দারিদ্র্য থেকে স্বনির্ভরতা! মোদী সরকারের ১১ বছরের আর্থিক বিপ্লব

গত ১১ বছরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকার একাধিক আর্থিক অন্তর্ভুক্তি প্রকল্পের মাধ্যমে ভারতে কল্যাণমূলক পরিষেবায় বিপ্লব (Poverty to Empowerment) এনেছে। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা…

From Poverty to Empowerment Modi Govt’s 11-Year Financial Revolution

গত ১১ বছরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকার একাধিক আর্থিক অন্তর্ভুক্তি প্রকল্পের মাধ্যমে ভারতে কল্যাণমূলক পরিষেবায় বিপ্লব (Poverty to Empowerment) এনেছে। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামণ বৃহস্পতিবার এক্স-এ (সাবেক টুইটার) একটি পোস্টে জানিয়েছেন, সরাসরি লভ্যাংশ হস্তান্তর (ডাইরেক্ট বেনিফিট ট্রান্সফার বা DBT) ব্যবস্থা দুর্নীতির পথ রুদ্ধ করে স্বচ্ছতা এনেছে এবং লক্ষ লক্ষ মানুষকে দারিদ্র্যের জাল থেকে মুক্তি দিয়েছে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, “ডিবিটি ভারতে কল্যাণমূলক পরিষেবাকে আমূল বদলে দিয়েছে। বর্তমানে ১২০০টিরও বেশি সরকারি প্রকল্প ডিবিটির মাধ্যমে উপকৃতদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে সরাসরি টাকা পাঠাচ্ছে। এর মাধ্যমে এখনও পর্যন্ত ৪৪ লক্ষ কোটি টাকার বেশি হস্তান্তর হয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “এই পদ্ধতির ফলে দেশ ৩.৪৮ লক্ষ কোটি টাকা বাঁচিয়েছে যা আগের লিকেজ এবং অপচয়ের কারণে ক্ষয় হচ্ছিল।”

   

নারী ক্ষমতায়নে নতুন দিগন্ত
অর্থমন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী মুদ্রা যোজনা (PM MUDRA Yojana) দেশের তৃণমূল স্তরের স্বপ্নকে ডানার জুগিয়েছে এবং উদ্যোক্তাদের জন্য নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে। এই প্রকল্পের অধীনে এখনও পর্যন্ত ৫২ কোটিরও বেশি ঋণ বিতরণ হয়েছে যার মোট পরিমাণ ৩৩ লক্ষ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৬৮ শতাংশ ঋণ নারী উদ্যোক্তাদের দেওয়া হয়েছে। এই প্রকল্পের ফলে বিশেষত গ্রামীণ ও পিছিয়ে পড়া নারীরা আর্থিক স্বাধীনতার স্বাদ পেয়েছেন।

বিশ্ববৃহৎ অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তি প্রকল্প: প্রধানমন্ত্রী জন ধন যোজনা
প্রধানমন্ত্রী জন ধন যোজনার কথা উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী জানান, এটি বিশ্বের বৃহত্তম আর্থিক অন্তর্ভুক্তি প্রকল্প। এই প্রকল্পের আওতায় ৫৫.৪৪ কোটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে, যার মধ্যে ৫৫.৭ শতাংশ অ্যাকাউন্ট নারীদের নামে। এই উদ্যোগ ব্যাংকিং পরিষেবাকে গ্রাম ও প্রত্যন্ত এলাকায় পৌঁছে দিয়েছে।

স্বচ্ছতা ও লাভের ন্যায্যতা
সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সরাসরি ব্যাংক হস্তান্তরের ফলে ভর্তুকি সংক্রান্ত খাতে ব্যাপক স্বচ্ছতা এসেছে। ফলস্বরূপ, ভর্তুকির বরাদ্দ মোট সরকারি ব্যয়ের ১৬ শতাংশ থেকে কমে ৯ শতাংশে নেমে এসেছে। সরকারের দাবি, এই প্রকল্পের কারণে উপভোক্তাদের কাছে সুবিধা পৌঁছাতে সময় ও ব্যয় উভয়ই হ্রাস পেয়েছে।

Advertisements

প্রধানমন্ত্রীর বার্তা
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিজেও এই প্রসঙ্গে এক্স-এ পোস্ট করে জানান, “ডিবিটি, ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তি এবং গ্রামীণ পরিকাঠামোয় জোর দেওয়ার ফলে এখন দেশের প্রতিটি প্রান্তে দ্রুততার সঙ্গে সুবিধা পৌঁছানো সম্ভব হয়েছে। আর্থিক স্বচ্ছতা নিশ্চিত হয়েছে। এটি সম্ভব হয়েছে কারণ টাকাটা এখন সরাসরি উপভোক্তার অ্যাকাউন্টে যায়, মাঝখানে কেউ হাত দিতে পারে না।”

তিনি আরও বলেন, “এই উদ্যোগের ফলে ২৫ কোটিরও বেশি মানুষ দারিদ্র্যকে পরাজিত করতে সক্ষম হয়েছে। এনডিএ সরকার প্রতিটি ভারতীয় নাগরিকের মর্যাদাপূর্ণ জীবন নিশ্চিত করতে এবং একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও স্বনির্ভর ভারত গড়ে তুলতে অঙ্গীকারবদ্ধ।”

আর্থিক অন্তর্ভুক্তির ভবিষ্যৎ
বিশেষজ্ঞদের মতে, মোদী সরকারের এই উদ্যোগগুলি ভারতকে একটি ডিজিটালি শক্তিশালী, স্বচ্ছ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক ব্যবস্থার দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। ভবিষ্যতে আরও বেশি প্রযুক্তি-ভিত্তিক ও বৈষম্যহীন নীতির মাধ্যমে দেশবাসীর কাছে সরকারি পরিষেবাগুলি আরও সহজলভ্য হবে বলে আশা করা যায়।

এনডিএ সরকারের ‘সবার সাথ, সবার বিকাশ, সবার বিশ্বাস’ মন্ত্রে ভর করে এই প্রকল্পগুলি প্রমাণ করেছে যে রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও প্রযুক্তিগত দক্ষতা মিললে দেশের কোটি কোটি মানুষকে দারিদ্র্য ও দুর্নীতির অন্ধকার থেকে মুক্ত করা সম্ভব। এই পথচলা এখনও অব্যাহত, এবং আগামী দিনগুলিতে আরও কত দূর এগোয় তা দেখার অপেক্ষা রইল।