ITR refund delay: অর্থবছর ২০২৪-২৫ এর আয়কর রিটার্ন (ITR) দাখিলের শেষ তারিখ আসন্ন। আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ হলো নন-অডিট করদাতাদের জন্য নির্ধারিত চূড়ান্ত সময়সীমা। ইতিমধ্যেই আয়কর দপ্তরের ই-ফাইলিং পোর্টালে প্রায় ৫.৫ কোটি করদাতা রিটার্ন দাখিল করেছেন বলে সর্বশেষ তথ্য জানাচ্ছে। তবে অনেক করদাতা যারা ইতিমধ্যেই রিটার্ন জমা দিয়েছেন, তারা এখনো আয়কর ফেরত (Tax Refund) পাননি। কেন এই বিলম্ব হচ্ছে এবং কীভাবে তা সমাধান করা যায়, তা নিয়েই বিশেষ প্রতিবেদন।
আয়কর ফেরত (Refund) দেরির কারণ:
সাধারণভাবে দেখা যায়, অধিকাংশ আয়কর ফেরত কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই করদাতার ব্যাঙ্ক হিসাবে জমা হয়ে যায়। তবে কিছু ক্ষেত্রে ফেরত বিলম্বিত হয়। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, এই বছরের মতো যখন রেকর্ড পরিমাণ রিটার্ন জমা পড়ে, তখন ফেরত প্রক্রিয়ায় দেরি হওয়া স্বাভাবিক। এর কয়েকটি সাধারণ কারণ হলো:
1. ট্যাক্স ক্রেডিটের অসামঞ্জস্য – করদাতার ফর্ম ২৬এএস ও জমা দেওয়া ITR-এর মধ্যে পার্থক্য থাকলে তা যাচাই করতে সময় লাগে।
2. ই-ভেরিফিকেশন বাকি থাকা – যদি রিটার্ন জমা দেওয়ার পর তা ই-ভেরিফাই না করা হয়, তবে প্রসেসিং শুরুই হয় না।
3. ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ভ্যালিডেশন সমস্যা – যে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে রিফান্ড আসবে তা প্রি-ভ্যালিডেটেড এবং প্যানের (PAN) সাথে সংযুক্ত না থাকলে ফেরত আটকে যায়।
4. আয় বা টিডিএসের তথ্য বিভ্রাট – রিপোর্টেড ইনকাম ও টিডিএসের (TDS) তথ্যের মধ্যে গরমিল থাকলে অতিরিক্ত পরীক্ষা হয়।
5. ঝুঁকিভিত্তিক যাচাই – কিছু কেস এলোমেলোভাবে বা ঝুঁকি নির্ভর পরীক্ষার জন্য নির্বাচিত হয়, ফলে ফেরত পেতে দেরি হয়।
করদাতারা কী করতে পারেন?
যদি আপনার রিফান্ড এখনো না আসে, তবে কয়েকটি পদক্ষেপ অবশ্যই খতিয়ে দেখুন—
নিশ্চিত করুন যে আপনার রিটার্ন ই-ভেরিফাইড হয়েছে।
ITR প্রসেসিং সম্পন্ন হয়েছে কিনা তা দেখুন, কারণ প্রসেসিং শেষ হওয়ার পরেই রিফান্ড শুরু হয়।
আপনার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট প্রি-ভ্যালিডেটেড ও প্যানের সাথে যুক্ত কিনা যাচাই করুন।
ই-ফাইলিং পোর্টালে গিয়ে ‘Refund/Demand Status’ অপশনে চেক করুন।
যদি আয়কর দপ্তরের পক্ষ থেকে কোনো গরমিল নোটিস আসে, তবে তা দ্রুত জবাব দিন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই ধরনের বিলম্ব অস্থায়ী এবং নিয়ম মেনে চললে নির্দিষ্ট সময়ে ফেরত পাওয়া যায়।
কারা ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে রিটার্ন জমা দেবেন?
প্রতি বছর সাধারণত আয়কর রিটার্ন দাখিলের শেষ সময়সীমা হয় ৩১ জুলাই। তবে এবার ফর্ম প্রকাশে দেরি হওয়ায় এবং বিভিন্ন পরিবর্তনের কারণে সরকার সময়সীমা বাড়িয়ে ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ করেছে।
যাদের জন্য এই সময়সীমা প্রযোজ্য:
বেতনভুক (Salaried) করদাতা, পেনশনভোগী, NRI করদাতা, যাদের অ্যাকাউন্টে অডিটের প্রয়োজন নেই।
অন্যান্য করদাতাদের সময়সীমা:
যেসব ব্যবসায়ী ও পেশাজীবীর অ্যাকাউন্ট অডিট করাতে হয়: তাদের জন্য ট্যাক্স অডিট রিপোর্ট জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ এবং আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ৩১ অক্টোবর, ২০২৫।
আন্তর্জাতিক বা নির্দিষ্ট অভ্যন্তরীণ লেনদেনের (Transfer Pricing Report) ক্ষেত্রে: তাদের জন্য রিটার্ন জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ৩০ নভেম্বর, ২০২৫।
শেষ কথা:
আইটিআর দাখিল করা কেবল আইনি বাধ্যবাধকতাই নয়, এটি করদাতাদের আর্থিক সুরক্ষারও একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। সময়সীমার মধ্যে রিটার্ন জমা দিলে জরিমানা বা সুদের ঝামেলায় পড়তে হয় না। তাই যারা এখনো দাখিল করেননি, তাদের দ্রুতই ই-ফাইলিং পোর্টালে গিয়ে প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। আর যারা রিফান্ডের অপেক্ষায় আছেন, তারা উপরোক্ত চেকগুলো করে নিশ্চিন্ত হতে পারেন যে প্রক্রিয়া চলছে এবং অচিরেই অর্থ তাদের অ্যাকাউন্টে জমা হবে।