ভারতের ডিজিটাল বিপ্লব, বিশাখাপত্তনমে দেশের প্রথম মেগা এআই হাব গড়ছে গুগল ও এয়ারটেল

Google Airtel AI Hub India

ভারতের ডিজিটাল ভবিষ্যৎ গঠনে এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ হিসেবে গুগল ও ভারতী এয়ারটেল মিলে অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তনমে (ভাইজ্যাক) দেশের প্রথম মেগা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (AI) হাব ও ডেটা সেন্টার স্থাপনের ঘোষণা দিয়েছে। ভারতী এয়ারটেলের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ২০২৬ থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে প্রায় ১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগে এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হবে। এটি ভারতের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় এআই ও ডেটা অবকাঠামো প্রকল্প হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

গিগাওয়াট-স্কেল ডেটা সেন্টার ও ক্লিন এনার্জি সিস্টেম:

এই অত্যাধুনিক AI হাবে গিগাওয়াট-স্কেলের ডেটা সেন্টার অপারেশন, সাবসি নেটওয়ার্ক অবকাঠামো এবং ক্লিন এনার্জি সিস্টেম একত্রিত করা হবে, যাতে বৃহৎ পরিসরে এআই ও ডেটা প্রসেসিং সম্ভব হয়। প্রকল্পের অংশীদার হিসেবে থাকবে Airtel ও AdaniConneX সহ বিভিন্ন ইকোসিস্টেম পার্টনার।

আন্তর্জাতিক সংযোগের জন্য কেবল ল্যান্ডিং স্টেশন: Google Airtel AI Hub India

বিশাখাপত্তনমে একটি উদ্দেশ্যনির্ভর ডেটা সেন্টারের পাশাপাশি গুগলের নতুন আন্তর্জাতিক সাবসি কেবলের জন্য অত্যাধুনিক কেবল ল্যান্ডিং স্টেশন (Cable Landing Station – CLS) গড়ে তোলা হবে। এই কেবল নেটওয়ার্ক ভারতের সঙ্গে গুগলের বৈশ্বিক স্থল ও জলতলের ডেটা নেটওয়ার্ককে আরও শক্তিশালীভাবে সংযুক্ত করবে, যা দেশের আন্তর্জাতিক সংযোগ ক্ষমতা বহুগুণে বাড়াবে।

Advertisements

উচ্চ গতির ফাইবার নেটওয়ার্কে ডিজিটাল রূপান্তর:

প্রকল্পের অংশ হিসেবে এয়ারটেল intra-city ও inter-city উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ফাইবার নেটওয়ার্ক তৈরি করবে। এই নেটওয়ার্ক ডেটা ট্রান্সফারে কম লেটেন্সি ও উচ্চ গতি নিশ্চিত করবে, ফলে গুগল ব্যবহারকারী ও গ্রাহকদের জন্য আরও দ্রুত ও নির্ভরযোগ্য অভিজ্ঞতা সম্ভব হবে। এটি ভারতের ডিজিটাল ব্যাকবোনকে আরও দৃঢ় করবে এবং দেশের প্রান্তিক অঞ্চল পর্যন্ত এআই প্রযুক্তির সুবিধা পৌঁছে দেবে।

ভারতের এআই যুগে নেতৃত্বের পথে বড় পদক্ষেপ:

এই পার্টনারশিপ ভারতের ডেটা অবকাঠামোকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে এবং বিভিন্ন শিল্পখাতে এআই ব্যবহারের সুযোগ বাড়াবে। ব্যবসা-বাণিজ্য, উদ্ভাবন ও অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধিতে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।

ভবিষ্যতের দিকনির্দেশ:

ভারতী এয়ারটেলের ভাইস চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর গোপাল ভিত্তল বলেন, “বিশ্বমানের এআই অবকাঠামো ও ভারতের অসাধারণ প্রতিভাকে একত্র করে আমরা ভবিষ্যতের জন্য নতুন ভিত্তি তৈরি করছি। ভিজাগ এখন বিশ্ব এআই মানচিত্রে নতুন কেন্দ্র হিসেবে উঠে আসছে।”

গুগল ক্লাউডের সিইও থমাস কুরিয়ান বলেন, “ভারতের এআই মিশনের চাহিদা পূরণে অত্যাধুনিক অবকাঠামো ও সর্বব্যাপী কানেক্টিভিটি দরকার। এয়ারটেলের সঙ্গে কাজ করে আমরা পরবর্তী প্রজন্মের এআই পরিষেবা দিতে সক্ষম হব এবং ভারতের অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করব।”

শেষ কথা:

এই প্রকল্প সফল হলে ভারতের ডিজিটাল ইকোসিস্টেমে এক নতুন যুগের সূচনা হবে, যা দেশের প্রযুক্তি, ব্যবসা ও এআই উদ্ভাবনে বৈশ্বিক নেতৃত্বের পথ প্রশস্ত করবে।

Advertisements