HomeBusinessক্রেডিট কার্ড ছাড়াই কীভাবে বাড়াবেন ক্রেডিট স্কোর? জেনে নিন সহজ উপায়

ক্রেডিট কার্ড ছাড়াই কীভাবে বাড়াবেন ক্রেডিট স্কোর? জেনে নিন সহজ উপায়

- Advertisement -

আজকের আর্থিক জগতে ক্রেডিট স্কোর (Credit Score) একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটি ঠিক করে দেয় আপনি ঋণ পাবেন কি না, পাবেন তো কত সুদের হারে। অনেকেই মনে করেন, কেবলমাত্র ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করলেই ক্রেডিট স্কোর গড়া সম্ভব, কিন্তু বাস্তবে এটি একেবারেই ভুল ধারণা। ক্রেডিট কার্ড ছাড়াও আপনি চাইলে শক্তিশালী ক্রেডিট স্কোর তৈরি করতে পারেন, এবং সেটাও একেবারে বৈধ ও কার্যকর পদ্ধতিতে।

ক্রেডিট স্কোর (Credit Score) কীভাবে কাজ করে?

ক্রেডিট স্কোর গঠনের পিছনে পাঁচটি মূল উপাদান কাজ করে। প্রথমত, ঋণ পরিশোধের ইতিহাস—আপনি সময়মতো ইএমআই বা ঋণের কিস্তি পরিশোধ করছেন কি না, সেটি স্কোরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক। দ্বিতীয়ত, ক্রেডিট ব্যবহারের অনুপাত, অর্থাৎ আপনি যতটা ঋণ নিতে পারেন, তার মধ্যে কতটা ব্যবহার করছেন। তৃতীয়ত, ক্রেডিট ইতিহাসের দৈর্ঘ্য—যত পুরনো ও নিয়মিত ব্যবহার করা ঋণ অ্যাকাউন্ট থাকবে, ততই ভালো। চতুর্থত, ঋণের ধরন বা মিশ্রণ—নিরাপদ ও অনিরাপদ ঋণের সঠিক ভারসাম্য আপনার আর্থিক ব্যবস্থাপনায় দক্ষতার প্রমাণ দেয়। পঞ্চমত, নতুন ঋণের আবেদন—অল্প সময়ের মধ্যে বেশি সংখ্যক ঋণ আবেদন করলে তা নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

   

ক্রেডিট কার্ড ছাড়াও স্কোর বাড়ানো সম্ভব

আপনার যদি ক্রেডিট কার্ড না থাকে, তাহলেও কিছু কৌশল অবলম্বন করে আপনি আপনার ক্রেডিট স্কোর গড়ে তুলতে পারেন। প্রথম এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হলো বিদ্যমান ঋণের সময়মতো পরিশোধ। ইএমআই বা অন্যান্য ঋণের কিস্তি ঠিক সময়ে দেওয়া হলে তা আপনার ক্রেডিট প্রোফাইলে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।

এরপর আপনি চাইলে একটি কনজিউমার ডিউরেবল লোন নিতে পারেন, যেমন ফ্রিজ, টিভি বা ল্যাপটপ কেনার জন্য নেওয়া ঋণ। এই ধরনের ঋণ এনবিএফসি (নন-ব্যাংকিং ফাইনান্স কোম্পানি)-গুলি থেকে সহজেই পাওয়া যায় এবং নিয়মিত পরিশোধের মাধ্যমে একটি সুস্থ ঋণ ইতিহাস তৈরি হয়।

আরও একটি ভালো বিকল্প হলো সিকিউর্ড লোন বা নিরাপদ ঋণ, যেমন ফিক্সড ডিপোজিটের ভিত্তিতে নেওয়া ঋণ। এই ধরনের ঋণ সহজেই অনুমোদন হয় এবং সময়মতো পরিশোধ করলে আপনার ক্রেডিট স্কোর উন্নত হয়। এছাড়া আপনি একটি ছোট পার্সোনাল লোন নিতে পারেন, যার ইএমআই সহজে সামলানো যায়। এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হলো ঋণটি সময়মতো এবং ধাপে ধাপে পরিশোধ করা—অর্থাৎ একবারে সব শোধ করে দেওয়ার পরিবর্তে সময় ধরে নিয়ম মেনে শোধ করুন।

আরেকটি কার্যকর কৌশল হলো সহ-আবেদনকারী (co-applicant) হিসেবে পরিবারের অন্য কোনো সদস্যের ঋণে যুক্ত হওয়া। যদি সেই ঋণ নিয়মিত পরিশোধ হয়, তবে আপনার স্কোরেও ইতিবাচক প্রভাব পড়ে। তবে খেয়াল রাখুন, যদি ঋণগ্রহীতা সময়মতো কিস্তি পরিশোধ না করেন, তবে সেটির প্রভাব আপনার স্কোরেও পড়বে।

নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করাও জরুরি

শুধু ঋণ নেওয়া ও শোধ করাই নয়, ক্রেডিট রিপোর্ট পর্যবেক্ষণ করাও জরুরি। প্রতি ৬ থেকে ১২ মাস অন্তর নিজের ক্রেডিট রিপোর্ট যাচাই করুন। অনেক সময় ভুল তথ্য বা পুরনো তথ্য সেখানে থেকে যায়, যা আপনার স্কোর কমিয়ে দিতে পারে। সময়মতো সেই ভুলগুলো সংশোধনের আবেদন করা উচিত, যাতে আপনার স্কোর ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।

ক্রেডিট কার্ড না থাকলেও ক্রেডিট স্কোর তৈরি এবং বজায় রাখা একেবারেই সম্ভব, যদি আপনি সময়মতো ঋণ পরিশোধ করেন, ছোট ঋণ নিয়ে ধাপে ধাপে শোধ করেন এবং নিজের রিপোর্টের ওপর নজর রাখেন। আজকের যুগে ফিনান্সিয়াল ডিসিপ্লিনই আপনার ভবিষ্যতের দরজা খুলে দিতে পারে। আর্থিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সচেতন থাকা এবং প্রতিটি পদক্ষেপ হিসেব করে ফেলা—এই দুই-ই আপনাকে সঠিক পথে রাখবে।
আপনার আর্থিক ভবিষ্যৎ গড়তে আজ থেকেই শুরু করুন এই ছোট ছোট পদক্ষেপ, কারণ সুস্থ ক্রেডিট স্কোর মানেই সুদূরপ্রসারী আর্থিক সুযোগের হাতছানি।

- Advertisement -
Business Desk
Business Desk
Stay informed about the latest business news and updates from Kolkata and West Bengal on Kolkata 24×7
এই সংক্রান্ত আরও খবর
- Advertisment -

Most Popular