PLI-এর সাফল্যের পর ELI প্রকল্পে নজর, বললেন শ্রমমন্ত্রী

আত্মনির্ভর ভারতের লক্ষ্যপূরণের জন্য উৎপাদন-সংযুক্ত প্রণোদনা (PLI) প্রকল্পের পর এবার কর্মসংস্থান-সংযুক্ত প্রণোদনা প্রকল্পকে (ELI scheme) দ্বিতীয় ধাপ হিসেবে উল্লেখ করেছেন শ্রমমন্ত্রী ড. মনসুখ মাণ্ডব্যা (Union…

Union Minister Dr. Mansukh Mandaviya

আত্মনির্ভর ভারতের লক্ষ্যপূরণের জন্য উৎপাদন-সংযুক্ত প্রণোদনা (PLI) প্রকল্পের পর এবার কর্মসংস্থান-সংযুক্ত প্রণোদনা প্রকল্পকে (ELI scheme) দ্বিতীয় ধাপ হিসেবে উল্লেখ করেছেন শ্রমমন্ত্রী ড. মনসুখ মাণ্ডব্যা (Union Minister Dr. Mansukh Mandaviya )।

ELI প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হল নিয়োগকর্তাদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করা, যাতে তারা নতুন কর্মসংস্থান তৈরি করতে পারে, বিশেষত দেশের যুব সমাজের জন্য। শ্রমমন্ত্রী এই উদ্যোগটিকে নিয়োগকর্তা এবং চাকরিপ্রার্থীদের জন্য “উইন-উইন” পরিস্থিতি হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

   

শ্রম ও শিল্প মন্ত্রীর এক উচ্চ পর্যায়ের ভার্চুয়াল বৈঠকে, বিভিন্ন রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী এবং শিল্পমন্ত্রীদের সাথে আলোচনার সময়, মাণ্ডব্যা RBI-এর KLEMS ডেটা উল্লেখ করেন। এই তথ্য অনুসারে, গত এক দশকে দেশে ১৭ কোটি নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হয়েছে। এই সাফল্য দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির প্রতিফলন, যা মূলত নির্মাণ, উৎপাদন এবং পরিষেবা খাতের শক্তিশালী বৃদ্ধির ফলে সম্ভব হয়েছে।

মন্ত্রী আরও বলেন, এই অগ্রগতি ধরে রাখা এবং আরও ত্বরান্বিত করা অত্যন্ত জরুরি। ELI-এর মতো প্রকল্পগুলির মাধ্যমে গুণমানসম্মত চাকরি তৈরি, শ্রম বাজারের আনুষ্ঠানিকীকরণ, এবং সর্বজনীন বিকাশের পথ সুগম হবে।

ELI প্রকল্পের খুঁটিনাটি:
সরকারের ঘোষণায় বলা হয়েছে, ELI প্রকল্পের জন্য মোট ৯৯,৪৪৬ কোটি টাকার বাজেট বরাদ্দ করা হয়েছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে আগামী দুই বছরের মধ্যে সারা দেশে ৩.৫ কোটি নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

মন্ত্রী জানান, এই প্রকল্পের আওতায় যেসব নিয়োগকর্তারা নতুন নিয়োগ করবেন, তাদের আর্থিক প্রণোদনা দেওয়া হবে। এর ফলে নিয়োগকর্তারা নতুন জনবল নিয়োগে আরও উৎসাহিত হবেন। একই সঙ্গে দেশের শিক্ষিত ও অর্ধশিক্ষিত যুবসমাজের জন্য কাজের সুযোগ বৃদ্ধি পাবে।
মন্ত্রী স্পষ্ট করে দেন যে, প্রকল্পের প্রক্রিয়াগত নিয়মকানুন সহজ রাখা হয়েছে, যাতে ছোট, মাঝারি এবং বড় সব ধরনের প্রতিষ্ঠান সহজেই এই প্রকল্পের সুবিধা গ্রহণ করতে পারে। এতে অংশগ্রহণ বাড়বে এবং প্রকল্পটি সফল হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

রাজ্যগুলির প্রতিক্রিয়া:
এই বৈঠকে গুজরাট, আসাম, বিহার, ছত্তিসগড়, অরুণাচল প্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ডসহ একাধিক রাজ্যের শ্রম ও শিল্প মন্ত্রীরা উপস্থিত ছিলেন। তারা সকলে ELI প্রকল্পের প্রশংসা করেন এবং প্রকল্পের সফল বাস্তবায়নে পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

Advertisements

মন্ত্রীদের আহ্বান:
শ্রমমন্ত্রী রাজ্য মন্ত্রীদের প্রতি আহ্বান জানান, ELI প্রকল্পের প্রচারে আরও বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে ব্রিফিং, টেলিভিশন ও রেডিও সাক্ষাৎকার, সামাজিক মাধ্যম এবং অন্যান্য প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে জনগণের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করতে হবে। তৃণমূল পর্যায়ে ব্যাপক পরিকল্পনা এবং প্রচার খুবই প্রয়োজন।

মন্ত্রী বলেন, “শ্রম এবং শিল্প একে অপরের পরিপূরক। দেশের অর্থনীতি ও শ্রমশক্তির উন্নতির জন্য এই দুই ক্ষেত্রের মধ্যে সমন্বয় অপরিহার্য।” তিনি আরও যোগ করেন, “এই প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক কাঠামো আরও শক্তিশালী হবে এবং যুব সমাজের মধ্যে কর্মসংস্থানের নতুন দিগন্ত খুলে যাবে।”

মন্ত্রী ড. মাণ্ডব্যা জানান, দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির জন্য মানবসম্পদের উন্নতি অপরিহার্য। ELI প্রকল্প সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখেই প্রণীত হয়েছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে নতুন শিল্প, স্টার্টআপ এবং MSME খাতেরও নতুন উদ্যম সঞ্চার হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
রাজ্য মন্ত্রীদের প্রতিক্রিয়া থেকে বোঝা যায়, তারা রাজ্যে রাজ্যে কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়ানোর জন্য ELI প্রকল্পকে কার্যকরভাবে ব্যবহার করতে প্রস্তুত। এর মাধ্যমে প্রত্যন্ত অঞ্চল এবং গ্রামের যুবকদেরও কাজের সুযোগ তৈরি হবে।

ভারতের মতো জনবহুল দেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা সব সময়ই বড় চ্যালেঞ্জ। কিন্তু সরকারের ELI প্রকল্প এক নতুন দিকনির্দেশনা দিচ্ছে, যা উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিকে আরও শক্ত ভিত্তির উপর দাঁড় করাবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই প্রকল্পের সঠিক বাস্তবায়ন হলে দেশের বেকারত্বের হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমানো সম্ভব।

ELI প্রকল্পের মাধ্যমে সরকারের এই প্রচেষ্টা নিঃসন্দেহে দেশের যুবসমাজের জন্য এক আশার আলো। এখন দেখার বিষয়, কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারের যৌথ উদ্যোগে এই প্রকল্প কত দ্রুত এবং কতটা দক্ষতার সঙ্গে বাস্তবায়িত হয়।