আসছে উৎসবের মৌসুম, চাহিদা বাড়াবে জিএসটি সুবিধা

India bank credit growth ভারতে ব্যাংক ঋণের প্রবৃদ্ধি গত বছরের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে শ্লথ হয়েছে। এর ফলে পুঁজিখরচ বা ক্যাপিটাল এক্সপেনডিচার (Capex) এবং ভোক্তা চাহিদা উভয়…

India bank credit growth

India bank credit growth

ভারতে ব্যাংক ঋণের প্রবৃদ্ধি গত বছরের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে শ্লথ হয়েছে। এর ফলে পুঁজিখরচ বা ক্যাপিটাল এক্সপেনডিচার (Capex) এবং ভোক্তা চাহিদা উভয় ক্ষেত্রেই দুর্বলতার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে। রথসচাইল্ড অ্যান্ড কো ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেডের চেয়ারপারসন ও সিনিয়র অ্যাডভাইজার নয়না লাল কিদওয়াই এ কথা জানান। তিনি নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত এফআইসিসিআই LEADS অনুষ্ঠানের ফাঁকে এএনআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “ব্যাংক ক্রেডিট প্রবৃদ্ধি মন্থর হয়েছে, যা স্পষ্টভাবে বিনিয়োগে আগ্রহহীনতা এবং চাহিদার দুর্বলতার প্রতিচ্ছবি।”

প্রবৃদ্ধির হার

ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের (RBI) সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ব্যাংক ঋণের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১২.১ শতাংশ। এর তুলনায় ২০২৩-২৪ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধির হার ছিল ১৬.৩ শতাংশ। এই পার্থক্যই বাজারে চাহিদার শ্লথতা ও ব্যবসায়িক আস্থার অভাবকে স্পষ্ট করে তুলছে।

   

যদিও পরিস্থিতি কিছুটা মলিন, তবে Kidwai আশাবাদী যে আসন্ন উৎসব মৌসুম ও সরকারের সাম্প্রতিক জিএসটি সংস্কার ব্যবসায়িক মনোভাবকে ইতিবাচক করে তুলবে। তিনি বলেন, “ভাল খবর হল জিএসটি সংস্কার এবং উৎসব মৌসুম একসঙ্গে চাহিদাকে বাড়াবে।” তার মতে, যখন চাহিদা বাড়বে, তখন শিল্প খাতের অলস সক্ষমতাগুলো কাজে লাগবে এবং প্রতিষ্ঠানগুলো নতুন করে ক্যাপেক্সে ব্যয় শুরু করবে। এই প্রক্রিয়াই আবার নতুন করে বিনিয়োগ চক্রকে গতিশীল করবে।

অর্থায়ন নিয়েও গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য India bank credit growth

সাক্ষাৎকারে নয়না লাল কিদওয়াই টেকসই অর্থায়ন নিয়েও গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেন। তার মতে, নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে ভারত ইতিমধ্যেই উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করেছে। তবে জলবায়ু অভিযোজন এবং স্থিতিস্থাপকতা নিশ্চিত করতে এখন প্রয়োজন ট্রিলিয়ন ডলারের মতো বিপুল অর্থায়ন। এজন্য “ক্রেডিট এনহান্সমেন্ট” বা ঋণ ঝুঁকি হ্রাসকারী উদ্যোগ অপরিহার্য। তিনি বলেন, “যেভাবে ঝুঁকি কমানো যাবে, সেভাবেই নতুন বিনিয়োগ আকৃষ্ট হবে এবং খাতে অর্থায়ন বাড়বে।”

তিনি আরও যোগ করেন, আন্তর্জাতিক অর্থায়ন জরুরি হলেও দেশের অভ্যন্তরীণ প্রতিষ্ঠান ও ব্যাংকগুলোকেও এগিয়ে আসতে হবে। ইতিমধ্যে ইমপ্যাক্ট ফাইন্যান্সিং ও প্রাইভেট ইক্যুইটি কিছুটা সাড়া দিচ্ছে, তবে জলবায়ু অভিযোজন প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনকে সহায়তা করার জন্য আরও বেশি বিনিয়োগ প্রয়োজন।

Advertisements

মার্কিন শুল্ক যুদ্ধ নিয়েও সতর্কবার্তা

আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে চলমান মার্কিন শুল্ক যুদ্ধ নিয়েও সতর্কবার্তা দেন Kidwai। তিনি জানান, এর প্রভাব ভারতে স্পষ্ট, বিশেষত রপ্তানিনির্ভর খাত যেমন পোশাকশিল্প, চামড়া এবং হীরার গয়না শিল্পে। এই খাতগুলিই বিপুল কর্মসংস্থান তৈরি করে এবং শুল্কবাধার কারণে তারা বড় ধাক্কা খাচ্ছে।

নয়না লাল কিদওয়াই বলেন, “আমাদের নতুন বাজার খুঁজে বের করতে হবে এবং এই খাতগুলিকে সহায়তা করতে হবে যাতে তারা একক বাজারের উপর নির্ভরশীল না থাকে।” তবে তিনি আশাবাদী দিকও তুলে ধরেন। তার মতে, ভারত মূলত দেশীয় চাহিদা-নির্ভর অর্থনীতি। ফলে যদি অভ্যন্তরীণ চাহিদাকে বাড়ানো যায়, তাহলে রপ্তানির ক্ষতি অনেকটাই পূরণ করা সম্ভব হবে।

মোটের উপর নয়না লাল কিদওয়াই-র বক্তব্য স্পষ্ট করে যে, ভারতীয় অর্থনীতির সামনে একদিকে রয়েছে বিনিয়োগে মন্দা ও রপ্তানির ধাক্কা, অন্যদিকে রয়েছে উৎসবের মৌসুম ও সংস্কারমূলক পদক্ষেপের ইতিবাচক সম্ভাবনা। তিনি মনে করেন, যদি সঠিকভাবে চাহিদাকে চাঙ্গা করা যায় এবং জলবায়ু অভিযোজনের জন্য টেকসই অর্থায়নে সঠিক দিকনির্দেশনা দেওয়া যায়, তাহলে ভারতীয় অর্থনীতি নতুন করে গতিশীলতার পথে এগিয়ে যেতে সক্ষম হবে।

Business: Bank credit growth in India has slowed to 12.1%, signaling weak capital expenditure and consumer demand, according to Naina Lal Kidwai. This decline from last year’s 16.3% growth rate highlights a lack of investment appetite despite upcoming festive season boosts.