মুদ্রাস্ফীতিতে বড় পতন, রেপো রেট কমানোর পথে আরবিআই? জানুন বিস্তারিত

India Inflation Fall September

২০২৫ সালের সেপ্টেম্বরে ভারতের বার্ষিক পাইকারি মূল্য সূচক (WPI)-এর ভিত্তিতে মুদ্রাস্ফীতি উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়ে ০.১৩ শতাংশে নেমে এসেছে। বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, আগস্টে এই হার ছিল ০.৫২ শতাংশ। খাদ্য ও জ্বালানির দামের পতনই এই মুদ্রাস্ফীতি হ্রাসের মূল কারণ বলে জানানো হয়েছে।

খাদ্য ও জ্বালানি দামের পতনে স্বস্তি:

WPI তথ্য অনুযায়ী, সেপ্টেম্বরে খাদ্যপণ্যের দাম ১.৩৮ শতাংশ কমেছে। পর্যাপ্ত বাফার স্টক ও ভালো ফসলের ফলন এই দামের পতনে বড় ভূমিকা রেখেছে। গম ও চালের মতো প্রধান খাদ্যশস্যের মজুত পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকায় সরবরাহ পর্যাপ্ত ছিল।

অন্যদিকে, জ্বালানি খাতে মুদ্রাস্ফীতি নেতিবাচক অঞ্চলে থেকে -২.৫৮ শতাংশে অবস্থান করছে। সেপ্টেম্বরে পেট্রোল, ডিজেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম কমায় এই খাতে স্বস্তি দেখা গেছে। মাসওয়ারি ভিত্তিতে সেপ্টেম্বরে WPI আগস্টের তুলনায় ০.১৯ শতাংশ কমেছে। যদিও বছরওয়ারি ভিত্তিতে উৎপাদিত পণ্য, অখাদ্য সামগ্রী, টেক্সটাইল ও পরিবহন সরঞ্জামের দামের বৃদ্ধির কারণে সামগ্রিক মুদ্রাস্ফীতি ইতিবাচক অবস্থায় রয়েছে।

Advertisements

ভোক্তা মূল্য সূচকে (CPI) বড় পতন: India Inflation Fall September

 

একই সময়ে, ভোক্তা মূল্য সূচক (CPI)-এর ভিত্তিতে মুদ্রাস্ফীতি সেপ্টেম্বরে নেমে এসেছে ১.৫৪ শতাংশে, যা ২০১৭ সালের জুনের পর সর্বনিম্ন স্তর। আগস্টে CPI ছিল ২.০৫ শতাংশ। খাদ্যপণ্য ও জ্বালানির দামের পতন এই হ্রাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।

খাদ্য মুদ্রাস্ফীতি টানা চতুর্থ মাসে নেতিবাচক থেকে -২.২৮ শতাংশে নেমেছে। সবজি, ফল, ভোজ্য তেল, ডাল, সিরিয়াল ও ডিমের দাম কমে আসায় এই পতন ঘটেছে। একইসঙ্গে জ্বালানির দাম কমায় ভোক্তারা অতিরিক্ত স্বস্তি পেয়েছেন।

আগামী অর্থবছরে মুদ্রাস্ফীতির সম্ভাবনা কম:

২০২৫-২৬ অর্থবছরে মুদ্রাস্ফীতি তুলনামূলকভাবে কম থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে। অনুকূল বেস ইফেক্ট, ভালো বর্ষা, খরিফ মৌসুমে চাষাবাদের ইতিবাচক প্রবণতা, পর্যাপ্ত জলাধার স্তর ও খাদ্যশস্যের পর্যাপ্ত মজুত এর পেছনে বড় ভূমিকা রাখবে। এছাড়াও, ২২ সেপ্টেম্বর ঘোষিত জিএসটি হারের কাটছাঁটও পণ্যের দাম কমিয়ে সামগ্রিক মুদ্রাস্ফীতি আরও নিয়ন্ত্রণে আনতে সাহায্য করবে।

রেপো রেট কমানোর সম্ভাবনা:

মুদ্রাস্ফীতির এই পতন ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ককে (RBI) আরও নমনীয় মুদ্রানীতি গ্রহণের সুযোগ দিচ্ছে। ১ অক্টোবর আরবিআই-এর মুদ্রানীতি কমিটি (MPC) ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য মুদ্রাস্ফীতির পূর্বাভাস ৩.১ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২.৬ শতাংশ করেছে। আরবিআই গভর্নর সঞ্জয় মালহোত্রা জানান, জিএসটি হার কমানো ও খাদ্যদামের স্থিতিশীলতা CPI-র বিভিন্ন পণ্যের দামে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলবে।

WPI ও CPI উভয় সূচকের পতন ভবিষ্যতে সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা উজ্জ্বল করছে, যা অর্থনীতিতে তারল্য বৃদ্ধি ও প্রবৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করতে সহায়ক হতে পারে।

Advertisements