উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ (Yogi Adityanath ) বুধবার লখনউয়ে ‘কৃষি সংকল্প অভিযান’-এর (Krishi Sankalp Abhiyan) সূচনা অনুষ্ঠানে ভাষণ দিতে গিয়ে জানালেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকারের গত ১০ বছরের কার্যকলাপে রাজ্যের কৃষকরা বড় ধরনের লাভবান হয়েছেন। তাঁর দাবি, মোদী জমানায় কৃষকদের আয় দ্বিগুণেরও বেশি হয়েছে এবং তাঁদের জীবনযাত্রায় উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এসেছে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “২০১৪-১৫ সালে যখন একজন কৃষক গম উৎপাদনের জন্য প্রতি কুইন্টালে ১০০০ টাকাও পেতেন না, তখন এই বছর সেই গমের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য (এমএসপি) দাঁড়িয়েছে প্রতি কুইন্টালে ২৪২৫ টাকা। শুধু তাই নয়, বাজারে প্রতিযোগিতার ফলে কৃষকরা গম বিক্রি করেছেন প্রতি কুইন্টালে ২৮০০ টাকা দরে। এটি প্রমাণ করে, কৃষকদের জীবনে এক বিশাল পরিবর্তন এসেছে।”
তিনি আরও জানান, কৃষি উৎপাদন এবং কৃষকদের আয়ের উন্নয়নের জন্য উত্তরপ্রদেশে একাধিক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তাঁর কথায়, “রাজ্যে ডাবল ইঞ্জিন সরকারের (রাজ্য ও কেন্দ্রের যৌথ সরকার) উদ্যোগে ২৩ লক্ষ হেক্টর অতিরিক্ত জমিতে সেচের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কৃষকদের জন্য গড়ে তোলা হয়েছে ‘Centre of Excellence’ এবং ‘কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্র’। এর ফলে কৃষিতে আধুনিক প্রযুক্তির প্রয়োগ সম্ভব হয়েছে এবং কৃষকদের দক্ষতা বৃদ্ধি পেয়েছে।”
মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ আরও বলেন, “কৃষিক্ষেত্রে বিপ্লব আনতে কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকার যৌথভাবে কাজ করছে। কৃষকদের সুবিধার জন্য উন্নত জাতের বীজ, আধুনিক সেচ ব্যবস্থা, এবং প্রশিক্ষণের মতো একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। কৃষকের সন্তানরা যাতে কৃষিকে উন্নত পেশা হিসেবে গ্রহণ করে, তার জন্যও নানা রকম কর্মসূচি চালু হয়েছে।”
তিনি আরও যোগ করেন যে, রাজ্যে কৃষকদের জন্য ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম চালু করা হয়েছে, যেখানে কৃষকরা সরাসরি সরকারের বিভিন্ন পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত হতে পারছেন। কৃষি ঋণ, বিমা, এবং সরবরাহ শৃঙ্খল ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে ডিজিটাল ব্যবস্থার প্রয়োগ কৃষকদের জীবন আরও সহজ করেছে।
এই ‘কৃষি সংকল্প অভিযান’ মূলত কৃষকদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন করে তাঁদের সমস্যার সমাধান, নতুন প্রযুক্তির প্রচার, এবং সরকারের বিভিন্ন কৃষি প্রকল্পের সঠিক বাস্তবায়নের লক্ষ্য নিয়েই শুরু হয়েছে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের বিভিন্ন কৃষি আধিকারিক, কৃষি বিজ্ঞানী এবং হাজার হাজার কৃষক।
যোগী আদিত্যনাথ বলেন, “কৃষকদের জন্য দায়বদ্ধতা এবং কৃষিকে সম্মান দেওয়া এই সরকারের অন্যতম অঙ্গীকার। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কৃষি-নীতি বাস্তবায়নের ফলে আজ কৃষকরা নিজেদের পরিশ্রমের উপযুক্ত মূল্য পাচ্ছেন। কৃষিতে আধুনিকীকরণ, জল সংরক্ষণ, এবং বাজার ব্যবস্থার উন্নয়নের ফলে কৃষি আজ রাজ্যের অর্থনীতির মূল স্তম্ভে পরিণত হয়েছে।”
এই অভিযানের মাধ্যমে রাজ্য সরকার কৃষকদের আরও উদ্বুদ্ধ করতে এবং তাঁদের সমস্যার সমাধানে আরও সক্রিয় ভূমিকা নিতে চায় বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। আগামী দিনে কৃষকদের আয় আরও বাড়বে এবং কৃষিক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।