার করা। আসুন, সকলেই মিলে সচেতন থাকি, দায়িত্ববান হই এবং অহেতুক গুজবে কান না দিয়ে বাস্তব তথ্যের ভিত্তিতে পদক্ষেপ নিই।