মুগ, বাদাম ক্রয়ে কেন্দ্রের অনুমোদন, চাষিদের আয় সুরক্ষিত

MSP Procurement: কৃষকবান্ধব নীতি বজায় রেখে কেন্দ্রীয় সরকার বৃহস্পতিবার (১২ জুন) মুগ ও বাদাম সহ একাধিক ডালের সরকারি ক্রয় অনুমোদন দিয়েছে। পিএসএস (Price Support Scheme)-এর…

Government Greenlights MSP Procurement of Moong, Groundnut for 2025-26

MSP Procurement: কৃষকবান্ধব নীতি বজায় রেখে কেন্দ্রীয় সরকার বৃহস্পতিবার (১২ জুন) মুগ ও বাদাম সহ একাধিক ডালের সরকারি ক্রয় অনুমোদন দিয়েছে। পিএসএস (Price Support Scheme)-এর আওতায় হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ ও গুজরাটে মোট ৫৪,১৬৬ মেট্রিক টন (এমটি) মুগ ক্রয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ২০২৫-২৬ গ্রীষ্মকালীন ফসল মরসুমে। পাশাপাশি, উত্তরপ্রদেশে ৫০,৭৫০ এমটি বাদাম কেনার অনুমোদনও দিয়েছে কেন্দ্র।

পালস উৎপাদনে স্বনির্ভরতার লক্ষ্যে কেন্দ্রের বড় ঘোষণা
কৃষি ও কৃষক কল্যাণ মন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান জানিয়েছেন, ভারতের পালস উৎপাদনে স্বনির্ভরতা আনার লক্ষ্যেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তুর (অরহর), উড়দ ও মসুরের ক্ষেত্রেও Price Support Scheme-এর আওতায় রাজ্যের মোট উৎপাদনের ১০০ শতাংশ পর্যন্ত ক্রয়ের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষের জন্য।

   

এই নীতির ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে ২০২৫ সালের কেন্দ্রীয় বাজেটে ঘোষণা করা হয়েছে যে, আগামী চার বছর অর্থাৎ ২০২৮-২৯ পর্যন্ত এই প্রকল্প চালু থাকবে। জাতীয় কৃষি সমবায় সংস্থা NAFED এবং NCCF এর মাধ্যমে এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হবে। লক্ষ্য—দেশীয় পালস উৎপাদনে আত্মনির্ভরতা।

অন্ধ্রপ্রদেশের চাষিদের জন্য বিশেষ সিদ্ধান্ত
এছাড়াও, অন্ধ্রপ্রদেশের কৃষকদের স্বার্থে কেন্দ্র সরকার রেড গ্রাম (তুর) ক্রয়ের সময়সীমা ১৫ দিন বাড়িয়ে ২৬ জুন পর্যন্ত করেছে। মন্ত্রী চৌহান বলেন, “চাষিরা যাতে তাদের উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য দাম পান, সেই লক্ষ্যেই সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে।”

PM-AASHA স্কিম: কৃষকদের আয় সুরক্ষায় বহুমুখী উদ্যোগ
সরকারের এই প্রকল্পগুলি ‘প্রধানমন্ত্রী অন্নদাতা আয় সুরক্ষা অভিযান’ (PM-AASHA)-এর অধীনে বাস্তবায়িত হচ্ছে। এই উদ্যোগের অন্তর্ভুক্ত:

  • PSS (Price Support Scheme): MSP-এর নিচে বাজারমূল্য নামলে ফসল সরকারিভাবে কেনা হয়।
  • PDPS (Price Deficiency Payment Scheme): কৃষকেরা MSP-এর চেয়ে কম দামে বিক্রি করলে সেই পার্থক্য সরকার পরিশোধ করে।
  • MIS (Market Intervention Scheme): বাজারে অস্থিরতা দেখা দিলে হস্তক্ষেপ করে দাম স্থিতিশীল রাখা হয়।
  • PSF (Price Stabilisation Fund): বাজারে দাম পতনের সময় কৃষককে সাহায্য করতে তহবিল।

এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য হলো কৃষকদের ফসলের জন্য একটি নিশ্চিত এবং লাভজনক মূল্য নিশ্চিত করা, যাতে তারা আর্থিক অনিশ্চয়তা থেকে রক্ষা পান।

Advertisements

পালস ও তেলবীজ উৎপাদনে উৎসাহ এবং আমদানির উপর নির্ভরতা হ্রাসের কৌশল:
ভারত এখনও বহু পরিমাণে ডাল আমদানি করে। সেই নির্ভরতাকে ধীরে ধীরে কমিয়ে আনতে এবং দেশীয় উৎপাদন বাড়াতে এই ধরনের ক্রয় নীতির বাস্তবায়ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কৃষকদের উৎসাহিত করতে এবং বাজারে ন্যায্য দাম নিশ্চিত করতেই সরকারের এই পদক্ষেপ।

চাষিদের কী লাভ হবে?
এই সিদ্ধান্তের ফলে মুগ, তুর, উড়দ, মসুর এবং বাদামের দাম যদি এমএসপি-র (ন্যূনতম সহায়ক মূল্য) নিচে নামে, তাহলেও চাষিরা সরকারের কাছ থেকে ন্যায্য দাম পাবেন। এতে একদিকে যেমন কৃষকদের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে, অন্যদিকে উৎপাদনও বাড়বে।

NAFED ও NCCF-এর ভূমিকা:
এই দুটি কেন্দ্রীয় সংস্থা—NAFED (National Agricultural Cooperative Marketing Federation of India) এবং NCCF (National Cooperative Consumers’ Federation)—পালস ও তেলবীজ ক্রয়ে মূল ভূমিকা নেবে। এই সংস্থাগুলি সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে পণ্য ক্রয় করে সেগুলি প্রক্রিয়াজাত ও বাজারজাত করবে।

সরকারের এই পদক্ষেপ শুধু কৃষকদের জন্যই নয়, দেশের খাদ্য নিরাপত্তার ক্ষেত্রেও এক বড় সিদ্ধান্ত। দেশের পালস উৎপাদনে স্বনির্ভর হওয়া মানে ভবিষ্যতে আমদানির উপর নির্ভরতা কমে আসবে, যা অর্থনৈতিকভাবেও লাভজনক।

এখন দেখার, এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকার, এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলি কতটা সমন্বয় রেখে কাজ করতে পারে। তবে নিঃসন্দেহে বলা যায়, কৃষকদের আয় বৃদ্ধির দিকে এটি এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।