ভারতের বৈদেশিক মুদ্রা ভান্ডার ৭০২.৩ বিলিয়ন ডলার, সোনা রিজার্ভে রেকর্ড উত্থান

India Forex Reserves Hit New Record High

ভারতের বৈদেশিক মুদ্রার ভান্ডার (India Forex Reserves) নতুন উচ্চতা স্পর্শ করল। রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া (RBI)-র সর্বশেষ সাপ্তাহিক বুলেটিন অনুযায়ী, ১৭ অক্টোবর শেষ হওয়া সপ্তাহে দেশের ফরেক্স রিজার্ভ ৪.৫ বিলিয়ন ডলার বেড়ে ৭০২.৩ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। এই বৃদ্ধির মূল ভরসা সোনা রিজার্ভ, যা ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ১০৮ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে।

Advertisements

সোনা রিজার্ভে রেকর্ড বৃদ্ধির পেছনের কারণ:
আরবিআই জানিয়েছে, সোনা রিজার্ভ ৬.২ বিলিয়ন ডলার বৃদ্ধি পেয়ে ১০৮.৫ বিলিয়ন ডলার ছুঁয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে সোনার দামের ধারাবাহিক উত্থান এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কৌশলগত ক্রয় নীতির ফলেই এই রেকর্ড তৈরি হয়েছে। গত ১০ বছরে ভারতের মোট ফরেক্স রিজার্ভে সোনার অংশ ৭ শতাংশের নিচে থেকে বেড়ে প্রায় ১৫ শতাংশে পৌঁছেছে, যা রিজার্ভ ব্যবস্থাপনায় বড় রূপান্তর নির্দেশ করে।

ফরেন কারেন্সি অ্যাসেটস কমলেও অন্যান্য খাতে স্থিতিশীলতা:
যদিও ফরেন কারেন্সি অ্যাসেটস (FCA) ১.৭ বিলিয়ন ডলার কমে ৫৭০.৪ বিলিয়ন ডলার হয়েছে, ইউরো, পাউন্ড, ইয়েনের ওঠানামার প্রভাবকে এর কারণ হিসেবে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। এদিকে IMF-এর স্পেশাল ড্রয়িং রাইটস (SDR) রয়েছে ১৮.৭ বিলিয়ন ডলার, আর IMF-এ ভারতের রিজার্ভ পজিশন সামান্য কমে দাঁড়িয়েছে ৪.৬২ বিলিয়ন ডলার।

এক বছরে রিজার্ভ বৃদ্ধি ও আর্থিক ব্যবস্থাপনায় RBI-র ভূমিকা:
২০২৫ অর্থবছরের মার্চের তুলনায় বর্তমানে মোট রিজার্ভ বেড়েছে ১৪ বিলিয়ন ডলার। স্থিতিশীল মূলধনী প্রবাহ, দৃঢ় রেমিট্যান্স এবং আরবিআই-র সক্রিয় হস্তক্ষেপ দেশের ফরেক্স সুরক্ষাকে আরও শক্তিশালী করেছে। FCA কমলেও সোনা ও SDR-এ বৃদ্ধিই সেই ঘাটতি পুষিয়ে দিয়েছে।

Advertisements

রাজ্য সরকারকে সহায়তা ও অভ্যন্তরীণ আর্থিক পরিস্থিতি:
আরবিআইয়ের রিপোর্টে আরও উল্লেখ, রাজ্য সরকারগুলিকে ঋণ ও অগ্রিম সহায়তা এক সপ্তাহে ১৬,১১৬ কোটি টাকা থেকে বেড়ে ৩০,০৯৫ কোটি টাকা হয়েছে, যা রাজস্ব ঘাটতি মোকাবিলায় আর্থিক সহায়তার ইঙ্গিত বহন করে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই বছর সোনার দামে প্রায় ৬০% উত্থান এসেছে নিরাপদ বিনিয়োগের চাহিদা, ডলারের দুর্বলতা, ফেডের রেট-কাট প্রত্যাশা এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলির আগ্রাসী সোনা ক্রয়ের কারণে। একই সঙ্গে সিলভার ও প্লাটিনাম-এর দামও ঊর্ধ্বমুখী। বিশেষ করে, শিল্পখাতে সিলভারের চাহিদা এবং সরবরাহ ঘাটতি ভবিষ্যতেও দাম বাড়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে।