কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরী সোমবার জানিয়েছেন, ভারত ধীরে ধীরে আমদানি নির্ভর ক্রুড-ভিত্তিক অর্থনীতি থেকে গ্যাস-ভিত্তিক অর্থনীতির (India gas-based economy) দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এই রূপান্তর ভারতের শক্তি নির্ভরতার এক বড় পরিবর্তন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, যা দেশে শক্তি সুরক্ষার পথে একটি মাইলফলক হয়ে উঠতে পারে। গত কয়েক বছরে সরকার বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে, যার মাধ্যমে ঘরোয়া গ্যাস উৎপাদন বৃদ্ধি ও আমদানি নির্ভরতা হ্রাস করা সম্ভব হচ্ছে। বর্তমানে, ভারত তার মোট প্রয়োজনীয় গ্যাসের প্রায় ৫০ শতাংশ আমদানি করে, তবে নতুন বিনিয়োগের মাধ্যমে এই নির্ভরতা আস্তে আস্তে কমানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
হরদীপ পুরী তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন যে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে দেশের অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত লক্ষ্যগুলো অর্জনের দিকে ভারত এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি জানান, “ভারত গ্যাস-ভিত্তিক অর্থনীতির দিকে ধাবিত হচ্ছে। আমরা আমাদের গ্যাসের প্রায় ৫০ শতাংশ আমদানি করি, তবে দেশীয় উৎপাদন বৃদ্ধি পেলে আমদানির উপর নির্ভরতা কমবে।”
এছাড়া, ২০২৩ সালে দেশের গ্যাস উৎপাদন প্রায় ১৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা একটি ইতিবাচক প্রবৃদ্ধির চিহ্ন। সরকার ভবিষ্যৎ লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে, যেখানে ২০২৪ সালে ৩৮.২ বিলিয়ন কিউবিক মিটার (বিসিএম), ২০২৫ সালে ৪০.৯ বিসিএম এবং ২০২৬ সালে ৪৫.৩ বিসিএম গ্যাস উৎপাদনের পরিকল্পনা রয়েছে। এর ফলে দেশের শক্তি নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বাড়বে এবং আমদানির উপর নির্ভরতা কমে আসবে।
সরকারের নেয়া এই পদক্ষেপগুলির মধ্যে অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ নীতি হল নতুন উৎসের গ্যাস উৎপাদকদের জন্য ২০ শতাংশ বেশি মূল্যের প্রণোদনা। এই প্রণোদনা মূলত বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়াতে এবং তাদের সক্রিয়ভাবে ভারতের শক্তি উত্তরণে অংশগ্রহণের উৎসাহ দেয়। মন্ত্রী বলেন, “এই নীতিমালাগুলি ভারতের ইএন্ডপি সেক্টরে বিনিয়োগকে উৎসাহিত করবে এবং নতুন উৎস থেকে গ্যাস উৎপাদনে উচ্চমূল্যের সুবিধা প্রদান করবে।”
সরকারের এই উদ্ভাবনী নীতিমালা ভবিষ্যতে ভারতের শক্তি খাতকে আরও পরিবেশবান্ধব ও শক্তিশালী করতে সহায়ক হবে। গ্যাস-ভিত্তিক অর্থনীতির দিকে এই ধাবিত হওয়া কেবল আমদানি নির্ভরতাকে হ্রাস করবে না, বরং দেশের পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষাতেও সহায়ক হবে। উচ্চ আমদানি নির্ভরতার ফলে জ্বালানি ব্যয় বেড়ে যায় এবং দেশীয় উত্পাদনে কম বিনিয়োগ হয়। এই নতুন পদক্ষেপে বিনিয়োগের পথ সুগম হবে এবং বিদেশী বিনিয়োগকারীরাও ভারতের ইএন্ডপি খাতে অংশগ্রহণের জন্য উৎসাহী হবেন।
পুরী আরও জানান যে, সরকার গ্যাস উৎপাদনের উপর বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে এবং ভবিষ্যতে আরও নীতিমালা কার্যকর করার পরিকল্পনা করছে, যাতে দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করার পাশাপাশি পরিবেশের উপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।