বাড়িতে বসেই খুলুন পোস্ট অফিসে Fixed Deposit, জানুন সহজ অনলাইন ও অফলাইন গাইড

ভারতের গ্রাহকরা নিরাপদ এবং সুনিশ্চিত বিনিয়োগের জন্য বরাবরই পোস্ট অফিসের দিকে ঝুঁকেছেন। তারই একটি জনপ্রিয় স্কিম হলো পোস্ট অফিসের ফিক্সড ডিপোজিট (Fixed Deposit), যা সরকার…

RBI Best Fixed Deposit ,Investment, Safe Investment

ভারতের গ্রাহকরা নিরাপদ এবং সুনিশ্চিত বিনিয়োগের জন্য বরাবরই পোস্ট অফিসের দিকে ঝুঁকেছেন। তারই একটি জনপ্রিয় স্কিম হলো পোস্ট অফিসের ফিক্সড ডিপোজিট (Fixed Deposit), যা সরকার সমর্থিত এবং নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য স্থির সুদ দেয়। ২০২৫ সালে পোস্ট অফিসের FD সুদের হার ৬.৯ শতাংশ থেকে ৭.৫ শতাংশ পর্যন্ত নির্ধারিত হয়েছে, যা সাধারণত ব্যাঙ্কের তুলনায় বেশি এবং স্থিতিশীল আয়ের উৎস হিসেবে ধরা হয়।

২০২৫ সালে পোস্ট অফিস FD-এর সুদের হার:
২০২৫ সালের ১ জুলাই থেকে প্রযোজ্য নতুন হারের ভিত্তিতে পোস্ট অফিস FD-এর সুদের হার নিম্নরূপ:
১ বছরের FD: বার্ষিক ৬.৯০ শতাংশ
২ বছরের FD: বার্ষিক ৭.০০ শতাংশ
৩ বছরের FD: বার্ষিক ৭.১০ শতাংশ
৫ বছরের FD (যেটি ট্যাক্স সেভিংস FD হিসেবেও বিবেচিত): বার্ষিক ৭.৫০ শতাংশ
ব্যাঙ্কের মত এখানে বয়স্ক নাগরিকদের জন্য আলাদা কোনো বাড়তি হার নেই; সাধারণ এবং সিনিয়র সিটিজেন উভয়ের জন্য একই হারে সুদ প্রদান করা হয়।

   

কিভাবে পোস্ট অফিস FD অনলাইনে খোলা যায়?
বর্তমানে প্রযুক্তির সুবিধা নিয়ে পোস্ট অফিসও এগিয়ে এসেছে। অনলাইনে FD খুলতে হলে প্রথমে ইন্ডিয়া পোস্টের ই-ব্যাঙ্কিং পোর্টালে (ebanking.indiapost.gov.in) বা পোস্ট অফিসের মোবাইল অ্যাপ ডাউনলোড করে রেজিস্টার করতে হবে।

এরপর লগইন করে ‘Requests’ বা ‘Products & Services’ সেকশনে গিয়ে “Open POFD Account” বা “Fixed Deposit” অপশন বেছে নিতে হবে।
প্রয়োজনীয় তথ্য যেমন জমার পরিমাণ (ন্যূনতম ₹১,০০০), মেয়াদ (১–৫ বছর), নমিনির তথ্য ইত্যাদি পূরণ করতে হবে। এরপর পরিচয় এবং ঠিকানার প্রমাণ হিসেবে আধার কার্ড, প্যান কার্ড, ভোটার আইডি, পাসপোর্ট অথবা বিদ্যুৎ বিলের কপি আপলোড করতে হবে।
এরপর অনলাইনে নেট ব্যাঙ্কিং বা UPI-এর মাধ্যমে টাকা জমা দিতে হবে। প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে অ্যাকাউন্ট নম্বর এবং ডিজিটাল রসিদ পেয়ে যাবেন, যা ভবিষ্যতের জন্য নিরাপদে রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়।

Advertisements

কিভাবে পোস্ট অফিস FD অফলাইনে খোলা যায়?
যারা এখনো প্রথাগত উপায়ে বিনিয়োগ করতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন, তারা নিকটবর্তী পোস্ট অফিস শাখায় গিয়ে FD খুলতে পারেন।
প্রথমে পোস্ট অফিস টাইম ডিপোজিট (TD) ফর্ম সংগ্রহ করতে হবে অথবা অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে ডাউনলোড করা যাবে। ফর্ম পূরণ করে পাসপোর্ট সাইজ ছবি, KYC ডকুমেন্ট (যেমন আধার, প্যান ইত্যাদি) এবং জমার অর্থ নগদে, চেক অথবা ডিমান্ড ড্রাফটের মাধ্যমে জমা দিতে হবে।
সবকিছু সঠিকভাবে সাবমিট করলে অফিস থেকে একটি স্ট্যাম্প দেওয়া রসিদ বা পাসবুকে এন্ট্রি দিয়ে আপনার FD-এর নিশ্চয়তা প্রদান করা হবে।

পোস্ট অফিস FD-এর সুবিধা:
পোস্ট অফিস FD-এর মূল USP হলো সরকারি সুরক্ষা। মূলধন সম্পূর্ণ সুরক্ষিত এবং সুদও নিশ্চিত।
এছাড়া তুলনামূলকভাবে বেশি সুদের হার (সর্বাধিক ৭.৫ শতাংশ) বিনিয়োগকারীদের কাছে এক বড় সুবিধা। ৫ বছরের FD-এর ক্ষেত্রে আয়কর আইন ধারা ৮০সি অনুযায়ী ₹১.৫ লক্ষ পর্যন্ত কর ছাড়ের সুবিধাও পাওয়া যায়।
৬ মাস পর থেকে প্রিম্যাচিওর উইথড্রয়াল বা আগাম টাকা তোলার সুবিধা আছে, যদিও এর জন্য কিছু জরিমানা ধার্য হয়।
নমিনির সুবিধা থাকায় বিনিয়োগের উত্তরাধিকার সহজ হয়। এছাড়া, পোস্ট অফিস FD-তে কোনো ঊর্ধ্বসীমা নেই — অর্থাৎ ₹১,০০০ থেকে শুরু করে যত খুশি টাকা (₹১০০-এর গুণিতকে) বিনিয়োগ করা যায়।

কেন বিনিয়োগ করবেন পোস্ট অফিস FD-তে
বর্তমান অস্থির অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে স্থিতিশীল এবং সুরক্ষিত রিটার্ন চাওয়া বিনিয়োগকারীদের জন্য পোস্ট অফিসের FD অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য। এটি মূলত সেই সমস্ত ব্যক্তির জন্য উপযুক্ত, যারা ঝুঁকি এড়িয়ে দীর্ঘমেয়াদি সঞ্চয় তৈরি করতে চান এবং নিয়মিত আয়ের নিশ্চয়তা খুঁজছেন।
অনলাইন ও অফলাইন দুই মাধ্যমেই সহজ প্রক্রিয়া থাকায় যেকোনো বয়সের মানুষ সহজেই এই বিনিয়োগে অংশগ্রহণ করতে পারেন।
যারা ই-ব্যাঙ্কিং ব্যবহার করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন, তারা ঘরে বসেই সমস্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারবেন। আবার যারা হাতে-কলমে ফর্ম পূরণ ও অফিসে গিয়ে জমা দিতে পছন্দ করেন, তাদের জন্যও সুযোগ উন্মুক্ত।
অতএব, নিজের সঞ্চয়কে সুরক্ষিত রাখতে এবং দীর্ঘমেয়াদে একটি সুনিশ্চিত আয়ের উৎস তৈরি করতে পোস্ট অফিসের FD হতে পারে এক চমৎকার পছন্দ।