কলকাতা, ১৭ অক্টোবর: ধনতেরাস ও দিওয়ালির ঠিক আগে যখন বাজার জুড়ে উৎসবের প্রস্তুতি তুঙ্গে, তখনই স্বর্ণপ্রেমী ক্রেতাদের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে সোনার দাম (Gold Price) । চলতি বছরে সোনার দর রেকর্ড হারে বেড়ে ১২৮,৩৯৫ টাকা প্রতি ১০ গ্রামে পৌঁছেছে। এই মূল্যবৃদ্ধি চলতি বছরের শুরু থেকে প্রায় ৬৭ শতাংশ। এমন উর্ধ্বমুখী দাম সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে, বিশেষ করে মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত শ্রেণির জন্য।
ভারতে সোনাকে শুধু অলঙ্কার হিসেবে নয়, বরং এক ধরনের নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবেও দেখা হয়। ধনতেরাস ও দিওয়ালির সময় সোনা কেনার একটি প্রচলিত রীতি রয়েছে। অনেকেই বিশ্বাস করেন, এই সময় সোনা কেনা শুভ এবং সম্পদের প্রবৃদ্ধি ঘটায়। তবে চলতি বছরে সেই উৎসবের উচ্ছ্বাসে কিছুটা জল ঢেলে দিয়েছে সোনার দামের এই অস্বাভাবিক বৃদ্ধি।
রাজ্যের বিভিন্ন সোনার দোকানে দেখা গিয়েছে, গত বছরের তুলনায় এবারে ক্রেতার সংখ্যা অনেকটাই কম। বিশেষ করে মধ্যবিত্ত ক্রেতারা অনেকে দোকান ঘুরে শুধু খোঁজখবর নিচ্ছেন, কিনছেন না। বিক্রেতারা জানাচ্ছেন, “গত বছর এই সময় প্রচুর চাহিদা ছিল। এবারে সেই তুলনায় বিক্রি অনেক কম।” বিশেষজ্ঞদের মতে, আন্তর্জাতিক বাজারে সোনার দামের ঊর্ধ্বগতি, মুদ্রাস্ফীতি, বিশ্ব রাজনীতির টানাপোড়েন ও ডলারের দাম বৃদ্ধি—এই সমস্ত কারণ মিলে দেশের অভ্যন্তরীণ সোনার দামে প্রভাব ফেলছে। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে দেশীয় উৎপাদনের ঘাটতি এবং আমদানির উপর নির্ভরতা।
সোনার চোরাচালান আটকাতে কেন্দ্রীয় সরকার ইতিমধ্যেই কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। কাস্টমস বিভাগ, ডিআরআই ও অন্যান্য সংস্থা এ বিষয়ে তৎপর। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, শুধুমাত্র নজরদারি বাড়িয়ে সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। এর জন্য প্রয়োজন সোনার আমদানি নীতির পুনর্বিবেচনা ও বাজারে সোনার সহজলভ্যতা নিশ্চিত করা।