ITR Filing Deadline: ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে রিটার্ন জমা দিলে সুদ মুকুব হবে? জানুন নিয়ম

২০২৪-২৫ অর্থবছরের (মূল্যায়ন বছর ২০২৫-২৬) জন্য আয়কর রিটার্ন (ITR) দাখিলের সময়সীমা বাড়িয়ে ৩১ জুলাই থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ পর্যন্ত করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় প্রত্যক্ষ কর পর্ষদ…

ITR Filing Deadline

২০২৪-২৫ অর্থবছরের (মূল্যায়ন বছর ২০২৫-২৬) জন্য আয়কর রিটার্ন (ITR) দাখিলের সময়সীমা বাড়িয়ে ৩১ জুলাই থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ পর্যন্ত করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় প্রত্যক্ষ কর পর্ষদ (CBDT) এই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা বেতনভুক্ত কর্মচারী, পেনশনভোগী এবং অডিটের আওতায় না থাকা প্রবাসী ভারতীয়দের (NRI) জন্য বড় স্বস্তির বার্তা।

এই সময়সীমা বৃদ্ধির ফলে আয়কর রিটার্ন দাখিলে দেরি করার জন্য কোনো শাস্তিমূলক সুদ (interest under Section 234A) আর ধার্য হবে না, যদি করদাতা ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে তাদের রিটার্ন এবং স্ব-মূল্যায়ন কর (Self-Assessment Tax) জমা দেন।

   

নতুন সময়সীমায় স্ব-মূল্যায়ন কর পরিশোধে নেই কোনো সুদ:
ডেলয়েট ইন্ডিয়ার ডিরেক্টর তরুণ গর্গ জানিয়েছেন, আয়কর আইন অনুযায়ী, যদি সময়সীমা বাড়ানো হয় এবং করদাতা সেই সময়ের মধ্যে কর এবং রিটার্ন দুটোই দাখিল করেন, তাহলে Section 234A অনুযায়ী কোনো সুদ প্রযোজ্য হবে না। এই বিষয়ে CBDT-এর ২০১৫ সালের সার্কুলার এবং সুপ্রিম কোর্টের পূর্ববর্তী রায়ও এই মতকে সমর্থন করে।

প্রখ্যাত চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট তরুণ কুমার মদন জানান, CBDT-এর নতুন সার্কুলার (নং ৬/২০২৫) Section 234A ব্যতিক্রমের কথা উল্লেখ করেনি। ফলে ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সব দায় মিটিয়ে দিলে কোনো সুদ দিতে হবে না বলেই ধরে নেওয়া যায়।
তবে অ্যাডভান্স ট্যাক্সে ছাড় নেই

যদিও স্ব-মূল্যায়ন করের ক্ষেত্রে সুদের ছাড় থাকছে, তবে Section 234B এবং 234C অনুযায়ী অগ্রিম কর (Advance Tax) না দেওয়ার ক্ষেত্রে ১% হারে মাসিক সুদ দিতে হবে। এগুলির সঙ্গে রিটার্ন দাখিলের সময়সীমা বৃদ্ধির কোনো সম্পর্ক নেই।
আয়করের বর্তমান হার (FY 2024-25): পুরনো বনাম নতুন কর ব্যবস্থা
সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী, করদাতারা পুরনো বা নতুন—যে কোনো এক কর ব্যবস্থা বেছে নিতে পারবেন। চলুন দেখে নিই দুই ব্যবস্থার বিস্তারিত কর

কাঠামো ও সুবিধা:

Advertisements

পুরনো কর ব্যবস্থা (Old Regime):
এই ব্যবস্থায় বিভিন্ন ছাড় ও বেনিফিট নেওয়া যায়, যেমন:
২৫,০০০ টাকা পর্যন্ত কর ছাড় স্বাস্থ্য বিমার প্রিমিয়ামের ওপর (বয়স্কদের জন্য ৫০,০০০ টাকা পর্যন্ত)

গৃহভাড়া ভাতা (HRA), ছুটির ভ্রমণ ভাতা (LTA)-এর ওপর ছাড়
৫০,০০০ টাকার স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন

পুরনো কর হার:
আয় ২,৫০,০০০ টাকা পর্যন্ত: শূন্য
২,৫০,০০১ টাকা – ৫,০০,০০০ টাকা: ৫%
৫,০০,০০১ টাকা – ১০,০০,০০০ টাকা: ২০%
১০,০০,০০১ টাকার উপরে: ৩০%
সিনিয়র সিটিজেনদের জন্য বাড়তি ছাড়:
৬০-৮০ বছর: করমুক্ত সীমা ৩,০০,০০০ টাকা
৮০ বছরের বেশি: করমুক্ত সীমা ৫,০০,০০০ টাকা
নতুন কর ব্যবস্থা (New Regime):
এই ব্যবস্থা ২০২০ সালের বাজেটে চালু হয়, যেখানে করের হার কম হলেও অধিকাংশ ছাড় পাওয়া যায় না। তবে, স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন ৫০,০০০ টাকা পর্যন্ত থাকছে। FY26 থেকে এটি ৭৫,০০০ টাকা পর্যন্ত বাড়বে।

নতুন কর হার:
আয় ৩,০০,০০০ টাকা পর্যন্ত: শূন্য
৩,০০,০০১ টাকা – ৭,০০,০০০ টাকা: ৫% (Section 87A অনুযায়ী ৭ লাখ টাকা পর্যন্ত কর রিবেট)
৭,০০,০০১ টাকা – ১০,০০,০০০ টাকা: ১০%
১০,০০,০০১ টাকা – ১২,০০,০০০ টাকা: ১৫%
১২,০০,০০১ টাকা – ১৫,০০,০০০ টাকা: ২০%
১৫,০০,০০১ টাকার উপরে: ৩০%

কী করবেন করদাতারা?
কর বিশেষজ্ঞদের মতে, করদাতাদের উচিত এখন থেকেই প্রয়োজনীয় তথ্য এবং দলিলপত্র তৈরি করে রাখা। অনেক সময় ভুল প্রি-ফিল্ড তথ্যের জন্য সমস্যা হতে পারে, তাই শেষ মুহূর্তে অপেক্ষা না করে যথাসময়ে ফাইল করার পরামর্শ দিচ্ছেন তারা।
যারা নিজেরা রিটার্ন ফাইল করতে পারেন না, তারা অভিজ্ঞ চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট বা ট্যাক্স পরামর্শকের সাহায্য নিতে পারেন।
সাধারণ করদাতাদের জন্য CBDT-এর এই সময়সীমা বৃদ্ধি একটি স্বস্তির খবর। বিশেষ করে যারা চাকুরিজীবী, পেনশনপ্রাপক বা প্রবাসী—তাদের জন্য রিটার্ন জমা দিতে আরও সময় পেলেন, তাও সুদের ঝুঁকি ছাড়াই। তবে অগ্রিম করের ক্ষেত্রের নিয়ম অপরিবর্তিত থাকায় সচেতন না থাকলে অর্থনৈতিক ক্ষতি হতে পারে। তাই সময়ের মধ্যে হিসাব মিটিয়ে, সঠিক তথ্য দিয়ে রিটার্ন জমা দেওয়াই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।