HomeBusinessAutomobile Newsগাড়ি কিনতে হলে আজই শোরুমে যান, বিপুল কর চাপাচ্ছে মোদী সরকার

গাড়ি কিনতে হলে আজই শোরুমে যান, বিপুল কর চাপাচ্ছে মোদী সরকার

- Advertisement -

কেন্দ্রের নয়া GST সংস্কার নিয়ে সারা দেশে আলোড়ন শুরু হয়েছে। অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ একগুচ্ছ ঘোষণা করে জানিয়েছেন, আগামী ২২ সেপ্টেম্বর থেকে বেশ কিছু পণ্য ও পরিষেবার উপর ৪০ শতাংশ হারে কর চাপানো হবে। এর মধ্যে রয়েছে দৈনন্দিন ভোগ্যপণ্য থেকে শুরু করে বিলাসবহুল সামগ্রী পর্যন্ত। বিশেষত অটোমোবাইল খাতের ক্ষেত্রে এই সিদ্ধান্ত বড়সড় প্রভাব ফেলতে চলেছে। ফলে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যারা গাড়ি কেনার পরিকল্পনা করছেন, তাদের উচিত অবিলম্বে শোরুমে গিয়ে বুকিং বা ক্রয় সম্পন্ন করা। কারণ, ২২ সেপ্টেম্বরের পর দাম বাড়বে বিপুল হারে।

কোন কোন ক্ষেত্রে ৪০% কর?
অর্থমন্ত্রকের ঘোষণায় জানানো হয়েছে, নতুন কর কাঠামোয় বেশ কিছু পণ্য ও পরিষেবা রাখা হয়েছে উচ্চ করের আওতায়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য—

   
  • পান মশলা, সিগারেট, গুটখা – ৪০%
  • জর্দা ও বিড়ি – ৪০%
  • ক্যাফিনযুক্ত ড্রিঙ্কস – ৪০%
  • ১৩৫ সিসি-র উপরে মোটরসাইকেল – ৪০%
  • ৩৫০ সিসি-র উপরে বাইক – ৪০%
  • ব্যক্তিগত হেলিকপ্টার ও প্রাইভেট প্লেন – ৪০%
  • লটারির টিকিট – ৪০%

সবচেয়ে বড় ধাক্কা গাড়ি ক্রেতাদের ক্ষেত্রে। কারণ, ঘোষণা অনুযায়ী যে গাড়িগুলি ইতিমধ্যেই শোরুমে রয়েছে এবং ২২ সেপ্টেম্বরের পর বিক্রি হবে, তাদের উপরও নতুন কর হার প্রযোজ্য হবে। অর্থাৎ শোরুমে স্টক থাকা গাড়িগুলিও কর বাড়ার কারণে নতুন দামে বিক্রি হবে।

গাড়ি কেনার বাজারে চাঞ্চল্য
অটোমোবাইল ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, ঘোষণার পর থেকে শোরুমে ক্রেতাদের ভিড় বাড়ছে। অনেকেই অপেক্ষা না করে এখনই গাড়ি কিনে নিচ্ছেন, কারণ আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই একই গাড়ির দাম বেড়ে যাবে লক্ষাধিক টাকা। বিশেষত ১৩৫ সিসি-র উপরের মোটরসাইকেল ও ৩৫০ সিসি-র বাইকের বাজারে এর প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়বে। বাইকপ্রেমীরা বলছেন, যেসব মডেলের জন্য দীর্ঘদিন অপেক্ষা করেছেন, সেগুলি এখন কিনে নেওয়াই যুক্তিযুক্ত।

একইভাবে চারচাকার গাড়ির ক্ষেত্রেও বাড়তি চাপ পড়বে। যদিও সরকার সরাসরি সব ধরনের গাড়ির উপর নতুন করের কথা বলেনি, তবে বিলাসবহুল সেগমেন্টে দাম বাড়া অবশ্যম্ভাবী।

সরকারের যুক্তি
কেন্দ্রের দাবি, GST সংস্কারের মাধ্যমে একদিকে যেমন রাজস্ব বাড়ানো যাবে, অন্যদিকে ক্ষতিকর পণ্যগুলির ব্যবহার কমানো সম্ভব হবে। অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ বলেছেন, “দেশের অর্থনৈতিক ভারসাম্য বজায় রাখতে এবং স্বাস্থ্য ও পরিবেশ রক্ষার স্বার্থে কিছু পণ্যের উপর উচ্চ হারে কর আরোপ করা জরুরি হয়ে পড়েছে।”

সরকার মনে করছে, তামাকজাত পণ্য, পান মশলা, ক্যাফিনযুক্ত ড্রিঙ্ক ইত্যাদির ব্যবহার স্বাস্থ্যহানিকর। তাই উচ্চ কর আরোপ করে এগুলির চাহিদা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। পাশাপাশি বিলাসবহুল যানবাহন বা প্রাইভেট প্লেনের মতো জিনিসের উপর কর চাপিয়ে সরকার রাজস্ব ঘাটতি মেটাতে পারবে।

বিরোধী শিবিরের সমালোচনা
অন্যদিকে বিরোধীরা বলছেন, এই নীতি সাধারণ মানুষের উপর বাড়তি বোঝা চাপিয়ে দিচ্ছে। ইতিমধ্যেই মুদ্রাস্ফীতির জেরে দৈনন্দিন খরচ বেড়েছে। তার উপর গাড়ি কেনার বাজারে এভাবে কর চাপানো হলে মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তদের স্বপ্ন ভেঙে যাবে। কংগ্রেস নেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে অভিযোগ তুলেছেন, “মোদী সরকার শুধুমাত্র রাজস্ব বাড়ানোর জন্য জনগণের কাঁধে কর চাপাচ্ছে। এতে একদিকে ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হবে, অন্যদিকে সাধারণ মানুষ গাড়ি বা বাইক কেনার ইচ্ছা থেকে সরে আসবে।”

ব্যবসায়ীদের আশঙ্কা
অটোমোবাইল ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা আশঙ্কা করছেন, কর বাড়লে বিক্রি কমে যাবে। কারণ, দাম বৃদ্ধির ফলে অনেকে নতুন গাড়ি কেনার পরিবর্তে পুরোনো গাড়ির দিকে ঝুঁকবেন। এতে ব্যবসায়িক ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। একইসঙ্গে উৎপাদক সংস্থাগুলিও নতুন পরিস্থিতির জন্য কৌশল সাজাচ্ছে।

২২ সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর হতে চলা নতুন কর কাঠামো নিঃসন্দেহে বাজারে আলোড়ন ফেলবে। গাড়ি ও বাইকপ্রেমীদের জন্য এখনই সেরা সময় সিদ্ধান্ত নেওয়ার। কারণ, আগামী কয়েক সপ্তাহ পর একই মডেলের দাম আকাশছোঁয়া হতে পারে।

- Advertisement -
এই সংক্রান্ত আরও খবর
- Advertisment -

Most Popular