এইচডিএফসি আর্গো জেনারেল (HDFC Ergo) ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি ভারতের ‘মিসিং মিডল’ বা মধ্যবিত্ত শ্রেণির জন্য সাশ্রয়ী মূল্যের স্বাস্থ্য বীমা পরিকল্পনা চালু করতে ডিজিটাল পেমেন্ট প্ল্যাটফর্ম ফোনপে-র সঙ্গে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদারিত্ব ঘোষণা করেছে। এই সহযোগিতার মাধ্যমে ভারতের প্রায় ৪০ কোটি মানুষ, যারা সরকারি বা বেসরকারি স্বাস্থ্য বীমার আওতায় নেই।
তাদের জন্য সুলভ এবং ব্যাপক স্বাস্থ্য বীমা সুবিধা নিশ্চিত করার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। এই উদ্যোগটি এইচডিএফসি আর্গোর ডিজিটাল-প্রথম বীমা পরিষেবা এবং ফোনপে-র বিশাল ডিজিটাল নেটওয়ার্কের সমন্বয়ে একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
এইচডিএফসি আর্গো এবং ফোনপে যৌথভাবে ‘সুরক্ষা সংকল্প’ নামে একটি স্বাস্থ্য বীমা পরিকল্পনা চালু করেছে, যার প্রিমিয়াম মাত্র ১২ টাকা প্রতিদিন (বা বছরে প্রায় ৪,৩৮০ টাকা) থেকে শুরু। এই পরিকল্পনায় ৩ লক্ষ টাকা পর্যন্ত কভারেজ এবং অন্যান্য সুবিধা প্রদান করা হয়।
এই বীমা পলিসি প্রাথমিকভাবে ১৮ থেকে ৩০ বছর বয়সী ব্যক্তিদের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে, যাদের মধ্যে অনেকেই প্রথমবার বীমা ক্রেতা। ফোনপে অ্যাপের মাধ্যমে এই পলিসি সহজেই কেনা এবং ইস্যু করা যায়, যা এই বীমাকে আরও সহজলভ্য এবং সুবিধাজনক করে তুলেছে।
এইচডিএফসি আর্গোর রিটেল বিজনেসের প্রেসিডেন্ট পার্থনীল ঘোষ বলেন, “নীতি আয়োগের রিপোর্ট অনুসারে, প্রায় ৪০ কোটি ভারতীয়, যাদের ‘মিসিং মিডল’ বলা হয়, স্বাস্থ্য বীমার আওতায় নেই। আমাদের ‘সুরক্ষা সংকল্প’ পরিকল্পনা এই জনগোষ্ঠীকে ক্যাশলেস স্বাস্থ্য বীমার মাধ্যমে আর্থিক সুরক্ষা প্রদান করবে। ফোনপে-র ডিজিটাল নেটওয়ার্কের সাহায্যে আমরা দূরবর্তী অঞ্চলেও বীমা সুবিধা পৌঁছে দিতে পারব।”
এই পরিকল্পনার মূল বৈশিষ্ট্যগুলির মধ্যে রয়েছে হাসপাতালে ভর্তির জন্য ৩ লক্ষ টাকা পর্যন্ত কভারেজ, ভেক্টর-জনিত রোগের জন্য অতিরিক্ত ১০ দিনের হাসপাতালে ভর্তির ক্ষেত্রে প্রতিদিন ১,৫০০ টাকা পর্যন্ত পেমেন্ট, সার্জিকাল এবং অন্যান্য খরচের জন্য কভারেজের বিকল্প, সীমাহীন টেলি-কনসালটেশন এবং ব্যক্তিগত পরামর্শের জন্য ২,০০০ টাকা পর্যন্ত সুবিধা। এছাড়াও, ‘মিসিং মিডল হসপিটাল নেটওয়ার্ক’-এর মাধ্যমে ক্যাশলেস চিকিৎসার সুবিধা প্রদান করা হয়।
এই উদ্যোগটি প্রাথমিকভাবে হায়দরাবাদ, নাগপুর এবং মাদুরাইতে চালু করা হয়েছে, এবং শীঘ্রই এটি অন্যান্য শহরে প্রসারিত করা হবে। ফোনপে-র বিশাল ব্যবহারকারী বেস এবং ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের সাহায্যে এই বীমা পরিকল্পনা বিশেষ করে গ্রামীণ এবং দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্তরের শহরগুলির মানুষের কাছে পৌঁছানোর লক্ষ্য রাখে।
ফোনপে-র ভাইস প্রেসিডেন্ট (ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেস) হেমন্ত গালা বলেন, “স্বাস্থ্য বীমা কেনার সবচেয়ে বড় বাধা হল সাশ্রয়ীতা। আমরা মাসিক পেমেন্টের মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান করেছি, যা বীমাকে আরও সাশ্রয়ী করে তুলেছে।”
এইচডিএফসি আর্গোর এই উদ্যোগ ভারতের স্বাস্থ্য বীমা খাতে একটি নতুন মাত্রা যোগ করেছে। সংস্থাটি ইতিমধ্যেই তাদের ‘অপটিমা সিকিউর’ এবং ‘অপটিমা লাইট’ পণ্যের মাধ্যমে সাশ্রয়ী বীমা সুবিধা প্রদানের জন্য পরিচিত। ফোনপে-র সঙ্গে এই অংশীদারিত্ব তাদের লক্ষ্যকে আরও এগিয়ে নিয়ে গেছে, বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে বীমার প্রবেশকে ত্বরান্বিত করতে।
নীতি আয়োগের তথ্য অনুসারে, ভারতের প্রায় ৩০% মানুষ স্বাস্থ্য বীমার আওতায় নেই, এবং এই ‘মিসিং মিডল’ গোষ্ঠীর মধ্যে অনেকেই স্বাস্থ্য সম্পর্কিত খরচের কারণে দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে যাওয়ার ঝুঁকিতে থাকেন।
সীমান্তে ভুয়ো আধার কার্ড চক্রের হদিশ, গ্রেফতার ৬
এই পরিকল্পনা তরুণ প্রজন্ম, বিশেষ করে গিগ ইকোনমিতে কাজ করা এবং অনানুষ্ঠানিক খাতের কর্মীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। ফোনপে-র ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে বীমা ক্রয় এবং ক্লেম প্রক্রিয়া সহজ করা হয়েছে, যা ব্যবহারকারীদের জন্য আরও সুবিধাজনক। এইচডিএফসি আর্গো এবং ফোনপে-র এই সহযোগিতা ভারতের স্বাস্থ্য বীমা খাতে একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।