কলকাতা, ৮ অক্টোবর ২০২৫: ভারতের ডিজিটাল অর্থনীতির ইতিহাসে নতুন অধ্যায় শুরু হতে চলেছে। বিশ্বের শীর্ষ প্রযুক্তি কোম্পানি গুগল ঘোষণা করেছে যে তারা ভারতের আন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তনমে প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলার (₹৮৮,৭৩০ কোটি টাকা) বিনিয়োগ করবে। এই অর্থে তৈরি হবে এশিয়ার বৃহত্তম ডেটা সেন্টার ক্লাস্টার, যা ২০২৮ সালের জুলাই মাসে চালু হওয়ার কথা।
🌐 গুগলের বৃহত্তম ভারতীয় প্রকল্প
এই প্রকল্পটি গুগলের সহযোগী প্রতিষ্ঠান রেইডেন ইনফোটেক ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেড–এর মাধ্যমে বাস্তবায়িত হবে। বিশাখাপত্তনমের আড়াবিবরম, তারুবড়া ও রাম্বিলি এলাকায় মোট ৪৮০ একর জমি জুড়ে তৈরি হবে এই বিশাল ক্যাম্পাস।
প্রকল্পে থাকবে ১ গিগাওয়াট ক্ষমতার ডেটা সেন্টার ক্লাস্টার।
তিনটি আলাদা ক্যাম্পাস ও সাবমেরিন কেবল নেটওয়ার্ক যুক্ত থাকবে।
ল্যান্ডিং স্টেশনের মাধ্যমে ভারত আন্তর্জাতিক ডেটা প্রবাহে নতুন নেতৃত্ব নেবে।
এর ফলে ভারতীয় এআই ও ক্লাউড কম্পিউটিং খাতে একটি বড় পরিবর্তন আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।
🤝 কেন্দ্র ও রাজ্যের সমর্থন
আন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী এন. চন্দ্রবাবু নায়ডু দীর্ঘদিন ধরেই রাজ্যকে আইটি হাবে পরিণত করার উদ্যোগ নিচ্ছেন। তাঁর নীতিগত সমর্থন এবং কেন্দ্র সরকারের সহযোগিতায় প্রকল্পটি দ্রুত গতি পেয়েছে। আগামী ১৪ অক্টোবর দিল্লিতে আনুষ্ঠানিকভাবে চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে।
এটি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ডিজিটাল ইন্ডিয়া মিশনের এক বিশাল সাফল্য হিসেবে দেখা হচ্ছে।
👷♂️ কর্মসংস্থানের নতুন সুযোগ
বিশাখাপত্তনম এখন পর্যন্ত মূলত বন্দর ও শিল্পকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত ছিল। কিন্তু এই প্রকল্প চালু হলে অঞ্চলটি একটি আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি কেন্দ্রে পরিণত হবে।
হাজার হাজার যুবক-যুবতীর জন্য নতুন চাকরির সুযোগ সৃষ্টি হবে।
স্থানীয় ব্যবসায়ও এই ডেটা সেন্টারের মাধ্যমে নতুন বাজার ও চাহিদা পাবে।
এটি শুধুমাত্র শহর নয়, পুরো আন্ধ্রপ্রদেশের অর্থনীতিকে বদলে দিতে পারে।
🌱 পরিবেশ নিয়ে প্রশ্ন
ডেটা সেন্টারগুলো বিশ্বজুড়ে উচ্চ জলব্যবহার ও বিদ্যুৎ খরচের জন্য সমালোচিত। তাই পরিবেশবাদীরা ইতিমধ্যেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করা যায়, তবে এই প্রকল্প পরিবেশগত ঝুঁকি অনেকটাই কমাতে সক্ষম হবে।
🚨 BIG! Google to invest a whopping $10 BILLION in a Data Center Cluster in Visakhapatnam, Andhra Pradesh. (ET)
— Trump’s meltdown loading… first iPhones, now Google data hubs 🔥 pic.twitter.com/X01fpIatfj
— Megh Updates 🚨™ (@MeghUpdates) October 8, 2025
📢 সামাজিক মাধ্যম ও রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া
গুগলের এই সিদ্ধান্ত সামাজিক মাধ্যমে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে।
কেউ কেউ একে মোদি সরকারের ডিজিটাল ইন্ডিয়া নীতির সাফল্য বলছেন।
আবার কেউ আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতিক্রিয়া নিয়ে কৌতুক করছেন। আইফোন উৎপাদনে ভারতের ভূমিকার বিরোধিতা করা ট্রাম্প এবার গুগলের বিনিয়োগ নিয়ে কী বলেন, তা দেখার অপেক্ষা।
🔮 ভবিষ্যতের সম্ভাবনা
এই প্রকল্প সফলভাবে বাস্তবায়িত হলে—
ভারত এআই ও ক্লাউড প্রযুক্তির বৈশ্বিক কেন্দ্র হয়ে উঠতে পারে।
দেশের প্রযুক্তি ক্ষেত্রে স্বনির্ভরতা ও বিশ্ববাজারে গুরুত্ব আরও বাড়বে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সঠিক নীতি, প্রযুক্তিগত পরিকাঠামো এবং পরিবেশগত দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করা গেলে, এটি হবে ভারতের জন্য এক “ডিজিটাল বিপ্লবের টার্নিং পয়েন্ট”।