নয়াদিল্লি, ১৯ অক্টোবর: ধনতেরাস মানেই সোনা-রূপোর শুভ কেনাকাটা। আর এ বছর সেই ঐতিহ্য নতুন রেকর্ড গড়ল। অল ইন্ডিয়া জেম অ্যান্ড জুয়েলারি ডোমেস্টিক কাউন্সিল (GJC)-এর তথ্য অনুযায়ী, ধনতেরাস উপলক্ষে মাত্র দুই দিনেই সারা দেশে গয়না বিক্রির পরিমাণ পৌঁছেছে প্রায় ₹৮৫,০০০ কোটি টাকা। গত বছরের তুলনায় এটি প্রায় ৩৫ থেকে ৪০ শতাংশ বেশি।
সোনা-রূপোর দাপট
GJC জানিয়েছে, ধনতেরাসে দুই দিনে মোট ৫০ থেকে ৬০ টন গয়না বিক্রি হয়েছে। সোনার পাশাপাশি রূপোর প্রতিও ক্রেতাদের ঝোঁক ছিল বিশেষভাবে চোখে পড়ার মতো। সোনার ক্রমবর্ধমান দামের কারণে অনেকেই এবার রূপো কিনতে বেশি আগ্রহ দেখিয়েছেন, যার ফলে রূপোর বিক্রি প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে।
দীপাবলিতে ১ লাখ কোটি ছোঁয়ার আশা
ধনতেরাসের পরেই রয়েছে দীপাবলি ও ভাইফোঁটা। উৎসবের এই টানা সময়কালে গয়নার মোট বিক্রি ১০০ থেকে ১২০ টন ছাড়াতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। আর টাকার হিসেবে তা পৌঁছে যেতে পারে ₹১ লক্ষ কোটি থেকে ₹১.৩৫ লক্ষ কোটি পর্যন্ত।
ব্যবসায়ীদের মতে, এ বছর উৎসবের বাজারে ভিড় ও চাহিদার গতি দেখে মনে হচ্ছে দীপাবলির সময় এক নতুন মাইলফলক স্পর্শ করবে দেশের জুয়েলারি ব্যবসা।
অফলাইন বাজারে ঢল
কনফেডারেশন অব অল ইন্ডিয়া ট্রেডার্স (CAIT)-এর মতে, এ বছর দীপাবলি ঘিরে সার্বিক উৎসব বাণিজ্যের পরিমাণ ₹৫ লক্ষ কোটি টাকা ছাড়াতে পারে। বিশেষ করে অফলাইন বাজার, যেটি মহামারির পর খানিকটা মন্থর হয়ে পড়েছিল, এবার আবারও প্রাণ ফিরে পেয়েছে।
সোনার দোকান, রূপোর শোরুম কিংবা স্থানীয় বাজার—সব জায়গাতেই ক্রেতাদের উচ্ছ্বাস ছিল চোখে পড়ার মতো। ব্যবসায়ীরা বলছেন, মহামারির ধাক্কা কাটিয়ে এবার প্রথমবার এত বড় সংখ্যায় মানুষ গয়না কিনতে বেরিয়েছেন।
ধনতেরাস ভারতীয় সংস্কৃতিতে শুধু কেনাকাটার দিন নয়, বরং শুভ সূচনা ও সমৃদ্ধির প্রতীক। অর্থনৈতিক চাপ থাকলেও এ বছর সোনা ও রূপোর চাহিদা প্রমাণ করেছে—ভারতে গয়না শুধুই বিনিয়োগ নয়, এটি মানুষের আবেগ ও ঐতিহ্যের অঙ্গ। ব্যবসায়ী মহলের মতে, ২০২৫ সালের ধনতেরাস স্পষ্ট বার্তা দিল—ভারতের গয়নার বাজার এখনও অটুট শক্তিশালী, এবং আগামী দিনে তা আরও প্রসারিত হবে।