দিওয়ালি উদ্যাপনকে সামনে রেখে দিল্লিতে (Delhi) মদ বিক্রির পরিমাণে (Pre-Diwali Alcohol Revenue) রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, উৎসবের ঠিক আগেই রাজধানী দিল্লিতে ৩.৮৭ কোটি বোতল মদ বিক্রি হয়েছে। এর থেকে সরকার প্রায় ৪৪৭.৬২ কোটি টাকা আয় করেছে, যা উৎসব মরসুমে আয়ের নতুন দৃষ্টান্ত তৈরি করেছে।
সরকারি হিসাব অনুযায়ী, দিল্লির দোকানগুলিতে দিওয়ালির প্রাক্কালে ক্রেতাদের ভিড় ছিল লক্ষণীয়। সাধারণত দিওয়ালির সময় উৎসবের আমেজে পানীয় বিক্রির হার বেড়ে যায়, তবে এবারের পরিসংখ্যান সকল পূর্ববর্তী রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে।
বিক্রির পরিসংখ্যান
দিওয়ালির আগে শুধু এক সপ্তাহেই দিল্লির পানীয়ের দোকানগুলি ৩.৮৭ কোটি বোতল মদ বিক্রি করতে সক্ষম হয়েছে। এতে সরকারের আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৪৭.৬২ কোটি টাকায়, যা গত বছরের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। বিশেষজ্ঞদের মতে, উৎসবের আগে মদের চাহিদা বেড়ে যাওয়ার পিছনে দিল্লির নয়া আবগারি নীতি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
আবগারি নীতি ও বিক্রির প্রভাব
দিল্লির নতুন আবগারি নীতিতে মদ বিক্রির ক্ষেত্রে কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে, যা ক্রেতাদের মধ্যে গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি করেছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এ ছাড়া, পানীয় বিক্রির ক্ষেত্রে উৎসাহ বাড়াতে বিভিন্ন ধরনের ছাড় এবং অফার দেওয়া হয়েছে। এর ফলে ক্রেতাদের আগ্রহ বাড়ছে এবং উৎসবের আগে দোকানগুলিতে মদ বিক্রির পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।
বিক্রেতাদের প্রস্তুতি ও চ্যালেঞ্জ
দিওয়ালির সময় মদের চাহিদা যে বাড়তে পারে, সেই বিষয়টি মাথায় রেখে দিল্লির দোকানদাররা আগে থেকেই পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিত করতে কাজ করেছেন। তবে উচ্চ চাহিদার সঙ্গে সঙ্গে মদ বিক্রির ক্ষেত্রে কিছু চ্যালেঞ্জও ছিল। বিশেষ করে, উৎসবের সময় অতিরিক্ত ভিড় সামাল দিতে দোকানগুলিকে বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হয়েছে। এছাড়া, বিভিন্ন জায়গায় লাইসেন্সপ্রাপ্ত দোকানগুলিতে দীর্ঘ লাইনের কারণে পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীকেও তৎপর হতে হয়েছে।
সামাজিক প্রভাব ও সমালোচনা
দিওয়ালির সময় মদের রেকর্ড বিক্রি নিয়ে সামাজিক মহলে নানা আলোচনা-সমালোচনা চলছে। অনেকেই মনে করছেন যে উৎসবের সময় এই ধরনের মদ বিক্রি উৎসাহিত করা উচিত নয়। একদিকে, দিওয়ালির মতো ধর্মীয় উৎসবের প্রাক্কালে এই বিপুল পরিমাণ মদের বিক্রি সমাজে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলে কিছু মানুষ আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। অন্যদিকে, আয়ের দিক থেকে এই ঘটনা যে সরকারের অর্থনীতিতে বড় অবদান রাখছে, সেই দিকটিও তুলে ধরছেন কেউ কেউ।
রাজস্ব আয় বৃদ্ধিতে সরকারের লক্ষ্যমাত্রা
দিল্লি সরকার আবগারি আয়ের ওপর নির্ভর করে রাজস্ব বৃদ্ধির দিকে নজর দিয়েছে। উৎসবের সময় মদ বিক্রির পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ায় সরকারের আয় বাড়ছে, যা স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও উন্নয়নের মতো গুরুত্বপূর্ণ খাতে বরাদ্দ করতে পারবে। সরকারের দাবি, উৎসবের সময় আয়ের এই বৃদ্ধি ভবিষ্যতে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে সাহায্য করবে।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
মদ বিক্রির ক্ষেত্র থেকে সরকারের এই আয়ের অভিজ্ঞতা দিল্লি প্রশাসনকে আগামী দিনগুলিতে আরও পরিকল্পনা গ্রহণে অনুপ্রাণিত করছে। তবে এর পাশাপাশি সামাজিক দায়িত্ব এবং মদপানজনিত বিপদের বিষয়ে সচেতনতার দিকটিতেও জোর দিতে হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
সব মিলিয়ে, দিল্লিতে দিওয়ালির আগে মদ বিক্রির এই রেকর্ড সামাজিক ও আর্থিক উভয় ক্ষেত্রেই উল্লেখযোগ্য ঘটনা।