দীপাবলি শুধুমাত্র আলোয় আলোকিত এক উৎসব নয়; এটি আনন্দ, সমৃদ্ধি এবং ভালোবাসা ভাগ করে নেওয়ার এক উৎসব। এই শুভ সময়ে একে অপরকে উপহার দেওয়ার প্রচলন বহু পুরনো। এর মধ্যে সোনা বরাবরই বিশেষ স্থান অধিকার করে এসেছে- ধন, সৌভাগ্য এবং আশীর্বাদের প্রতীক হিসেবে। কেউ দেন সোনার গয়না, কেউ বা দেন কয়েন বা ছোট বার। কিন্তু এই বছর সোনার দাম আকাশছোঁয়া হওয়ায় অনেকের মনে প্রশ্ন জেগেছে- দীপাবলিতে সোনা উপহার দিলে বা পেলে কি আয়কর দিতে হয়?
আয়কর আইনে সোনার উপহারের নিয়ম:
আয়কর আইন, ১৯৬১ অনুযায়ী সোনা উপহার পাওয়ার ক্ষেত্রে কোনও নির্দিষ্ট সীমা নির্ধারিত নেই। তবে উপহারটি কে দিচ্ছেন এবং উপহারের মোট বাজারমূল্য কত — এই দুটি বিষয়ের উপর করযোগ্যতা নির্ভর করে।
আয়কর আইন ধারা ৫৬(২)(x) অনুযায়ী, কোনও ব্যক্তি যদি বিনা মূল্যে টাকা, সম্পত্তি, সোনা, গয়না, শেয়ার বা জমি উপহার হিসেবে পান, তা “অন্যান্য উৎস থেকে আয়” (Income from Other Sources) হিসেবে করযোগ্য হতে পারে। তবে কিছু বিশেষ ছাড়ের ব্যবস্থাও রয়েছে।
পরিবারের কাছ থেকে উপহার সম্পূর্ণ করমুক্ত: Diwali Gold Gift Income Tax India
পরিবারের সদস্যদের (যেমন বাবা-মা, ভাই-বোন, স্ত্রী বা স্বামী, সন্তান, নাতি-নাতনি, শ্বশুরবাড়ির সদস্য) কাছ থেকে সোনা উপহার পেলে তা সম্পূর্ণ করমুক্ত, পরিমাণ যাই হোক না কেন। অর্থাৎ পরিবারের মধ্যে সোনা দেওয়া-নেওয়ার ক্ষেত্রে কোনও কর দিতে হয় না।
বন্ধু বা অ-আত্মীয়ের কাছ থেকে উপহার পেলে কী হয়?
বন্ধু বা অ-আত্মীয়দের কাছ থেকে সোনা উপহার পেলে করের নিয়ম কিছুটা আলাদা। যদি কোনও আর্থিক বছরে এমন উপহারের মোট মূল্য ₹৫০,০০০-এর বেশি হয়, তাহলে সেই পুরো পরিমাণের উপর কর দিতে হয়। কিন্তু যদি উপহারগুলির সম্মিলিত মূল্য ₹৫০,০০০-এর মধ্যে থাকে, তাহলে কর প্রযোজ্য হয় না।
বিবাহ উপলক্ষে পাওয়া উপহার সম্পূর্ণ করমুক্ত:
আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো — বিবাহ উপলক্ষে পাওয়া উপহার সম্পূর্ণ করমুক্ত, তা যে-ই দিক না কেন। তবে এই ছাড় শুধুমাত্র বিয়ের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য; দীপাবলি, জন্মদিন বা অন্য কোনও অনুষ্ঠানে পাওয়া সোনার উপহারে এই ছাড় প্রযোজ্য নয়।
কর সচেতনতার সঙ্গে উদযাপন করুন দীপাবলি:
তাই দীপাবলিতে সোনার ঝলক দিয়ে প্রিয়জনকে খুশি করার আগে করের নিয়মগুলি জানা জরুরি। পরিবার থেকে প্রাপ্ত সোনার উপহার নিয়ে চিন্তার কিছু নেই, কিন্তু বন্ধু বা পরিচিতদের কাছ থেকে পাওয়া দামী উপহারের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকা ভালো। দীপাবলির আনন্দের সঙ্গে কর সচেতনতা থাকলে উৎসবের আলো আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠবে।