আগামী বছরের এপ্রিল মাস থেকে কার্যকর হতে যাচ্ছে ভারতের নতুন আয়কর আইন, যা আয়কর কর্মকর্তাদের জন্য একটি বড় পরিবর্তন নিয়ে আসবে। এই নতুন আইনে, কর্মকর্তাদের দেওয়া হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট ও ইমেইল অ্যাকাউন্টে প্রবেশের ক্ষমতা। এটি আয়কর আইন সংশোধনী বিলের ২৪৭ ধারার অধীনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যা আয়কর কর্মকর্তাদের কম্পিউটার সিস্টেম এবং ভার্চুয়াল ডিজিটাল স্পেসে প্রবেশের অনুমতি দেয়।
বিশেষ ক্ষমতা প্রদান
এই ধারা অনুযায়ী, একজন অনুমোদিত আয়কর কর্মকর্তা কোনো কম্পিউটার সিস্টেম বা ডিজিটাল স্পেসে প্রবেশ করতে পারবেন, যেখানে প্রবেশের জন্য প্রয়োজনীয় অ্যাক্সেস কোড পাওয়া যাচ্ছে না। অর্থাৎ, তাদের কাছে এই ক্ষমতা থাকবে যে, তারা কোড বা পাসওয়ার্ড ছাড়া সেগুলিতে প্রবেশ করতে পারবেন। এমনকি, কোনও ভবন বা স্থানেও প্রবেশের সময় যেখানে দরজা বা লকারের চাবি অনুপলব্ধ, সেক্ষেত্রেও কর্মকর্তারা প্রবেশের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারবেন।
ভার্চুয়াল ডিজিটাল স্পেসের সংজ্ঞা
বিল অনুযায়ী, ‘ভার্চুয়াল ডিজিটাল স্পেস’ বলা হয়েছে এমন একটি ডিজিটাল পরিবেশ, যা কম্পিউটার প্রযুক্তির মাধ্যমে তৈরি এবং ব্যবহারকারীদের মধ্যে যোগাযোগ ও কার্যক্রমের জন্য ব্যবহৃত হয়। এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে ইমেইল সার্ভার, সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট, অনলাইন ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট, ক্লাউড সার্ভার, এবং ডিজিটাল অ্যাপ্লিকেশন প্ল্যাটফর্মসহ আরও অনেক ডিজিটাল সেবা।
বর্তমান আইনে কী রয়েছে?
বর্তমানে, আয়কর আইন ১৯৬১-এর ১৩২ ধারায় আয়কর কর্মকর্তাদের জন্য বিশেষ অনুসন্ধান এবং জব্দ করার ক্ষমতা রয়েছে। তবে বর্তমান আইনে এই ক্ষমতা শুধুমাত্র শারীরিক স্থান, যেমন ভবন, লকার, সেফ ইত্যাদির মধ্যে সীমাবদ্ধ। নতুন আইনে, এই ক্ষমতা ডিজিটাল স্পেস পর্যন্ত বিস্তৃত করা হয়েছে।
নতুন বিলের অবস্থান
গত ১৩ ফেব্রুয়ারি অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন আয়কর আইনের নতুন সংশোধনী বিলটি সংসদে উত্থাপন করেন। পরবর্তীতে, এটি লোকসভা-র একটি নির্বাচিত কমিটির কাছে পাঠানো হয়েছে, যা পরবর্তী সময়ে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য পেশ করা হবে।
এই নতুন আইনের আওতায়, আয়কর কর্মকর্তারা আরও ব্যাপকভাবে নাগরিকদের ডিজিটাল জীবন অনুসন্ধান করতে পারবেন, যা নিয়ে সাধারণ মানুষ এবং বিশেষজ্ঞদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।