জন্মাষ্টমীর আগে আকাশছোঁয়া ফলের দাম, ক্রেতাদের হাঁসফাঁস অবস্থা

শ্রীকৃষ্ণ জন্মাষ্টমী ঘনিয়ে আসছে। ভক্তদের জন্য এই দিনটির বিশেষ তাৎপর্য থাকলেও, বাজারের পরিস্থিতি ক্রেতাদের মুখ ভার করে দিয়েছে। প্রতিবছরের মতোই পূজার আগে ফলের (Fruit Price)…

fruit-price-in-kolkata-today-14-august-2025

শ্রীকৃষ্ণ জন্মাষ্টমী ঘনিয়ে আসছে। ভক্তদের জন্য এই দিনটির বিশেষ তাৎপর্য থাকলেও, বাজারের পরিস্থিতি ক্রেতাদের মুখ ভার করে দিয়েছে। প্রতিবছরের মতোই পূজার আগে ফলের (Fruit Price) চাহিদা বাড়লেও, এ বছর দাম এতটাই চড়া যে অনেকেই প্রয়োজনীয় ফল কিনতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন।

কলকাতা সহ রাজ্যের বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আপেল, আঙুর,(Fruit Price) নাশপাতি, ড্রাগন ফ্রুট থেকে শুরু করে দেশি কলা, আনারস, আমলকি—সবকিছুর দামই অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে। পাইকারি বাজারে ফলের দাম বাড়ার জন্য খুচরো বাজারেও তার প্রভাব পড়েছে দ্বিগুণ হারে। খুচরো বিক্রেতাদের দাবি, বাড়তি চাহিদা এবং সরবরাহের ঘাটতি এই মূল্যবৃদ্ধির মূল কারণ।

   

উত্তর কলকাতার এক ফল(Fruit Price) বিক্রেতা জানান, “প্রতি বছর জন্মাষ্টমীর সময় চাহিদা বাড়ে, কিন্তু এ বছর পাইকারি বাজার থেকেই দাম অনেক বেশি। আমরা কম দামে কিনতে পারছি না, তাই কম দামে বিক্রি করাও সম্ভব হচ্ছে না।” তাঁর কথায়, আপেলের দাম এখন প্রতি কেজি ২০০–২৪০ টাকা, (Fruit Price) যা কয়েক সপ্তাহ আগেও ছিল ১৫০–১৮০ টাকার মধ্যে। আঙুরের দামও লাফিয়ে পৌঁছে গেছে ১৬০–২০০ টাকায়(Fruit Price) ।

শুধু দামই নয়, গুণগত মান নিয়েও অসন্তোষ রয়েছে ক্রেতাদের মধ্যে। দক্ষিণ কলকাতার এক গৃহবধূ বলেন, “ফলের দাম যেমন বেড়েছে, তেমনি মানও আগের মতো ভালো নয়। এত টাকা দিয়ে কিনেও স্বাদ পাওয়া যাচ্ছে না আগের মতো।”

ফলের পাইকারি বিক্রেতারা অবশ্য ভিন্ন ব্যাখ্যা দিচ্ছেন। তাঁদের দাবি, এই বছর বর্ষার অনিয়মিত বৃষ্টি ও অতিরিক্ত গরম আবহাওয়ার কারণে অনেক ফলের উৎপাদন কম হয়েছে। ফলে বাজারে সরবরাহ কম থাকায় দাম বেড়েছে। এছাড়াও, কিছু ফল দেশের বাইরে থেকে আমদানি করতে হয়, যার ক্ষেত্রে পরিবহন খরচ এবং ডলার–রুপি বিনিময় হারের ওঠানামার প্রভাবও পড়েছে।

দেশি ফলের মধ্যেও দাম বৃদ্ধি লক্ষণীয়। কলা, যা সাধারণত ৩০–৪০ টাকায়(Fruit Price) ডজন পাওয়া যেত, এখন অনেক জায়গায় ৫০–৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আনারসের দামও বেড়ে হয়েছে ৫০–৭০(Fruit Price) টাকা প্রতিটি। পেঁপে, লিচু ও অন্যান্য মৌসুমি ফলেও একই চিত্র।

Advertisements

এই পরিস্থিতিতে অনেকেই বাধ্য হয়ে কম ফল কিনছেন বা বিকল্প ফলের দিকে ঝুঁকছেন। যেমন, আপেল বা আঙুরের বদলে অনেকেই এখন পেঁপে, পেয়ারা বা মৌসুমি কিনছেন, যেগুলোর দাম তুলনামূলকভাবে কম। তবে, জন্মাষ্টমীর পুজোয় কৃষ্ণভক্তদের কাছে কলা, দুধ, মাখন, বিভিন্ন ধরনের শুকনো ফল অপরিহার্য—ফলে এই জিনিসগুলোর চাহিদা এবং দাম উভয়ই উঁচুতে রয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, উৎসবের আগে বাজারে দাম কিছুটা বাড়া স্বাভাবিক হলেও, এই বছরের বৃদ্ধি স্বাভাবিক মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার সঙ্গে বাজারদর মিলছে না বলেই সমস্যা প্রকট হচ্ছে।

সরকারি দিক থেকেও নজরদারি শুরু হয়েছে। খাদ্য দফতরের সূত্রে জানা গেছে, পাইকারি বাজারে মূল্য নিয়ন্ত্রণ এবং মজুতদারি রোধে অভিযান চালানো হবে। তবে বিক্রেতারা বলছেন, যতক্ষণ না উৎপাদন ও সরবরাহ স্বাভাবিক হচ্ছে, ততক্ষণ দাম কমার সম্ভাবনা কম।

জন্মাষ্টমীর আগে এই ফলের বাজারের অবস্থা ক্রেতাদের জন্য সত্যিই দুশ্চিন্তার। একদিকে পূজোর আয়োজন, অন্যদিকে আকাশছোঁয়া দাম—দুটির চাপ মিলিয়ে হাঁসফাঁস করছেন সাধারণ মানুষ। ফলপ্রেমী বাঙালির উৎসবের আনন্দে তাই এবছর কিছুটা হলেও ভাঁটা পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।