ভারত-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য আলোচনা নিয়ে সরকারকে সর্তকতার পরামর্শ সীতারামনের

ভারতের কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন বৃহস্পতিবার বলেন, ভারত-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য আলোচনা নিয়ে ভারত সরকার নিবিড়ভাবে নজর রাখছে। এই আলোচনা চলাকালীন সময়ে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে উঠে…

india-us-trade-talks-government-advised-to-exercise-caution-by-sitharaman

short-samachar

ভারতের কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন বৃহস্পতিবার বলেন, ভারত-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য আলোচনা নিয়ে ভারত সরকার নিবিড়ভাবে নজর রাখছে। এই আলোচনা চলাকালীন সময়ে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে উঠে এসেছে আমেরিকার পক্ষ থেকে সম্ভাব্য প্রতিউত্তর শুল্ক। এই শুল্ক নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে, বিশেষত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের অধীনে।

   

বিশাখাপত্তনমে ‘দ্য গ্লিম্পসেস অফ ওয়ার্ল্ড হিস্ট্রি’ বইটির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দিতে গিয়ে সীতারামন বলেন, “আমাদের দেখার আছে যে, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় যুক্তরাষ্ট্রে আলোচনা কিভাবে পরিচালনা করছে।” তিনি আরও জানান, ভারত সরকারের তরফ থেকে দেশের রপ্তানি স্বার্থকে যথাযথভাবে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের কাছে তুলে ধরা হচ্ছে এবং এই বিষয়ে নানা ধরনের আলোচনার আয়োজন করা হয়েছে।

মন্ত্রীর মন্তব্যের পরপরই তিনি সরকারের নেয়া পদক্ষেপগুলো তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “আমরা আলোচনা শুরুর আগে স্টেকহোল্ডারদের সাথে পরামর্শ চালিয়ে যাচ্ছি। বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গয়াল যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে সক্রিয়ভাবে আলোচনায় অংশ নিচ্ছেন। এছাড়া, শিল্প সংস্থাগুলির সঙ্গে নিয়মিত তথ্য বিনিময়ের মাধ্যমে রপ্তানিকারকদের উদ্বেগ এবং স্বার্থ রক্ষা করা হচ্ছে।”

এরপর সীতারামন সুরাহা হতে পারে এমন কোনো প্রতিকার নিয়ে সাবধানী মনোভাবও প্রকাশ করেন। “এটা এখনই বলা সম্ভব নয় যে কী হবে, তবে আলোচনা থেকে কী ফল আসে সেটা দেখতে হবে,” মন্তব্য করেন সীতারামন।

এটি একদিকে যেমন ভারতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রশাসনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রক্রিয়া নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। বিশেষভাবে ট্রাম্প প্রশাসনের প্রতিউত্তর শুল্ক পরিকল্পনা তৈরি করেছে, যা তাদের দেশ থেকে পণ্য আমদানি করতে ভারতের মতো অন্যান্য দেশের উপর বাড়তি শুল্ক আরোপ করবে। এই শুল্ক নীতি ভারতের রপ্তানি ক্ষেত্রে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে, বিশেষত তাদের খাতগুলো যেগুলি যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে প্রবেশাধিকার লাভের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

ভারতের রপ্তানি শিল্পের মধ্যে বিশেষভাবে শঙ্কিত রয়েছে টেক্সটাইল, ফার্মাসিউটিক্যালস এবং আইটি সেবা। এই সেক্টরগুলো যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে সফলভাবে প্রবেশ করেছে এবং তা মজবুত রেখেছে। তবে আমেরিকার পক্ষ থেকে বাণিজ্য শর্তে উল্লিখিত বাধার কারণে ভারতীয় রপ্তানিকারকদের অনেকেই উদ্বিগ্ন। তবে, সীতারামন আশ্বস্ত করেন যে, ভারত সরকারের পদক্ষেপগুলি মসৃণভাবে এগিয়ে চলছে এবং দেশের রপ্তানির স্বার্থ রক্ষায় সরকার যথাসম্ভব চেষ্টা করছে।

এছাড়াও, ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ইতিহাসগতভাবে ভালো বাণিজ্য সম্পর্ক রয়েছে, তবে অতীতে কিছু সমস্যা তৈরি হয়েছে মার্কেট অ্যাক্সেস, শুল্ক কাঠামো এবং নিয়ন্ত্রক নীতির কারণে। এইসব বিষয় নিয়েই বর্তমানে আলোচনা চলছে এবং এটি দুই দেশের বাণিজ্য সম্পর্কের ভবিষ্যতকে প্রভাবিত করবে, বিশেষত ট্রাম্প প্রশাসনের অধীনে।

বর্তমানে, ভারতীয় বাণিজ্য মন্ত্রী পীযূষ গয়াল যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন, যেখানে তিনি বিভিন্ন প্রকার আলোচনা করছেন যাতে ভারতীয় রপ্তানিকারকদের স্বার্থ সুরক্ষিত থাকে। সীতারামনও আশ্বস্ত করেছেন যে, সরকার এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে যুক্ত-বাণিজ্য আলোচনার দিকে মনোযোগ দিয়ে চলেছে।

এক্ষেত্রে, পরবর্তী সময়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং সরকারের পক্ষ থেকে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়, তা ভারতের অর্থনীতি এবং বাণিজ্য সম্পর্কের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে।