ডিজিটাল লেনদেনে বিপ্লব, UPI-র রেকর্ড বৃদ্ধি প্রকাশ করল RBI

UPI

ভারতের ডিজিটাল পেমেন্ট ইকোসিস্টেমে গত কয়েক বছরে চোখে পড়ার মতো রূপান্তর ঘটেছে। রিজার্ভ ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া (RBI)-এর পেমেন্ট সিস্টেমস রিপোর্ট, জুন ২০২৫ অনুযায়ী, ২০১৯ ক্যালেন্ডার ইয়ার (CY) থেকে ২০২৪ পর্যন্ত দেশজুড়ে ডিজিটাল লেনদেনে অভাবনীয় বৃদ্ধি দেখা গেছে। ভলিউমের হিসাবে ২০১৯ সালে ৩,২৪৮ কোটি পেমেন্ট ট্রান্স্যাকশন ২০২৪ সালে বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ২০,৮৪৯ কোটিতে। একই সময়ে আর্থিক মূল্যের হিসেবে লেনদেন ১,৭৭৫ লাখ কোটি টাকা থেকে বেড়ে পৌঁছেছে ২,৮৩০ লাখ কোটি টাকায়।

Advertisements

ডিজিটাল রেসে শীর্ষে UPI:

২০২৫ সালের প্রথমার্ধে ডিজিটাল পেমেন্টের ক্ষেত্রে ভলিউমের বিচারে ৮৪.৮% শেয়ার নিয়ে একচ্ছত্র আধিপত্য বজায় রেখেছে ইউনিফাইড পেমেন্টস ইন্টারফেস (UPI)। এর পরেই রয়েছে NEFT (৩.৯%) এবং IMPS (২.১%)। তবে মূল্যের হিসাবে UPI-এর শেয়ার ৯%—যা দেখায় যে এটি মূলত ছোট এবং মধ্য-পর্যায়ের লেনদেনের ক্ষেত্রে সবচেয়ে জনপ্রিয়।

বড় লেনদেনে শীর্ষে RTGS: India Digital Payment Growth

একই সময়ে, রিয়েল টাইম গ্রস সেটেলমেন্ট (RTGS) সিস্টেম মূল্যমানের হিসাবে ৬৯% শেয়ার দখল করে শীর্ষে রয়েছে, যদিও ভলিউমে এর শেয়ার মাত্র ০.১%। কারণ, ন্যূনতম ২ লাখ টাকার উচ্চমূল্যের দ্রুত নিষ্পত্তির মাধ্যমে RTGS মূলত ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং কর্পোরেট লেনদেনের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। ২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসে RTGS-এর মাধ্যমে ১২,৫৪৯ কোটি টাকার ট্রান্স্যাকশন ভলিউমে মোট ১,৫৭২ লাখ কোটি টাকার নিষ্পত্তি হয়েছে।

ডিজিটাল পেমেন্টে দেশের সর্বোচ্চ নির্ভরতা:

বর্তমানে দেশের মোট পেমেন্ট ভলিউমের ৯৯.৮% এবং মূল্যের ৯৭.৭% পরিচালিত হচ্ছে ডিজিটালি — যা ভারতে নগদহীন অর্থনীতির শক্তিশালী ভিত্তির প্রমাণ।

Advertisements

জি-সেক ও হোলসেল লেনদেনেও বৃদ্ধি:

সরকারি সিকিউরিটিজ (G-Sec) মার্কেটেও বড়সড় বিকাশ হয়েছে। ২০১৯ সালে ৭৬৯ লাখ কোটি টাকা থেকে ২০২৪ সালে এটি বৃদ্ধি পেয়ে পৌঁছেছে ১,৮১২ লাখ কোটি টাকায়। ২০২৫ সালের প্রথমার্ধে ৯.৮৫ লাখ ট্রান্স্যাকশনে ৯৯৪ লাখ কোটি টাকার নিষ্পত্তি সম্পন্ন হয়েছে। বড় লেনদেনের ক্ষেত্রে RTGS ও CCIL-নিয়ন্ত্রিত সিস্টেম Large Value Payment System (LVPS)-এর মেরুদণ্ড হিসেবে কাজ করছে।

শেষ কথা:

ভারতের ডিজিটাল পেমেন্ট বিপ্লব কেবল খুচরা পেমেন্ট নয়, হোলসেল, সরকারি সিকিউরিটিজ ও বৃহৎ আর্থিক লেনদেনেও বিশ্বমানের গতি ও স্বচ্ছতা এনেছে—যা আগামী পাঁচ বছরে ফিনটেক খাতে দেশকে আরও এগিয়ে নেবে বলে আশা করা হচ্ছে।