মঙ্গলবার সোনার ফিউচার্স মূল্য (Gold Futures Price) প্রতি ১০ গ্রামে ৬৯৫ টাকা বেড়ে ৮৭,৬২৩ টাকায় পৌঁছেছে। এই বৃদ্ধির পিছনে প্রধান কারণ হলো স্পট চাহিদার দৃঢ়তার উপর ভিত্তি করে বিনিয়োগকারীদের নতুন পজিশন তৈরি। মাল্টি কমোডিটি এক্সচেঞ্জে (MCX) জুন মাসের ডেলিভারির জন্য সোনার চুক্তি ৬৯৫ টাকা বা ০.৮ শতাংশ বেড়ে ৮৭,৬২৩ টাকায় লেনদেন হয়েছে। এই সময়ে ব্যবসায়িক টার্নওভার ছিল ১৪,৯৬৬ লট।
বিশ্লেষকদের মতে, অংশগ্রহণকারীদের দ্বারা নতুন পজিশন তৈরির ফলে সোনার দামে এই উত্থান ঘটেছে। আন্তর্জাতিক বাজারে নিউইয়র্কে সোনার ফিউচার্স মূল্য ০.৬৭ শতাংশ বেড়ে প্রতি আউন্স ৩,০০৩.৪১ মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে।
LKP সিকিউরিটিজের ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং কমোডিটি ও মুদ্রা গবেষণা বিশ্লেষক জতীন ত্রিবেদী জানিয়েছেন, বিনিয়োগকারীদের মধ্যে সতর্কতার মনোভাব বজায় রয়েছে। তারা যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী পদক্ষেপ সম্পর্কে আরও স্পষ্টতার অপেক্ষায় রয়েছেন, বিশেষ করে ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য উত্তেজনার মধ্যে। তিনি বলেন, “আসন্ন মার্কিন CPI (কনজিউমার প্রাইস ইনডেক্স) তথ্য সুদের হার কমানোর প্রত্যাশাকে গঠন করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে, যা বিশ্বব্যাপী সোনার দিকনির্দেশনাকে প্রভাবিত করতে পারে।
দেশীয়ভাবে, এই সপ্তাহের শেষে অনুষ্ঠিতব্য রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার (RBI) নীতি সভার দিকে সবার নজর থাকবে। রুপির অস্থিরতা MCX সোনার জন্য আরেকটি অনিশ্চয়তার স্তর যোগ করতে পারে। এই পটভূমিতে, সোনার মূল্য বিশ্বব্যাপী সংকেত এবং মুদ্রার গতিবিধির প্রতি অত্যন্ত সংবেদনশীল থাকবে। স্বল্পমেয়াদে এর ট্রেডিং রেঞ্জ সম্ভবত ৮৭,০০০ টাকা থেকে ৯০,০০০ টাকার মধ্যে থাকবে।”
সোনার দামে এই উত্থানের পিছনে দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক উভয় বাজারের গতিশীলতা কাজ করছে। ভারতের বাজারে স্পট চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় বিনিয়োগকারীরা ফিউচার্স ট্রেডিংয়ে নতুন পজিশন তৈরি করছেন। এছাড়াও, বিশ্ববাজারে সোনার দাম বৃদ্ধি এই প্রবণতাকে আরও শক্তিশালী করেছে। সোনা সবসময়ই বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে, বিশেষ করে অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা এবং মুদ্রার অস্থিরতার সময়ে।
বর্তমানে, বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এবং যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য নীতি সোনার দামের উপর গভীর প্রভাব ফেলছে। মার্কিন ডলারের মূল্যবৃদ্ধি এবং সুদের হার সম্পর্কিত প্রত্যাশা সোনার বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি করছে। এদিকে, ভারতীয় রুপির মূল্যের ওঠানামাও MCX-এ সোনার দামকে প্রভাবিত করছে। RBI-র আসন্ন নীতি সভায় মুদ্রানীতি সংক্রান্ত কোনো সিদ্ধান্ত সোনার দামের গতিপথ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সোনার দাম আগামী দিনগুলোতে আরও ওঠানামা করতে পারে। তবে, স্বল্পমেয়াদে এটি ৮৭,০০০ থেকে ৯০,০০০ টাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে। বিনিয়োগকারীদের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়, কারণ বাজারের পরিস্থিতি এবং নীতিগত সিদ্ধান্তের উপর ভিত্তি করে তাদের কৌশল নির্ধারণ করতে হবে।
সামগ্রিকভাবে, সোনার দামে এই বৃদ্ধি ভারতীয় বাজারে চাহিদা এবং আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির একটি সম্মিলিত প্রতিফলন। বিনিয়োগকারী এবং ব্যবসায়ীদের জন্য আগামী দিনগুলোতে বাজারের গতিবিধি এবং নীতিগত ঘোষণার দিকে নজর রাখা অত্যন্ত জরুরি হবে।