পূর্ববর্তী জিএসটি (GST) রিটার্ন দাখিল না করায় জরিমানা ও সুদের মুখোমুখি হওয়া করদাতাদের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার Section 128A-এর অধীনে ঘোষিত অ্যামনেস্টি স্কিম চালু করেছে। এই স্কিমের মাধ্যমে দেরিতে রিটার্ন জমা দেওয়ার জন্য ধার্য late fee ও সুদ মকুবের সুযোগ মিলছে। তবে জিএসটি পোর্টালে প্রযুক্তিগত সমস্যার কারণে অনেক করদাতা অ্যামনেস্টি আবেদন করতে পারছেন না। এই পরিস্থিতিতে জিএসটি নেটওয়ার্ক (GSTN) এক গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশিকা জারি করেছে, যেখানে ম্যানুয়াল ফাইলিং-এর পথ খুলে দেওয়া হয়েছে।
প্রযুক্তিগত সমস্যা ও বিকল্প পথ
জিএসটিএন-এর জারি করা অ্যাডভাইজরি অনুযায়ী, ৮ জুন ২০২৫ পর্যন্ত SPL-01/02 ফর্ম ব্যবহার করে ৩.০২ লক্ষেরও বেশি অ্যামনেস্টি আবেদন জমা পড়েছে। তবে ব্যবসায়ী সংগঠন ও সাধারণ করদাতারা জানিয়েছেন, পোর্টালে একাধিক কারিগরি ত্রুটির কারণে অনেকেই আবেদন জমা দিতে পারছেন না। ফলে approaching deadline (৩০ জুন, ২০২৫) মাথায় রেখে GSTN বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে ম্যানুয়াল ফাইলিং-এর সুযোগ দিয়েছে।
নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, “জিএসটি পোর্টালের মাধ্যমে Section 128A-এর আওতায় অ্যামনেস্টি আবেদন করতে গিয়ে কিছু করদাতা সমস্যায় পড়েছেন। এই পরিস্থিতিতে পোর্টাল-সংক্রান্ত সমস্যায় পড়া করদাতাদের জন্য বিকল্প নির্দেশনা দেওয়া হলো।”
কীভাবে করবেন ম্যানুয়াল ফাইলিং?
জিএসটি পোর্টালের কারিগরি সমস্যায় যাঁরা আবেদন করতে পারছেন না, তাঁদের জন্য দেওয়া হয়েছে ধাপে ধাপে ম্যানুয়াল আবেদনপত্র জমা দেওয়ার পদ্ধতি:
1. ডিমান্ড অর্ডার সিলেকশন: আবেদন শুরু করার সময় ‘Whether the demand order is issued through the GST Portal?’ – এই প্রশ্নে ‘No’ সিলেক্ট করতে হবে।
2. অর্ডার নম্বর ইনপুট: ‘Details of demand order’ ফিল্ডে অর্ডার নম্বরটি ‘ONL’ দিয়ে শুরু করে দিতে হবে।
উদাহরণ: যদি অর্ডার নম্বর হয় ‘ABCDE12345X1Z2’, তাহলে দিতে হবে ‘ONLABCDE12345X1Z2’।
3. ব্যাসিক ডিটেলস পূরণ: ‘Basic Details’ সেকশনে থাকা সব এডিটেবল ফিল্ড — যেমন যোগাযোগের তথ্য — নিজে ম্যানুয়ালি পূরণ করতে হবে।
4. চাহিদা ও পেমেন্ট ডেটা ইনপুট: এরপর, ডিমান্ড অর্ডারের বিস্তারিত, পেমেন্ট রেফারেন্স, ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য নিজে ইনপুট দিতে হবে।
5. DRC-03 এর মাধ্যমে পেমেন্ট: যাঁরা DRC-03 ফর্মের মাধ্যমে অর্থ পরিশোধ করেছেন, তাঁরা Table 4-এ তথ্য দিতে পারবেন। তবে যাঁরা ‘Payment towards demand’ অপশন বেছে নিয়েছেন, তাঁদের সে তথ্য এই টেবিলে দেওয়া যাবে না — তার বদলে আলাদাভাবে পেমেন্ট ডকুমেন্ট আপলোড করতে বলা হয়েছে।
জিএসটিএন আরও জানায়, যদি কেউ অনলাইনে রেকর্ড করা অর্ডার নম্বর অপরিবর্তিত অবস্থায় ম্যানুয়াল মোডে ইনপুট দেন, তাহলে পোর্টাল আবেদন গ্রহণ করবে না। ম্যানুয়াল মোড শুধুমাত্র তাঁদের জন্য, যাঁরা প্রকৃত অর্থেই প্রযুক্তিগত সমস্যায় পড়েছেন।
সাপোর্ট ও সহায়তা:
GSTN জানায়, ম্যানুয়াল ফাইলিং সংক্রান্ত বিস্তারিত গাইড নিম্নোক্ত লিঙ্কে পাওয়া যাবে:
https://tutorial.gst.gov.in/downloads/news/link_data.pdf
কোনও সমস্যা থেকে গেলে GST Self-Service Portal-এ অভিযোগ জমা দেওয়া যাবে:
https://selfservice.gstsystem.in
Section 128A অ্যামনেস্টি কী?
CGST আইনের Section 128A অনুযায়ী, করদাতারা যাঁরা পূর্বে জিএসটি রিটার্ন জমা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন, তাঁরা দেরির জরিমানা (late fee) ও সুদ (interest) মকুবের জন্য আবেদন করতে পারেন। এই স্কিমটি সরকার এই বছরের শুরুতে ঘোষণা করেছে, যার উদ্দেশ্য — ছোট ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের পুরনো করজাল থেকে মুক্তি দিয়ে নিয়মিত করার সুযোগ দেওয়া এবং আইনি জটিলতা কমানো।
৩০ জুন ২০২৫-এর মধ্যে আবেদন না করলে করদাতারা অ্যামনেস্টি স্কিমের সুবিধা পাবেন না। তাই যারা এখনো আবেদন করেননি বা পোর্টালে সমস্যার মুখে পড়েছেন, তাঁদের যত দ্রুত সম্ভব ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে আবেদন সম্পন্ন করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
এই নির্দেশিকা করদাতাদের জন্য যেমন একটি প্রযুক্তিগত সহায়তা, তেমনি শেষ মুহূর্তে ফাইলিং না করলে সুযোগ হারানোর ঝুঁকিও স্মরণ করিয়ে দেয়। কর বিশেষজ্ঞদের মতে, অ্যামনেস্টি স্কিমের এমন সুযোগ সচরাচর আসে না — ফলে এটি কাজে লাগিয়ে নিয়মমাফিক হয়ে যাওয়া উচিত।