আয়কর দফতরের কড়া নোটিস, হিন্দুস্তান ইউনিলিভারের কাছে ১,৯৮৬ কোটি টাকা বকেয়া!

Hindustan Unilever Transfer Pricing Tax Demand

এফএমসিজি খাতের শীর্ষস্থানীয় সংস্থা হিন্দুস্তান ইউনিলিভার লিমিটেড (HUL)-এর বিরুদ্ধে আয়কর দফতর ১,৯৮৬.২৫ কোটি টাকার একটি নোটিশ ও এসেসমেন্ট অর্ডার জারি করেছে। কোম্পানি ৩১ অক্টোবর শেয়ারবাজারে দাখিল করা নথিতে জানিয়েছে, এই দাবি ২০২০-২১ অর্থবর্ষের (মূল্যায়ন বছর ২০২১-২২) জন্য করা হয়েছে।

Advertisements

কর সমন্বয় ও মূল্যায়ন নিয়ে আপত্তি:

আয়কর দফতরের এই নোটিশে মূলত ট্রান্সফার প্রাইসিং অ্যাডজাস্টমেন্ট এবং কর্পোরেট ট্যাক্স ডিসঅ্যালাওয়েন্স, বিশেষত অবচয় (depreciation) সংক্রান্ত দাবির বিষয়ে আপত্তি তোলা হয়েছে। কর কর্তৃপক্ষের মতে, কোম্পানির সম্পর্কিত পক্ষের সঙ্গে লেনদেনের মূল্যায়ন এবং গ্রুপ সংস্থাগুলিকে প্রদত্ত অর্থপ্রদানের যৌক্তিকতা প্রশ্নবিদ্ধ।

   

কোম্পানির প্রতিক্রিয়া: Hindustan Unilever Transfer Pricing Tax Demand

এই বিষয়ে হিন্দুস্তান ইউনিলিভার জানিয়েছে, অর্ডারের ফলে কোম্পানির আর্থিক অবস্থা, কার্যক্রম বা ব্যবসায় কোনও প্রভাব পড়বে না।
কোম্পানির বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “এই অর্ডারের কারণে কোম্পানির আর্থিক বা ব্যবসায়িক কার্যক্রমে কোনও গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব পড়বে না।”
এছাড়া, সংস্থাটি জানিয়েছে যে, তারা নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে আপিলেট অথরিটি বা আপিলকারী কর্তৃপক্ষের কাছে আপিল দায়ের করবে।

দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকের ফলাফল:

অন্যদিকে, চলতি বছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর (Q2 FY25) ত্রৈমাসিকে কোম্পানির আর্থিক ফলাফল তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল ছিল। HUL জানিয়েছে, নেট মুনাফা ৩.৮ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২,৬৯৪ কোটি টাকায়, যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ২,৫৯৫ কোটি টাকা।

Advertisements

এই সময়ে কোম্পানির রাজস্ব বা বিক্রি বেড়েছে ২.১ শতাংশ — ১৫,৭০৩ কোটি টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ১৬,০৩৪ কোটি টাকা। তবে, আন্ডারলাইনিং ভলিউম গ্রোথ ছিল প্রায় স্থিতিশীল, যা HUL-এর মতে, জিএসটি পরিবর্তনের সাময়িক প্রভাব এবং দেশের কিছু অংশে দীর্ঘায়িত বর্ষার কারণে ঘটেছে।

ব্যয় ও মার্জিনের অবস্থা:

সেপ্টেম্বর ত্রৈমাসিকে কোম্পানির মোট ব্যয় বেড়ে হয়েছে ১২,৯৯৯ কোটি টাকা, যা আগের বছরের তুলনায় ৩.৩২ শতাংশ বেশি। মোট আয় দাঁড়িয়েছে ১৬,৩৮৮ কোটি টাকা, যা ১.৫ শতাংশ বৃদ্ধি নির্দেশ করে।
এ সময়ে HUL-এর EBITDA মার্জিন ২৩.২ শতাংশ, যা গত বছরের তুলনায় ৯০ বেসিস পয়েন্ট কম। সংস্থা জানিয়েছে, তারা ব্যবসায়িক বিনিয়োগ বাড়িয়েছে, যার ফলে এই সামান্য পতন দেখা গেছে।

শেষ কথা:

দাভ, সার্ফ এক্সেল ও লাইফবয়-এর মতো জনপ্রিয় ব্র্যান্ডের মালিক HUL-এর ওপর এই কর দাবির প্রভাব আপাতত সীমিত বলেই মনে করছে সংস্থা। কোম্পানি আত্মবিশ্বাসী যে, আইনগত প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে বিষয়টি ইতিবাচকভাবে সমাধান হবে।