নয়াদিল্লি, ২৮ সেপ্টেম্বর: খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প মন্ত্রক (Employment Growth) দ্বারা আয়োজিত ওয়ার্ল্ড ফুড ইন্ডিয়া ২০২৫ চার দিনের যাত্রা শেষ করে ঐতিহাসিক সাফল্যের সঙ্গে সমাপ্ত হয়েছে। এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনে ২৬টি শীর্ষস্থানীয় দেশি-বিদেশি কোম্পানি মিলে মোট ১,০২,০৪৬.৮৯ কোটি টাকার মেমোরেন্ডাম অফ আন্ডারস্ট্যান্ডিং (এমওইউ) স্বাক্ষরিত করেছে। এটি ভারতের খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ খাতে সর্বকালের সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ।
এই বিনিয়োগগুলি সরাসরি ৬৪,০০০-এরও বেশি চাকরির সৃষ্টি করবে এবং পরোক্ষভাবে ১০ লক্ষেরও বেশি লোকের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করবে, যা সরকারের ভারতকে বিশ্ব খাদ্য প্রক্রিয়াকরণের হাব হিসেবে গড়ে তোলার দৃষ্টিভঙ্গিকে শক্তিশালী করছে। ভারত মণ্ডপমে অনুষ্ঠিত এই চতুর্থ সংস্করণের ওয়ার্ল্ড ফুড ইন্ডিয়া ২০২৫-এর প্রথম দুই দিনেই ১ লক্ষ কোটি টাকার বেশি এমওইউ স্বাক্ষরিত হয়েছে। দ্বিতীয় দিনে একাই ২১টি কোম্পানি ২৫,০০০ কোটি টাকার বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, যা প্রথম দিনের গতিকে আরও ত্বরান্বিত করেছে।
মন্ত্রকের মতে, এই ঘোষণাগুলি খাদ্য খাতে টেকসই উন্নয়ন, প্রযুক্তি স্থানান্তর এবং আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্বের উপর জোর দিয়ে ভারতকে বিশ্ব খাদ্য বাস্কেট হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করবে। সম্মেলনে উত্তরপ্রদেশ, গুজরাট, পাঞ্জাব, ঝাড়খণ্ড এবং বিহারের মতো ফোকাস রাজ্যগুলির সঙ্গে নিউজিল্যান্ড, ভিয়েতনাম, জাপান, রাশিয়া এবং পর্তুগালের প্রতিনিধিদের দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হয়েছে।
এই ইভেন্টের মূল থিম ছিল খাদ্য নিরাপত্তা থেকে পুষ্টি নিরাপত্তার দিকে যাত্রা। মোএফপিআই ১৩টি সেশন আয়োজন করেছে, যেখানে পোষা প্রাণীর খাবার, নিউট্রাসিউটিক্যালস, স্পেশালিটি ফুডস, অ্যালকোহলিক পানীয় এবং প্ল্যান্ট-বেসড ফুডসের মতো বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এছাড়া, কৃষি ও কৃষক কল্যাণ মন্ত্রক, আয়ুষ মন্ত্রক, অ্যাপিডা এবং ওয়ার্ল্ড ব্যাঙ্কের সঙ্গে যৌথ সেশনগুলি বিনিয়োগের সুযোগ এবং প্রযুক্তিগত সহযোগিতা বাড়িয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি রাশিয়ার কৃষি মন্ত্রী দিমিত্রি প্যাট্রুশেভের সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন, যা ভারত-রাশিয়া খাদ্য খাতের সহযোগিতাকে নতুন মাত্রা দিয়েছে।
ওয়ার্ল্ড ফুড ইন্ডিয়া ২০১৭ সাল থেকে ভারতের খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পকে বৈশ্বিক মঞ্চে তুলে ধরে আসছে। এই সম্মেলন বিনিয়োগকারী, উৎপাদক, প্রক্রিয়াকর্তা এবং নীতিনির্ধারকদের মধ্যে অংশীদারিত্ব গড়ে তুলেছে, যা ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ উদ্যোগকে শক্তিশালী করেছে। মন্ত্রকের সচিব জ্ঞানেন্দ্র নাত বলেন, “এই বিনিয়োগগুলি শুধু অর্থনৈতিক বৃদ্ধি নয়, গ্রামীণ উন্নয়ন এবং নারী ক্ষমতায়নকেও ত্বরান্বিত করবে।”
ট্রাম্পকে ‘বিরল জিনিস’ দেখাল পাকিস্তান!
এই এমওইউগুলি মিলিট কফি, মেগা ফুড পার্কস এবং কোল্ড চেইন প্রকল্পের মতো উদ্যোগগুলিকে সমর্থন করবে।এই সম্মেলন ভারতের খাদ্য রফতানির সম্ভাবনাকে উন্মোচিত করেছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে খাদ্য রফতানি ৭০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে, এবং এই বিনিয়োগগুলি এই লক্ষ্যকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে। আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণকারীরা বলছেন, ভারতের বিশাল কাঁচামাল ভান্ডার এবং সরকারি সুবিধা এটিকে আদর্শ বিনিয়োগ গন্তব্য করে তুলেছে। তবে, চ্যালেঞ্জ রয়েছে যেমন সাপ্লাই চেইনের উন্নয়ন এবং সাসটেইনেবিলিটি।