HomeBusinessভারতের শেয়ার বাজারে উদ্বেগ, সেনসেক্স ও নিফটি লাল সূচকে

ভারতের শেয়ার বাজারে উদ্বেগ, সেনসেক্স ও নিফটি লাল সূচকে

- Advertisement -

ভারতের শেয়ার বাজারে আজ সেনসেক্স এবং নিফটি সূচক কমেছে, এর পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষণার প্রভাব ছিল। ট্রাম্প তার প্রস্তাবিত শুল্ক আরোপের বিষয়ে নিশ্চিত করেছেন, যা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য পরিস্থিতিতে আরো অস্থিরতা সৃষ্টি করেছে। এই ঘোষণার ফলে এশীয় বাজারগুলোতে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে এবং ভারতের শেয়ার বাজারও তাতে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

আজকের শুরুতে, সেনসেক্স ১৯১.৭১ পয়েন্ট বা ০.২৬ শতাংশ কমে ৭২,৮৯৪.২৩ পয়েন্টে, আর নিফটি ৬২.১০ পয়েন্ট বা ০.২৮ শতাংশ কমে ২২,০৫৭.২০ পয়েন্টে পৌঁছেছে। সকাল ১০টা পর্যন্ত, মোট ২,১৭০টি শেয়ার উপরে উঠেছে, ১,০১১টি শেয়ার নেমে গেছে এবং ১৪০টি শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত ছিল।

   

সেনসেক্স এবং নিফটির বর্তমান পতন আসলে দীর্ঘস্থায়ী কিছু সমস্যা থেকে উদ্ভূত। সেপ্টেম্বর মাসের রেকর্ড হাইয়ের তুলনায় সেনসেক্স প্রায় ১৮ শতাংশ এবং নিফটি প্রায় ১৯ শতাংশ কমেছে। এর পেছনে মূল কারণগুলো হলো অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মন্থরতা, দুর্বল কর্পোরেট আয়, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের ক্রমাগত বিক্রি এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সম্পর্কের অস্থিরতা।

গত দিনের শেয়ার বাজারে তেমন কোনো বড় পরিবর্তন দেখা যায়নি, তবে তেলের দাম এবং আর্থিক সেবা খাতের শেয়ারের দুর্বলতা নিফটিকে নিচে টেনে এনেছে। অন্যদিকে, তথ্যপ্রযুক্তি (IT) খাতের শেয়ার কিছুটা সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে।

ডোনাল্ড ট্রাম্প গতকাল ঘোষণা করেছেন যে আজ থেকে কানাডা ও মেক্সিকোর ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে। পাশাপাশি চীনের উপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে, যা চীনের উপর মোট ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপের জন্য একটি বড় পদক্ষেপ। এই পদক্ষেপগুলো আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে, এবং এর প্রভাব সরাসরি শেয়ার বাজারে পড়তে শুরু করেছে।

এছাড়া, ট্রাম্পের ঘোষণা অনুযায়ী, এপ্রিল ২ তারিখ থেকে আরও প্রতিক্রিয়া শুল্ক কার্যকর হতে যাচ্ছে, যা বাণিজ্য সংঘাতের মাত্রা আরও বাড়িয়ে তুলবে। এই পরিস্থিতি বিশ্ববাজারে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে, যার ফলস্বরূপ বিনিয়োগকারীরা বেশি ঝুঁকি নিতে চাচ্ছেন না।

যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক নীতি শুধু বাণিজ্য সম্পর্কেই নয়, এর প্রভাব মূলত মূল্যস্ফীতি বাড়ানোর মধ্যে দিয়েও দেখা যাবে। এতে করে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক, ফেডারেল রিজার্ভ, তাদের সুদের হার আরও বেশি সময় ধরে উচ্চ রাখতে পারে। এর ফলে ভারতের মতো উদীয়মান বাজারগুলিতে বিদেশী পুঁজি প্রবাহ কমে যেতে পারে, যা ভারতের শেয়ার বাজারকে আরও চাপের মধ্যে ফেলতে পারে।

ব্রডার মার্কেটের ক্ষেত্রেও নেতিবাচক প্রবণতা দেখা গেছে। বিএসই সিএমএস ক্যাপ ইনডেক্স ০.৮ শতাংশ কমে গেছে, এবং বিএসই মিড ক্যাপ ইনডেক্স ১.২ শতাংশ পড়ে গেছে। এই দুই ইনডেক্স এখন ‘বিয়ার মার্কেট’ অঞ্চলে প্রবেশ করেছে, যেগুলোর দাম গত বছরের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে ২০ শতাংশেরও বেশি কমে গেছে।

খাতভিত্তিক পারফরম্যান্সে দেখা গেছে যে, সব কটি সেক্টরাল ইনডেক্সই কিছুটা পড়েছে, শুধু নিফটি পিএসই ব্যাংক একমাত্র সেক্টর ছিল যা ইতিবাচক ছিল। তবে নিফটি আইটি সেক্টর সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যা ২ শতাংশেরও বেশি পড়েছে। ইনফোসিস এবং এইচসিএল টেকনোলজিসের শেয়ার সবচেয়ে বেশি কমেছে। গত রাতে নাসডাক কম্পোজিটের ৩ শতাংশ পতনও এই পরিস্থিতির সঙ্গে সম্পর্কিত।

বর্তমানে ভারতের শেয়ার বাজারের পরিস্থিতি কিছুটা উদ্বেগজনক হলেও, এটি শুধু বাইরের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করছে না। ভবিষ্যতে যদি আন্তর্জাতিক বাণিজ্য পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে, তবে তা ভারতের অর্থনীতির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হতে পারে। তবে, শেয়ার বাজারে যারা দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগকারী, তাদের জন্য এটি একটি সময় হতে পারে যেখানে বাজারে সস্তায় শেয়ার কিনে লাভ করা সম্ভব।

- Advertisement -
Business Desk
Business Desk
Stay informed about the latest business news and updates from Kolkata and West Bengal on Kolkata 24×7
এই সংক্রান্ত আরও খবর
- Advertisment -

Most Popular