নয়াদিল্লি, ৮ অক্টোবর ২০২৫: দীর্ঘ ১১ বছর পর ন্যূনতম পেনশনের অঙ্কে বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিল মোদী সরকার। এবার আর মাত্র ১,০০০ টাকা নয়, প্রবীণ পেনশনভোগীরা পেতে পারেন মাসে ২,৫০০ টাকা। সূত্রের খবর, ‘এমপ্লয়িজ় প্রভিডেন্ট ফান্ড অর্গানাইজ়েশন’ (EPFO) এই প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করবে আগামী ১০ ও ১১ অক্টোবরের সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ট্রাস্টিজ় (CBT)-এর বৈঠকে।
বর্তমানে ইপিএফও-র আওতায় থাকা ‘এমপ্লয়িজ় পেনশন স্কিম’ (EPS) অনুযায়ী ন্যূনতম মাসিক পেনশন ১,০০০ টাকা। ২০১৪ সালে এই সীমা নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু এর পর থেকে মুদ্রাস্ফীতি, মূল্যবৃদ্ধি, চিকিৎসা খরচ—সব মিলিয়ে এই অঙ্ক এখন আর কোনওভাবেই প্রবীণদের ন্যূনতম প্রয়োজন মেটাতে পারছে না। তাই বহুদিন ধরেই শ্রমিক সংগঠনগুলি ন্যূনতম পেনশন ৭,৫০০ টাকা করার দাবি জানিয়ে আসছে।
📌 সিবিটির প্রস্তাব – আড়াই গুণ বৃদ্ধি
তবে CBT এতটা বড় লাফে রাজি নয়। সূত্র অনুযায়ী, তারা ৭,৫০০ নয়, ২,৫০০ টাকা করার প্রস্তাব দিয়েছে। যদিও এটি শ্রমিক সংগঠনগুলির চাহিদার থেকে অনেক কম, তবুও বর্তমান ১,০০০ টাকার তুলনায় আড়াই গুণ বৃদ্ধি হওয়ায় প্রবীণদের জন্য এটি বড় স্বস্তি হয়ে উঠতে পারে।
অর্থনীতিবিদদের মতে, এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হলে লক্ষ লক্ষ বেসরকারি কর্মীর পরিবারের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে।
📊 পেনশন হিসাবের নিয়ম
ইপিএফও নির্দিষ্ট একটি ফর্মুলায় পেনশন হিসাব করে –
মাসিক পেনশন = (পেনশনযোগ্য বেতন × পেনশনযোগ্য পরিষেবা) ÷ ৭০
🔹 পেনশনযোগ্য বেতন: অবসরের আগে শেষ ৬০ মাসের গড় বেসিক + ডিএ, সর্বোচ্চ সীমা ₹১৫,০০০
🔹 পেনশনযোগ্য পরিষেবা: কত বছর ইপিএসে অবদান রাখা হয়েছে (ন্যূনতম ১০ বছর)
👉 উদাহরণ:
যদি কারও গড় বেতন ১৫,০০০ টাকা এবং চাকরির মেয়াদ ৩০ বছর হয়, তবে পেনশন হবে –
(১৫,০০০ × ৩০) ÷ ৭০ = ₹৬,৪২৯ টাকা প্রতি মাসে।
🏛️ কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের সিদ্ধান্তের অপেক্ষা
CBT যদি বৈঠকে সবুজ সঙ্কেত দেয়, তবে বিষয়টি যাবে অর্থ মন্ত্রকের টেবিলে। অনুমোদন মিললে ২০২৫ সালের মধ্যেই নতুন পেনশন হার কার্যকর হতে পারে। দীপাবলির উৎসবমুখর সময়ে এই ঘোষণা সরকারের জন্য রাজনৈতিকভাবে লাভজনক হতে পারে, বিশেষত সামনে একাধিক রাজ্যে নির্বাচন থাকায়।
🔊 প্রতিক্রিয়া
➡️ অর্থনৈতিক মহল: “যদিও এটি শ্রমিক সংগঠনের দাবি মতো ৭,৫০০ নয়, তবুও আড়াই গুণ বৃদ্ধি একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ।”
➡️ শ্রমিক সংগঠন: “এটি প্রাথমিক পদক্ষেপ মাত্র। আমাদের দাবি ৭,৫০০ টাকা—আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।”
সরকারের এই প্রস্তাবিত পদক্ষেপ একদিকে প্রবীণ নাগরিকদের আর্থিক সুরক্ষায় সহায়ক হবে, অন্যদিকে সরকারের প্রতি জনভরসা আরও বাড়াতে সাহায্য করবে। যদি দীপাবলির আগে ঘোষণা কার্যকর হয়, তবে এটি কেবল অর্থনৈতিক স্বস্তি নয়, বরং লক্ষ লক্ষ পেনশনভোগী পরিবারকে মানসিক দিক থেকেও উৎসবের আগে এক বড় উপহার দেবে।
এখন সব চোখ আগামী ১০ ও ১১ অক্টোবরের CBT বৈঠকে, যেখানে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নির্ভর করছে।