ভারতের অফিস স্পেসের চাহিদা বৃদ্ধি, কলিয়ার্সের নতুন তথ্য প্রকাশ

ভারতের অফিস স্পেস মার্কেটে ২০২৪ সালের দ্বিতীয়ার্ধে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে। কলিয়ার্সের সর্বশেষ রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রযুক্তি এবং ফ্লেক্স স্পেস কোম্পানিগুলি এই চাহিদার মূল চালিকা শক্তি।…

demand-for-office-space-in-india-increases-colliers-new-report

short-samachar

ভারতের অফিস স্পেস মার্কেটে ২০২৪ সালের দ্বিতীয়ার্ধে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে। কলিয়ার্সের সর্বশেষ রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রযুক্তি এবং ফ্লেক্স স্পেস কোম্পানিগুলি এই চাহিদার মূল চালিকা শক্তি। রিপোর্টটি জানিয়েছে, ২০২৪ সালের দ্বিতীয়ার্ধে বছরের তুলনায় (YoY) অফিস স্পেসের চাহিদা ১১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, এবং এই প্রবৃদ্ধি মূলত দক্ষিণ ভারতীয় শহর বেঙ্গালুরু এবং হায়দরাবাদ দ্বারা চালিত হয়েছে।

   

কলিয়ার্সের রিপোর্ট অনুযায়ী, বেঙ্গালুরু এবং হায়দরাবাদ ২০২৪ সালের দ্বিতীয়ার্ধে ভারতের অফিস স্পেসের বাজারে শীর্ষস্থান অর্জন করেছে। বিশেষভাবে, এই দুটি শহর ভারতের গ্রেড A অফিস স্পেসের প্রায় অর্ধেক চাহিদা ও সরবরাহ নিশ্চিত করেছে। এগুলি ভারতের অফিস স্পেসের বাজারে সবচেয়ে গতিশীল শহর হিসেবে পরিগণিত হচ্ছে, যেখানে সঠিক সময়ে নতুন সরবরাহ এবং ভাড়া আদায়ের পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

কলিয়ার্সের রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে যে, ২০২৪ সালের দ্বিতীয়ার্ধে সরবরাহও চাহিদার বৃদ্ধির সাথে সামঞ্জস্য রেখে বৃদ্ধি পেয়েছে, যা বছরের তুলনায় ৭ শতাংশ বৃদ্ধি দেখিয়েছে। এটি প্রমাণিত যে, ভারতের অফিস স্পেসের বাজার এখনও শক্তিশালী। বর্তমানে, ভারতে মোট ভ্যাকেন্সি (খালি স্পেস) প্রায় ১৭ শতাংশ, যা স্থিতিশীল রয়েছে এবং নতুন সরবরাহের বৃদ্ধির ফলে ভবিষ্যতে আরও মসৃণ ডিমান্ড-সাপ্লাই সম্পর্ক আশা করা হচ্ছে।

কলিয়ার্সের রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২৫ সালে ভারতের অফিস স্পেসের চাহিদা আরও শক্তিশালী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এটি বিশেষভাবে বৈশ্বিক সক্ষমতা কেন্দ্রগুলোর (Global Capability Centers, GCCs) মাধ্যমে বৃদ্ধি পাবে। এছাড়াও, ভারতে প্রযুক্তি কোম্পানি এবং ফ্লেক্স স্পেস অপারেটররা এখন অফিস স্পেসের চাহিদার বড় অংশ গ্রহণ করছে। ২০২৪ সালের দ্বিতীয়ার্ধে, ভারতের শীর্ষ ছয়টি শহরের মোট অফিস স্পেসের প্রায় ৪৬ শতাংশ চাহিদা তৈরি করেছে প্রযুক্তি এবং ফ্লেক্স স্পেস কোম্পানিগুলি।

ভারতে গ্লোবাল সক্ষমতা কেন্দ্র (GCCs)-গুলোর উত্থান একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। ২০২৪ সালের দ্বিতীয়ার্ধে, GCCs ভারতীয় অফিস স্পেসের ৪০ শতাংশ ভাড়া নিয়েছে। এই ভাড়া নেওয়া স্থানটি প্রায় ১.৪ মিলিয়ন বর্গমিটার (প্রায় ১৫ মিলিয়ন স্কয়ার ফুট)। এর ফলে, ভারতে অফিস স্পেসের চাহিদা বেড়েছে এবং বৈশ্বিক কোম্পানিগুলির জন্য ভারতের বাজার আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। ভাড়া তুলনা, প্রচুর প্রতিভা এবং ভাষার দক্ষতা—এই সবই GCCs এবং আউটসোর্সিং হাবগুলোর বৃদ্ধিতে সহায়ক হিসেবে কাজ করছে।

কলিয়ার্স ইন্ডিয়ার ম্যানেজিং ডিরেক্টর, অফিস সার্ভিসেস, অরপিত মেহরোত্রা বলেছেন, “ভারতে অফিস স্পেসের চাহিদা আরও শক্তিশালী হবে ২০২৫ সালে, যখন আমাদের দেশের অর্থনীতি স্থিতিশীল থাকবে এবং মুদ্রাস্ফীতির হার কিছুটা কমবে। এছাড়াও, ভারতে নতুন সরবরাহ গতিশীল থাকবে, যা এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে (APAC) সেরা চাহিদা-সরবরাহ সম্পর্ক তৈরি করবে।”

ভিমল নাদার, কলিয়ার্স ইন্ডিয়ার সিনিয়র ডিরেক্টর এবং রিসার্চ হেড, বলেন, “ভারত বর্তমানে APAC অঞ্চলের অন্যতম প্রধান অফিস বাজার হিসেবে রয়েছে। ২০২৪ সালের দ্বিতীয়ার্ধে, ভারতীয় অফিস স্পেসের ভাড়া কার্যক্রমের ৭০ শতাংশ এবং নতুন সরবরাহের ৬০ শতাংশ ভারতেই হয়েছে। প্রযুক্তি কোম্পানি ও গ্লোবাল সক্ষমতা কেন্দ্রগুলোর বাড়তি চাহিদা ভারতে অফিস স্পেসের বাজারকে আরও শক্তিশালী করছে।”

ভারতীয় অফিস স্পেসের বাজারে বর্তমানে একটি শক্তিশালী প্রবৃদ্ধি দেখা যাচ্ছে। প্রযুক্তি কোম্পানি ও ফ্লেক্স স্পেস অপারেটররা বড় অঙ্কে অফিস স্পেস ভাড়া নিচ্ছে, যা ভবিষ্যতে আরও বাড়বে। ভারতের ভাড়া কার্যক্রম এবং সরবরাহের মধ্যে শক্তিশালী সম্পর্ক বজায় থাকলে, ভারতের অফিস স্পেস বাজার দ্রুত এগিয়ে যাবে এবং গ্লোবাল সক্ষমতা কেন্দ্রগুলোর জন্য আরও আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে।

২০২৪ সালের দ্বিতীয়ার্ধে ভারতে অফিস স্পেসের চাহিদা বৃদ্ধির সাথে, দেশের অর্থনীতি এবং অফিস স্পেসের বাজার আরও শক্তিশালী হয়ে উঠছে। প্রযুক্তি কোম্পানি এবং গ্লোবাল সক্ষমতা কেন্দ্রগুলির সহযোগিতায়, ২০২৫ সালে ভারত আরও শক্তিশালী অফিস স্পেসের বাজার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে।