সপ্তাহান্তে কলকাতার বাজারে সোনার দাম (Gold Silver Price) কিছুটা কমেছে। ২৪ ক্যারেট সোনার দাম ১০ গ্রাম ₹৮৬,৫০০ হয়েছে। যা গতকালের তুলনায় ₹১০ কম। একইভাবে, ২২ ক্যারেট সোনার দামও ₹১০ কমে ₹৭৯,২৯০ হয়েছে। এই পরিবর্তনটি বাজারে সামান্য হলেও লক্ষণীয়। তবে, এই পতনটি ছোট হলেও, কিছু ক্ষেত্রে সোনার বাজারে বিরাট পরিবর্তন এনে দিতে পারে।
সোনার দাম (Gold Silver Price) যখন কমে, তখন সাধারণত গ্রাহকরা সোনার প্রতি আকৃষ্ট হন। বিশেষত যারা সঞ্চয় বা বিনিয়োগের জন্য সোনা কিনতে চান, তারা এরকম সময়ে সুবিধা গ্রহণ করতে পারেন। সোনার দাম কমলেও, তা কেবল সাময়িক হতে পারে, কারণ সোনা এমন একটি মূল্যবান ধাতু যা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির সঙ্গে জড়িত থাকে। বিশেষত, আন্তর্জাতিক বাজারে সোনার মূল্য ওঠানামা করলেও, তার প্রভাব দেশীয় বাজারে পড়ে।
কলকাতা ছাড়াও, মুম্বাই, চেন্নাই, হায়দরাবাদ, দিল্লি, এবং অন্যান্য শহরের বাজারেও সোনার দাম কিছুটা পরিবর্তিত হয়েছে। মুম্বাইয়ের বাজারে ২৪ ক্যারেট সোনার দাম কলকাতা, চেন্নাই, হায়দরাবাদসহ বিভিন্ন শহরের সাথে মিল রেখে ₹৮৬,৫০০ হয়েছে। দিল্লিতে ২৪ ক্যারেট সোনার দাম ₹৮৬,৬৫০। এর মানে হলো, ভারতে বিভিন্ন বড় শহরের মধ্যে সোনার দাম প্রায় সমান। তবে, ২২ ক্যারেট সোনার দাম কিছুটা পার্থক্য রয়েছে, যেমন দিল্লিতে ২২ ক্যারেট সোনার দাম ₹৭৯,৪৪০। যেখানে কলকাতা, মুম্বাই, চেন্নাই, হায়দরাবাদ এবং অন্যান্য শহরে দাম ₹৭৯,২৯০।
রূপোর দামও কমেছে ₹১০০, এবং এক কেজি রূপো বিক্রি হচ্ছে ₹৯৯,৪০০। এই পতন সোনার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ঘটেছে। রূপোর দাম সোনার সঙ্গে কিছুটা সম্পর্কিত হলেও, তা সোনার মতো তীক্ষ্ণভাবে ওঠানামা করে না। রূপোর দাম কমলে, সাধারণত সোনার দাম কিছুটা বাড়তে পারে বা উল্টোও হতে পারে।
যদিও দেশীয় বাজারে সোনার দাম কিছুটা কমেছে, আন্তর্জাতিক বাজারে সোনার দাম কিছুটা বেড়েছে। বিশেষত, গত সপ্তাহে ইউএস প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ট্যারিফের কারণে সোনার দাম উচ্চমাত্রায় পৌঁছেছিল। ট্রাম্পের ট্যারিফ পলিসি কানাডা, চীন এবং মেক্সিকোর উপর চাপ তৈরি করতে পারে, যা আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্যস্ফীতির আশঙ্কা তৈরি করে। এই ধরনের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্থিরতা সোনার দামকে প্রভাবিত করতে পারে, কারণ সোনা এক ধরনের সুরক্ষা হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
ইউএস বাজারে সোনার দাম $২,৮১৬.৬৪ প্রতি আউন্সে পৌঁছেছিল, যা একটি নতুন রেকর্ড। গত সেশনে এটি $২,৮৩০.৪৯ ছিল। এর পাশাপাশি, সিলভার বা রূপার দামও কিছুটা কমেছে, $৩১.৫২ প্রতি আউন্সে। তবে, প্লাটিনাম এবং পালাডিয়ামের দাম কিছুটা বেড়েছে, যা বিশেষত শিল্পের চাহিদা থেকে প্রভাবিত হতে পারে।
এদিকে, দেশের বাজারে সোনার দাম কিছুটা কমেছে, কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারের ওঠানামার কারণে তা পরিবর্তিত হতে পারে। একদিকে যেমন রাজনৈতিক অস্থিরতা সোনার দাম বাড়াতে পারে, অন্যদিকে অন্যান্য ধাতুর দামও বাজারের ট্রেন্ডকে প্রভাবিত করে। তাই, সোনা এবং রূপা কেনার আগে বাজারের সামগ্রিক পরিস্থিতি লক্ষ্য রাখা জরুরি।
সোনার দাম কমলে সাধারণত সঞ্চয়কারীরা তাদের বিনিয়োগ বৃদ্ধি করতে আগ্রহী হন। এর ফলে, সোনার বাজারে চাহিদা বাড়ে এবং এটি পরবর্তীতে দাম বাড়াতে পারে। সুতরাং, বর্তমান বাজার পরিস্থিতি সম্পর্কে সচেতন থাকা এবং প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। সোনার দাম কখনও কখনও কমে যায়, আবার কখনও তা বৃদ্ধি পায়, এবং সুতরাং এটি একটি সময়সীমা অনুযায়ী চলে।
পরিশেষে, সোনার দাম ওঠানামা একটি স্বাভাবিক প্রবণতা। যা সামগ্রিক অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতির উপর নির্ভরশীল। সোনার মূল্য সর্বদা স্বর্ণকার বা ব্যবসায়ীদের জন্য আগ্রহের বিষয় হলেও, সাধারণ মানুষও তাদের সঞ্চয় বা বিনিয়োগের জন্য সোনার দামের ওঠানামা পর্যবেক্ষণ করে।