দেশজুড়ে কয়েক কোটি কর্মচারীর চোখ এখন একটাই প্রশ্নে আটকে—কেন্দ্র কি সত্যিই ইপিএফ (EPF) বাধ্যতামূলক বেতনসীমা ১৫,০০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০,০০০ টাকা করতে চলেছে? বহুদিন ধরে এ দাবি জোরদার হলেও শীতকালীন অধিবেশনের প্রথম দিনেই এ বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাখ্যা দিলেন কেন্দ্রীয় শ্রম ও রোজগার মন্ত্রী মানসুখ মাণ্ডবিয়া।
কী বললেন শ্রমমন্ত্রি?
লোকসভায় কংগ্রেস সাংসদ বেনি বেহানান এবং ডিন কুরিয়াকোস সরাসরি প্রশ্ন করেন—সরকার কি ইপিএফের বেতনসীমা দ্বিগুণ করার পরিকল্পনা করছে? উত্তরে শ্রমমন্ত্রি জানান, এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সব স্টেকহোল্ডারের সঙ্গে বিস্তৃত আলোচনা প্রয়োজন। একতরফা সিদ্ধান্ত নিলে তা কর্মচারী ও নিয়োগকর্তা—উভয়ের ওপরই অর্থনৈতিক চাপ ফেলতে পারে।
মন্ত্রী জানান, বেতনসীমা বাড়লে কর্মচারীর PF কেটে রাখা অংশ বেড়ে যাবে, ফলে হাতে পাওয়া বেতন কমে যেতে পারে। একইসঙ্গে নিয়োগকর্তাদেরও অতিরিক্ত ব্যয় বহন করতে হবে, যা নতুন নিয়োগে প্রভাব ফেলতে পারে। তাই সরকার এখনই ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ কোনো অবস্থান নিচ্ছে না—বরং বিষয়টিকে আলোচ্য বিষয় হিসেবে দেখছে।
শেষ কবে বেতনসীমা পরিবর্তন করা হয়েছিল? EPF Salary Limit Increase
বর্তমানে যাঁদের বেসিক বেতন ১৫,০০০ টাকা পর্যন্ত, তাঁদের জন্য ইপিএফ জমা বাধ্যতামূলক। ২০১৪ সালের আগে এই সীমা ছিল মাত্র ৬,৫০০ টাকা। ওই বছরই কেন্দ্র এটি বাড়িয়ে ১৫,০০০ টাকা করে। এরপর গত এক দশকে আর কোনো পরিবর্তন আসেনি। যাঁদের বেসিক বেতন ১৫,০০০ টাকার বেশি এবং যারা ১ সেপ্টেম্বর ২০১৪–এর পরে চাকরিতে যোগ দিয়েছেন, তাঁদের PF জমা রাখা ঐচ্ছিক।
গিগ কর্মীরা কি পিএফ সুবিধা পাবেন?
দেশজুড়ে দ্রুত বাড়ছে গিগ ইকোনমির পরিধি—ডেলিভারি, ক্যাব সার্ভিস, অনলাইন প্ল্যাটফর্মের কর্মীরা এর অন্তর্ভুক্ত। তাঁদের ইপিএফ সুবিধার আওতায় আনার দাবি দীর্ঘদিনের। তবে সরকার স্পষ্ট করেছে, বর্তমান EPF স্কিম, 1952-এর আওতায় গিগ কর্মীরা আসবে না। কারণ তাঁদের সঙ্গে প্ল্যাটফর্মের সম্পর্ক ঐতিহ্যগত ‘নিয়োগকর্তা–কর্মচারী’ কাঠামোর মতো নয়।
শেষ কথা:
তবে এর মানে এই নয় যে তাঁরা সুরক্ষা পাবেন না। শ্রমমন্ত্রি জানান, সামাজিক নিরাপত্তা কোড, ২০২০ অনুযায়ী, গিগ ও প্ল্যাটফর্ম কর্মীদের জন্য আলাদা সুরক্ষা কাঠামো রয়েছে—
জীবন ও অক্ষমতা কভার
দুর্ঘটনা বীমা
স্বাস্থ্য সুবিধা
বার্ধক্য সুরক্ষা
এছাড়া তাঁদের জন্য একটি পৃথক সোশ্যাল সিকিউরিটি ফান্ড তৈরির প্রস্তাবও রয়েছে।

