সোনার দাম এক লক্ষ ছুঁইছুঁই, বিয়ের মরশুমে চিন্তার ভাঁজ আমজনতার

gold price today in kolkata 28 august 2025

গত কয়েক মাস ধরে আন্তর্জাতিক বাজারের ওঠানামা, মুদ্রার দরপতন ও বিশ্বজুড়ে ভূরাজনৈতিক অস্থিরতার জেরে সোনার দাম একের পর এক রেকর্ড ছুঁয়ে চলেছে। কলকাতার বাজারে সেই প্রভাব পড়েছে সরাসরি। বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) কলকাতায় ২২ ক্যারাট ও ২৪ ক্যারাট সোনার দাম যথাক্রমে প্রতি ১০ গ্রামে ৬৫,৮৫০ টাকা এবং ৭১,৮২০ টাকা। সঙ্গে ৩% জিএসটি ও মেকিং চার্জ যোগ করলে গয়নার সোনার দাম এক লাফে ৯৫ হাজার ছাড়িয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে রুপোর দাম প্রতি কেজিতে ৯৪,৫০০ টাকার কাছাকাছি। ফলে শুধু সোনাই নয়, রুপোর ক্ষেত্রেও মধ্যবিত্তের জন্য চাপ বাড়ছে।

Advertisements

মধ্যবিত্তের গয়না কেনা বন্ধ প্রায়

বাঙালি সংস্কৃতিতে সোনার গয়নার গুরুত্ব অপরিসীম। বিয়ে হোক বা অন্নপ্রাশন, নবজাতকের জন্ম বা উৎসব — সোনা ছাড়া ভাবাই যায় না। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে গয়না কেনা যে বেশ বড়সড় সিদ্ধান্ত হয়ে দাঁড়িয়েছে, তা বলাই বাহুল্য। অনেক মধ্যবিত্ত পরিবার যেখানে আগে বছরে অন্তত একবার কিছু গয়না কিনে রাখতেন ভবিষ্যতের কথা ভেবে, এখন সেখানে সে পরিকল্পনা স্থগিত।

কলকাতার একটি জনপ্রিয় জুয়েলারি দোকানের বিক্রয়কর্তা জানান, “গয়নার বিক্রি প্রায় ৩০ শতাংশ কমে গিয়েছে গত তিন মাসে। লোকজন দোকানে এসে দাম শুনে ফিরে যাচ্ছেন। অনেকে আবার আগের গয়না গলিয়ে নতুন কিছু বানাতে চাইছেন, তাও খরচ বাঁচানোর জন্য।”

উপহারে সোনা? ভাবনাতেই দোলাচল

Advertisements

এখন বিয়ের মরশুম। আত্মীয়-স্বজনের বিয়েতে উপহার হিসেবে সোনার চেন, আংটি বা লকেট দেওয়ার রেওয়াজ দীর্ঘদিনের। কিন্তু দাম যে হারে বেড়েছে, তাতে অনেকেই এখন সোনার বদলে রুপো বা অন্য বিকল্প খুঁজছেন। কেউ কেউ আবার নিরুপায় হয়ে ই-গোল্ড বা গোল্ড বন্ডের পথ বেছে নিচ্ছেন, যা সরাসরি গয়নার চাহিদা পূরণ না করলেও একধরনের মানসিক সন্তুষ্টি দেয়।

দমদমের বাসিন্দা রূপা চক্রবর্তী বলেন, “ভাইঝির বিয়েতে একটা চেন দেওয়ার ইচ্ছে ছিল। কিন্তু এক লক্ষ টাকা ছুঁইছুঁই দামে কিছুই ভালো করে দেওয়া যাচ্ছে না। বাধ্য হয়ে একটা রুপোর সেট কিনেছি। মন খারাপ লাগলেও উপায় নেই।”

দাম কমার আশা কি আছে?

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভবিষ্যতে যদি আন্তর্জাতিক বাজারে কিছুটা স্থিতি আসে বা মার্কিন ডলার দুর্বল হয়, তবে সোনার দামে সাময়িক স্বস্তি মিলতে পারে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে খুব বেশি কমার সম্ভাবনা নেই। বরং ভারতের চাহিদা ও উৎসব মরশুম সামনে থাকায় দাম আরও কিছুটা বাড়তে পারে বলেই মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।