বর্ষায় পর্যটন চাঙ্গা করতে ডুয়ার্সে আসছে ‘নদীয়ালি মাছ উৎসব!

অয়ন দে, আলিপুরদুয়ার: সুন্দরবনের ‘ইলিশ উৎসব’-এর ধাঁচে ডুয়ার্সে (Duars) এবার আয়োজিত হতে পারে ‘নদীয়ালি মাছ উৎসব’। বর্ষাকালে জঙ্গল সাফারি বন্ধ থাকায় পর্যটন ব্যবসায় ধস নামে,…

Duars monsoon tourism

অয়ন দে, আলিপুরদুয়ার: সুন্দরবনের ‘ইলিশ উৎসব’-এর ধাঁচে ডুয়ার্সে (Duars) এবার আয়োজিত হতে পারে ‘নদীয়ালি মাছ উৎসব’। বর্ষাকালে জঙ্গল সাফারি বন্ধ থাকায় পর্যটন ব্যবসায় ধস নামে, আর এই মন্দা কাটাতে নতুন ভাবনায় মেতেছেন ডুয়ার্সের পর্যটন ব্যবসায়ীরা। এই উৎসবে থাকবে ডুয়ার্সের নদী থেকে ধরা বিভিন্ন প্রজাতির মাছ দিয়ে তৈরি সুস্বাদু পদ, স্থানীয় জনজাতির সাংস্কৃতিক পরিবেশনা, জঙ্গলঘেরা নদীঘাট ভ্রমণ এবং মাছের পরিচিতি দেওয়ার বিশেষ অনুষ্ঠান। এই উদ্যোগের মাধ্যমে বর্ষাকালে পর্যটকদের আকর্ষণ করার লক্ষ্য নিয়েছে পর্যটন সংগঠনগুলো।

Read Hindi: बरसात में पर्यटन को बढ़ावा देनेडु आर्स में होगा ‘नदियाली मछली उत्सव’!

   

প্রতি বছর ১৫ জুন থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জঙ্গল সাফারি বন্ধ থাকায় এই সময়ে পর্যটকদের আগমন উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়। ফলে হোটেল, রিসর্ট এবং পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসাগুলো মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হয়। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় ‘নদীয়ালি মাছ উৎসব’-এর পরিকল্পনা নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইস্টার্ন ডুয়ার্স ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক বিশ্বজিৎ সাহা। তিনি বলেন, “বর্ষার তিন মাসে পর্যটন ব্যবসা একেবারে মন্দা থাকে। এই সময়ে ব্যবসা সচল রাখতে আমরা এই উৎসবের পরিকল্পনা করছি। এ বছর জলদাপাড়ার কিছু রিসর্টে পরীক্ষামূলকভাবে এই উৎসব শুরু করা হবে।”

ডুয়ার্সের সঙ্কোশ, রায়ডাক, হলং, মুজনাই এবং তোর্ষা নদীতে বর্ষাকালে প্রচুর পরিমাণে নদীয়ালি মাছ পাওয়া যায়। এই নদীগুলোতে পাওয়া মাছের মধ্যে রয়েছে বোরোলি, এলং, চেপটি, চিলা কুশমা, রাইচাং, ঘাকসি ইত্যাদি। এই মাছগুলো দিয়ে তৈরি হবে স্থানীয় খাবার, যা পর্যটকদের জন্য একটি অনন্য অভিজ্ঞতা হবে। স্থানীয় পর্যটন ব্যবসায়ী মিঠুন সরকার জানান, “নদীয়ালি মাছের বিভিন্ন পদ পরিবেশনের পাশাপাশি মাছের পরিচিতি, নদীপাড়ের প্রাকৃতিক দৃশ্য, এবং স্থানীয় জনজাতির সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান মিলিয়ে একটি নতুন প্যাকেজ তৈরি করা হচ্ছে। এতে পর্যটকরা একটি ভিন্ন ধরনের অভিজ্ঞতা পাবেন।”

Advertisements

আলিপুরদুয়ার ডিস্ট্রিক্ট ট্যুরিজম অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক মানব বক্সী বলেন, “বর্ষাকালে ডুয়ার্সের প্রকৃতি তার আসল রূপে ধরা দেয়। সাফারি বন্ধ থাকলেও বৃষ্টি, নদী, এবং সবুজে মোড়া পরিবেশ পর্যটকদের মুগ্ধ করতে পারে। এই উৎসবের মাধ্যমে আমরা বর্ষাকালকে পর্যটনের জন্য একটি আকর্ষণীয় সময় হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।”

এর আগেও বর্ষাকালে পর্যটন বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল, কিন্তু তেমন সাফল্য পাওয়া যায়নি। এবার ‘নদীয়ালি মাছ উৎসব’ নিয়ে পর্যটন ব্যবসায়ীদের মধ্যে নতুন উৎসাহ দেখা যাচ্ছে। এই উৎসব শুধু পর্যটকদের জন্য নতুন অভিজ্ঞতা নিয়ে আসবে না, স্থানীয় জনজাতি এবং মৎস্যজীবীদের জন্যও অর্থনৈতিক সুযোগ তৈরি করবে। তবে এই উদ্যোগ কতটা সফল হবে, তা সময়ই বলবে।