নতুন দিল্লিতে অনুষ্ঠিত কর্মচারী ভবিষ্যনিধি সংস্থার (EPFO) ৭৩তম প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে কেন্দ্রীয় শ্রম ও কর্মসংস্থান এবং যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া মন্ত্রী কর্মচারী নিবন্ধন প্রকল্প – ২০২৫ (Employees’ Enrolment Scheme – 2025)-এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন।
এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য হলো নিয়োগকর্তাদের স্বেচ্ছাসেবীভাবে অংশগ্রহণে উৎসাহিত করা, স্বচ্ছতা বৃদ্ধি করা এবং দেশের সকল যোগ্য কর্মচারীর কাছে সামাজিক সুরক্ষার পরিধি প্রসারিত করা।
যাদের জন্য এই প্রকল্প প্রযোজ্য:
শ্রম মন্ত্রকের বিজ্ঞপ্তি অনুসারে, এই প্রকল্পের আওতায় নিয়োগকর্তারা তাদের সেই সমস্ত কর্মচারীদের EPFO-তে নিবন্ধন করাতে পারবেন, যাদের ১ জুলাই ২০১৭ থেকে ৩১ অক্টোবর ২০২৫-এর মধ্যে ভবিষ্যনিধি (EPF) কভারেজের বাইরে রাখা হয়েছিল।
এই প্রকল্প কর্মচারী ও নিয়োগকর্তা উভয়ের জন্যই অতীতের অনিয়ম সংশোধনের এক বিশেষ সুযোগ এনে দিয়েছে। প্রকল্পটি চালু থাকবে ১ নভেম্বর ২০২৫ থেকে ৩০ এপ্রিল ২০২৬ পর্যন্ত অর্থাৎ মোট ছয় মাসের জন্য।
নিয়োগকর্তা ও কর্মচারীর জন্য সুবিধা:
প্রকল্প অনুযায়ী, সকল প্রতিষ্ঠান — তারা ইতিমধ্যেই EPF কভারেজে থাকুক বা না থাকুক — তাদের কর্মচারীদের EPFO পোর্টালের মাধ্যমে ঘোষণা করতে পারবে, যদি তারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে চাকরিতে যোগ দিয়ে থাকেন।
এই ক্ষেত্রে, যদি পূর্বে কর্মচারীর অংশ (Employee’s Share) কেটে রাখা না হয়ে থাকে, তবে তা সম্পূর্ণ মাফ করা হবে।
নিয়োগকর্তাকে শুধুমাত্র Employer’s Share, Section 7Q অনুযায়ী সুদ, প্রশাসনিক চার্জ, এবং নামমাত্র ১০০ টাকা জরিমানা প্রদান করতে হবে।
জরিমানা ও আইনগত দিক:
একটি প্রতিষ্ঠানের জন্য ১০০ টাকার এই জরিমানাকে তিনটি EPF প্রকল্পের (EPF, EPS এবং EDLI) ক্ষেত্রে পূর্ণ সম্মতি হিসেবে গণ্য করা হবে।
যেসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে Section 7A, Para 26B বা EPS-1995-এর Para 8 অনুযায়ী তদন্ত চলছে, তারাও এই প্রকল্পে অংশগ্রহণ করতে পারবে।
এসব ক্ষেত্রে জরিমানা কেবল নামমাত্র ₹১০০ ধরা হবে এবং EPFO কোনও স্বতঃপ্রণোদিত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে না।
“সকলের জন্য সামাজিক সুরক্ষা”র পথে বড় পদক্ষেপ:
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই প্রকল্প নিয়োগকর্তাদের জন্য একটি বড় সুযোগ এনে দিচ্ছে তাদের পূর্বের অনিয়ম দূর করার পাশাপাশি কর্মচারীদের আনুষ্ঠানিক সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থার আওতায় আনার জন্য।
সরকারের এই উদ্যোগ “Social Security for All” বা “সকলের জন্য সামাজিক সুরক্ষা” লক্ষ্যের দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
এর মাধ্যমে দেশের অসংগঠিত খাতের বিপুল শ্রমজীবী জনগোষ্ঠীকে সংগঠিত সামাজিক সুরক্ষা নেটওয়ার্কের আওতায় আনা সম্ভব হবে, যা ভবিষ্যতে ভারতের কর্মসংস্থান কাঠামোকে আরও শক্তিশালী ও সুরক্ষিত করে তুলবে।

