ভারতে উন্নতি করছে বিলাসবহুল ঘড়ির বাজার

india-luxury-watch-market-growth-report-2025

ভারতের বিলাসবহুল ঘড়ির বাজার এখন উত্থানের চূড়ান্ত ধাপে। দেশের দ্রুত বাড়তে থাকা সমৃদ্ধ শ্রেণি এবং উচ্চবিত্তদের ক্রয়ক্ষমতার বৃদ্ধিই এই উত্থানের প্রধান কারণ। সম্প্রতি SOIC Research-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের লাক্সারি ওয়াচ মার্কেট আগামী কয়েক বছরে বছরে গড়ে ১১-১২ শতাংশ হারে বাড়বে যা বিশ্বের অন্যতম দ্রুত বর্ধনশীল বাজার হিসেবে ভারতকে এগিয়ে রাখবে।

Advertisements

প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারতের ক্রমবর্ধমান ধনবান শ্রেণি ও হাই নেট ওয়ার্থ ইন্ডিভিজুয়ালস (HNIs)-দের মধ্যে বিলাসবহুল ঘড়ির প্রতি আগ্রহ দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভারতের অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে যে নতুন সম্পদশালী শ্রেণি তৈরি হচ্ছে, তাদের ফ্যাশন, রুচি এবং স্ট্যাটাসের প্রতিফলন হিসেবেই বিলাসবহুল ব্র্যান্ডের প্রতি আকর্ষণ তৈরি হয়েছে।

পাকিস্তান নিয়ে ‘ভাইজানের’ মন্তব্যে বিতর্ক

প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়েছে, “ভারত আগামী দশকে বিশ্বব্যাপী লাক্সারি ওয়াচ মার্কেটের অন্যতম দ্রুত বর্ধনশীল দেশ হয়ে উঠবে। দেশজুড়ে মাথাপিছু আয়ের বৃদ্ধি, দ্রুত নগরায়ন, এবং প্রিমিয়াম পণ্যের প্রতি ক্রমবর্ধমান আকাঙ্ক্ষা  সব মিলিয়ে এই বাজারকে আরও শক্তিশালী করছে।”

গত কয়েক বছরে ভারতের ঘড়ির বাজারে একটি স্পষ্ট পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেছে। আগে যেখানে ক্রেতারা মূলত ফ্যাশন ঘড়ি বা এন্ট্রি-লেভেল ব্র্যান্ডের দিকে ঝুঁকতেন, এখন সেখানে ক্রেতারা প্রিমিয়াম ও আল্ট্রা-লাক্সারি ব্র্যান্ডের দিকে সরে যাচ্ছেন।

FY20-এ যেখানে উচ্চমানের ঘড়ির বিক্রির অংশ ছিল ৪৮ শতাংশ, FY25-এ তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭০ শতাংশে। অর্থাৎ, ভারতীয় ক্রেতারা এখন আরও এক্সক্লুসিভ ও দামি ঘড়িতে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হচ্ছেন।

Advertisements

আরও চমকপ্রদ তথ্য হলো, বিলাসবহুল ঘড়ির গড় বিক্রয়মূল্য (ASP) গত পাঁচ বছরে প্রায় তিনগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। FY20-এ যেখানে গড় দাম ছিল ₹৮৪,০০০, FY25-এ তা বেড়ে ₹২.০৪ লক্ষে পৌঁছেছে। মাঝের বছরগুলোতেও ক্রমবর্ধমান প্রবণতা ছিল স্পষ্ট FY21-এ ₹১.১০ লক্ষ, FY22-এ ₹১.৪৯ লক্ষ, FY23-এ ₹১.৫৯ লক্ষ, এবং FY24-এ ₹১.৯০ লক্ষ।

এই প্রবণতার পেছনে রয়েছে শুধু অর্থনৈতিক উন্নয়ন নয়, বরং সামাজিক রুচিরও পরিবর্তন। তরুণ প্রজন্ম এখন বিলাসবহুল পণ্যকে শুধু ‘লাক্সারি’ নয়, বরং ‘আইডেন্টিটি ও সাকসেস’-এর প্রতীক হিসেবে দেখছেন। কর্মজীবী মহিলাদের সংখ্যা বৃদ্ধি, আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের সহজলভ্যতা, এবং বলিউড সেলিব্রিটিদের ব্র্যান্ড এনডোর্সমেন্টও এই বাজারে গতি এনেছে।

Cartier, Omega, Rolex, Tag Heuer, Hublot, Audemars Piguet এবং Patek Philippe-এর মতো ব্র্যান্ডগুলোর বিক্রি ভারতে উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। একইসঙ্গে দেশীয় বাজারেও প্রিমিয়াম ওয়াচ কালেক্টরদের সংখ্যা বাড়ছে, যারা একে বিনিয়োগ হিসেবেও বিবেচনা করছেন।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারতের তরুণ ক্রেতাদের মধ্যে “aspirational luxury”-র প্রবণতা দ্রুত বাড়ছে। আগে যেখানে বিলাসবহুল ঘড়ি ছিল মূলত ধনী ব্যবসায়ী বা সেলিব্রিটিদের জিনিস, এখন সেখানে সফল পেশাজীবী, স্টার্টআপ উদ্যোক্তা এমনকি প্রথম চাকরিজীবীরাও এই প্রিমিয়াম ব্র্যান্ডের দিকে ঝুঁকছেন।