অফারের নেশায় একাধিক কার্ড? জেনে নিন এর ঝুঁকি ও ফলাফল

Credit Card Churning CIBIL Score

বর্তমান সময়ে বহু মানুষ ক্রেডিট কার্ডের আকর্ষণীয় অফার, ক্যাশব্যাক, ভাউচার এবং ডিসকাউন্টের সুযোগ নিতে একাধিক ব্যাংক বা ফিনটেক সংস্থার কার্ড ব্যবহার করছেন। কিন্তু এই কৌশলের পিছনে যে আর্থিক ঝুঁকি লুকিয়ে আছে, তা অনেকেই বুঝে উঠতে পারেন না। এই প্রক্রিয়াটিই পরিচিত ‘ক্রেডিট কার্ড চর্নিং’ নামে।

Advertisements

কী এই ক্রেডিট কার্ড চর্নিং?

ক্রেডিট কার্ড চর্নিং হল একাধিক ক্রেডিট কার্ড নেওয়া, অফার বা রিওয়ার্ড পয়েন্ট সংগ্রহ করা, এবং পরবর্তীতে কার্ডটি বন্ধ করে দেওয়া। সাধারণত ব্যাংকগুলি নতুন গ্রাহকদের আকর্ষণ করতে প্রথম বছরে “শূন্য বার্ষিক ফি”, “ক্যাশব্যাক অফার” বা “রিওয়ার্ড পয়েন্ট” এর মতো আকর্ষণীয় স্কিম দেয়। উদাহরণস্বরূপ, একটি ব্যাংক অফার দিতে পারে — “তিন মাসে ৫০,০০০ টাকা খরচ করলে ৫,০০০ টাকা ক্যাশব্যাক বা ৫০,০০০ রিওয়ার্ড পয়েন্ট”। অনেকেই এই লক্ষ্য পূরণ করে সুবিধা নেওয়ার পর কার্ডটি বন্ধ করে দেন এবং অন্য ব্যাংকের নতুন অফারের দিকে চলে যান।

   

কেন এটি সমস্যাজনক? Credit Card Churning CIBIL Score

যদিও ক্রেডিট কার্ড চর্নিং অবৈধ নয়, তবুও এটি ধারক এবং ব্যাংক উভয়ের জন্যই সমস্যা তৈরি করতে পারে।
ক্রেডিট স্কোরে প্রভাব: বারবার নতুন কার্ডের আবেদন এবং পুরনো কার্ড বন্ধ করা ক্রেডিট স্কোর বা সিবিল স্কোর কমিয়ে দিতে পারে। এতে ভবিষ্যতে লোন বা অন্যান্য ক্রেডিট সুবিধা নেওয়া কঠিন হয়ে যায়।
ব্যাংকের বিধিনিষেধ: অনেক ব্যাংক অতিরিক্ত চর্নিং করা গ্রাহকদের ‘রিস্ক প্রোফাইল’ হিসাবে চিহ্নিত করে ব্ল্যাকলিস্ট করতে পারে।
উচ্চ বার্ষিক ফি: অনেক কার্ডের প্রথম বছর ফ্রি থাকলেও পরের বছর উচ্চ নবীকরণ ফি দিতে হয়।
ঋণের ঝুঁকি: অফারের লোভে অতিরিক্ত খরচ করে ফেললে, কার্ডধারীকে উচ্চ সুদে টাকা পরিশোধ করতে হয়। ফলে রিওয়ার্ডের বদলে বাড়ে ঋণের বোঝা।

Advertisements

সতর্কতা ও পরামর্শ:

বিশেষজ্ঞদের মতে, ক্রেডিট কার্ডের অফার নেওয়া খারাপ নয়, তবে তা পরিকল্পনা মাফিক করা জরুরি। সবসময় সময়মতো বিল পরিশোধ করা, সীমার মধ্যে খরচ রাখা এবং অপ্রয়োজনীয় কার্ড বন্ধ রাখা উচিত নয়। ক্রেডিট কার্ড শুধু অফারের উৎস নয়, এটি ব্যক্তির আর্থিক বিশ্বাসযোগ্যতারও প্রতিফলন। অতএব, সাময়িক লাভের জন্য দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতির ঝুঁকি নেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ নয়।

শেষ কথা:

ক্রেডিট কার্ড চর্নিং স্বল্পমেয়াদে লাভজনক মনে হলেও, এটি ভবিষ্যতের আর্থিক স্থিতিশীলতায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। তাই সচেতনভাবে ব্যবহারই হতে পারে সঠিক আর্থিক কৌশল।